বগুড়া সারিয়াকান্দি প্রাণী সম্পদ ও ভেটোনারী হাসপাতালের কর্মকর্তা ও কর্মচারীর যোগসাজশে প্রকল্পে লুটপাট ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ প্রকল্পে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে পরিবারের সদস্য দিয়ে অর্থ সুযোগ সুবিধা বাগিয়ে নেওয়ার খোজ পাওয়া গিয়েছে।
অনুসন্ধানে জানাযায়, সারিয়াকান্দিতে এলডিপি প্রকল্পের চুক্তিভিওিক কর্মচারী প্রাণী সম্পদ মাঠ কর্মী মো.এনামুল হক তার স্ত্রী মোছা.শান্তনা আকতারকে উদ্যোক্তা বানিয়ে হাতিয়ে নেন মিল্ক কালেকশন সেন্টারটি।প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী মিল্ক কালেকশন সেন্টারটি নিজ জমিতে ঘড় তুলে স্হাপন করার কথা থাকলে সে তা করেনি।
সে একটি ভাড়া করা ঘড়ে সেন্টারটি স্হাপন করেছে। এসব কাজে তাকে সহযোগিতা করে প্রাণী সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডা.মো. তমাল মাহমুদ। প্রকল্পে সরকারের আর্থিক বরাদ্দ ছিলো প্রায় ২৪ লাখ টাকা।
স্হানীয়দের সাথে কথা বলে জানাযায়, এই এলডিডিপি প্রকল্পে চাকরি করার সুবাদে এনামুল সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা নিজের পরিবারের সদস্যদের নামে করে নেন। তার বাড়িতে প্রাণী সম্পদ অফিসের বিভিন্ন ধরনের বরাদ্দকৃত যন্ত্রপাতি দিয়ে ঠাসা। ঘাস কাটার মেশিন, পাম্প গো খাদ্য এসব সে হর হামেশাই বাড়িতে নিয়ে আসে। এসব নিরবেই চলে আসছিলো কেউ ঘুনাক্ষরেও টের পাইনি।
ডাঃ মোঃ তমাল মাহমুদ উপস্থিত হয়ে বলে অন্য জায়গায় একটি প্রদর্শনী আছে। এখান থেকে ২ হাজার লিটারের একটি চিলিং ট্যাংক, ৮ টি দুধের ক্যান প্রতিটি ৪০লিঃ, একটি এক হর্স মটর এবং একটি সাবমারছিবল পানির পাম্প নিয়ে যায়। বলে যায় প্রদর্শনী শেষ হলে ফেরত দেবে, কিন্তু পরে খোজ নিয়ে জানতে পারি সে এসব তার নিজের উপজেলা গাবতলীর
হাতিবান্ধা নিজ বাড়িতে নিয়ে গিয়েছে।
পরবর্তীতে, তার কাছে মালামাল গুলি মৌখিকভাবে ফেরত চাইতে গেলে তিনি বিভিন্ন অজুহাত প্রদর্শণ করে এখন পর্যন্ত মালামাল গুলি ফেরত দেয়নি।
এবিষয়ে আদর্শ মিল্ক কালেকশন ও ডেইরি সেন্টারের উদ্যোক্তা মোছা. শান্তনা আকতার বলেন, ডা.মো.তমাল মাহমুদ স্যার আমার এখানে এসে প্রদর্শনীর কথা হবে ২ হাজারের চিলিং ট্যাংক সহ আর কিছু জিনিস নিয়ে যায়। আমিও সরল মনে তাকে দিয়ে দেয়। কয়েক দিন পরে আমি চাইলে সে তা দেয়না এভাবে ২ মাস হলো সে বিভিন্ন ভাবে তালবাহানা করছে। এখন বলতিছে ৯ লাখ টাকা দিলে সে আমাকে ওগুলো ফেরত দেবে না হলে কিছুই ফেরত দিবেন না। আপনি বলেন এত গুলো টাকা খরচ করে প্রতিষ্ঠান টি কেবলি উদ্বোধন করলাম আর আমার জিনিস নিয়ে গিয়ে ডা.তমাল আমার কাছ থেকেই টাকা দাবি করছে। আমি টাকা দিতে অপারগ সারিয়াকান্দি উপজেলা প্রাণী সম্পদের জিনিস গাবতলী উপজেলায় নিয়ে গিয়ে কুক্ষিগত করে রেখেছে। এসব বিষয় আমি দরখাস্ত ও মৌখিক ভাবে সারিয়াকান্দি উপজেলার (ইউ এল ও) ডা. মীর কাউসার স্যারকে জানাইছি।
এবিষয়ে এই প্রকল্পের মাঠ কর্মী মো.এনামুল হক বলেন, আমার যেহেতু একটি প্রজেক্টে চাকরী হয়েছে। কিছু দিন পরে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে তখন কি করে খাবো ভেবে ডা.তমাল স্যারের পরামর্শে আমার স্ত্রীকে প্রকল্পটি নিয়ে দেয়।তাওতো এখন অর্ধেক আমার আছে আর বাকী গুলো ডা.মো.তমাল স্যার নিয়ে গেছে ২ মাসের মতো হলো সেসব নিয়ে অনেক কথা হছে কিন্তু আজ ফেরত পাইনি।
এবিষয়ে সারিয়াকান্দি উপজেলা প্রানি সম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা (এলইও) ডাঃ মোঃ তমাল মাহমুদ, আমি কি আপনার বাড়ি থেকে কিছু চাইলেই নিয়ে আসতে পারবো বলেন। আর ওখানে চিলিং মেশিন দেওয়ার পুরো দায়িত্ব ছিলো ততকালীন ইউ এলও মো. শাহ আলম স্যারের। আমি কিছুই নিয়ে আসিনি এগুলো কথা সব মিথ্যা ও বানোয়াট।
সারিয়াকান্দি প্রাণী সম্পদ অফিসার ডা. মীর কাউসার বলেন, আমি উদ্যোক্তা মোছা. শান্তনা আকতারকে শোকস করেছি সে শোকসের উওর দিয়েছে। আর চিলিং সেন্টারের বরাদ্দ আমার সময় হয়নি। কারন এগুলোর বরাদ্দ আগেই করা ছিলো। আমি তিন সদস্যর একটি তদন্ত কমিটি করেছি। ৩ দিনের মধ্যে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পেলে ব্যবস্হা গ্রহন করবো।
এল ডিডিপি প্রকল্পের মনিটরিং অফিসার মাহমুদুল মেহেদি বলেন,এসব বিষয় জানা ছিলো না। আপনি বললেন আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখবো। প্রকল্পে কে কি পেলো এগুলো সংশ্লিষ্ট ইউএলও ব্যাপার তারাই সব কিছু করেন।
বগুড়া জেলা প্রাণী সম্পদ অফিসার (ডি এল ও) ড. মো. আনিসুর রহমান বলেন, আপনি যে বিষয়টি বলতিছেন এটা আমি জানি আমরা ব্যবস্হা নিচ্ছি দ্রুত এটির সমাধান হয়ে যাবে।