বোরোধানের প্রসিদ্ধ অঞ্চল সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার বৈশাখের ফসল বোরো ধান কাটা শেষ হয়েছে। চলতি বোরোধান চাষাবাদের মৌসুমে উপজেলার বৃহত্তর নলুয়া ও মই হাওর সহ বিভিন্ন ছোট বড় হাওরে ইতিমধ্যে ধান কাটা শেষ হয়েছে। হাওর ছাড়াও উঁচু খেতে চলতি সপ্তাহে ধান কাটা শেষ হবে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে এবারও সুনামগঞ্জে অতিবৃষ্টি ও বন্যার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। এতে কৃষকদের মধ্যে শঙ্কা সংশয় দেখা দেয় তবে এই শঙ্কা কাটিয়ে নির্বিঘ্নে কৃষকেরা বোরোধান ঘরে তুলেছেন।
জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ‘উপজেলায় চলতি মৌসুমে ২০ হাজার ৪শত ২৩ হেক্টর জমিতে বোরোধান চাষাবাদ করা হয়েছে। এরমধ্যে হাওর এলাকায় ১৪ হাজার ৪১০ হেক্টর এবং নন হাওরে ৬শত ১৩ হেক্টর জমিতে বোরোধান চাষাবাদ হয়’।ধান উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১২৮ হাজার ৬শত ৬৯ মেট্রিক টন ও চাল ৮৫ হাজার ৬৪৬ মেট্রিক টন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।
এবার ফসল ঘরে তুলতে পারায় কৃষাণ কৃষাণীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। শ্যামারগাঁও গ্রামের কৃষক শামীম মিয়া বলেন, ৩০ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করেছি, ফলন ভালো হয়েছে, সময়মতো কাটা শেষ হয়েছে এতে আর ফসল হারানোর শঙ্কা নেই।
গোতগাঁও গ্রামের কৃষক আবিদ আলী বলেন, ১০ বিঘা জমির ধান কাটা শেষ, হারভেস্টার মেশিনের সাহায্যে ধান কাটায় সমস্যা হয়নি।বালিশ্রী গ্রামের কৃষক আব্দুল মান্নান বলেন, ‘এবার তুলনামূলক ধানের ফলন ভালো হয়েছে, ধানের মূল্যও ভালো পাচ্ছি, ধান কাটায় সমস্যা হয়নি।
জালালপুর গ্রামের কৃষক জাহির আলী বলেন, ধান কাটা নিয়ে চিন্তিত ছিলাম, বৈশাখ মাসের এই সময়ে শিলাবৃষ্টি, অতিবৃষ্টি বন্যার আশঙ্কা থাকে, এবার পাকা ধান ঘরে তুলতে পেরেছি, ধানের উপযুক্ত মূল্য পেয়েছি।
জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কাওসার আহমেদ বলেন, ‘ চলতি বোরোধানের মৌসুমে হাওর এলাকায় ইতিমধ্যে ধান কাটা শেষ হয়েছে, নন হাওরে ৯৫ ভাগ ধান কর্তন শেষ হয়েছে, আশাবাদী চলতি সপ্তাহে সম্পূর্ণ ধান কর্তন শেষ হবে।
আমাদের এবারের বড় সৌভাগ্য হচ্ছে নির্বিঘ্নে কৃষকরা ধান কর্তন করতে পেরেছে‘।আবহাওয়া অনুকূলে ছিলো এবং ধান কাটার স্থানীয় ও দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা শ্রমিক ও হারভেস্টার মেশিন পর্যাপ্ত থাকায় সময়মতো ধান কর্তন করা সম্ভব হয়েছে। আমাদের যে লক্ষ্যমাত্রা ১২৮ হাজার ৬শত ৬৯ মেট্রিকটন আশাবাদী এই লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।ধানের মূল্য এবার ভালো।
এবার জগন্নাথপুর উপজেলায় সরকারিভাবে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্র হচ্ছে ১,৩২৬ মেট্রিকটন, কৃষকদের কাছ থেকে ১,৪৪০ টাকা দরে সরকরধান ক্রয় করছেন, একজন কৃষক ৩৮ মন করে ধান দিতে পারবেন, উপজেলায় ৯০৮ জন কৃষকের কাছ থেকে লটারির মাধ্যমে ধান ক্রয় কর হচ্ছে।