তরুণের নাম মুশফিক, জুলাই আন্দোলনে বগুড়ায় তার বেশ ভূমিকাও রয়েছে। স্পষ্টভাষী মুশফিকসহ শতাধিক তরুণ সারিয়াকান্দি উপজেলায় বিভিন্ন সামাজিক অপরাধ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার।
কিন্তু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহরিয়ার রহমান তাদের কখনো গ্রেপ্তার, কখনো সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে ভ্রাম্যমান আদালতে সাজার ভয় দেখিয়ে কোণঠাসা করে রেখেছেন বলে অভিযোগ মুশফিকের।
জুলাই পরবর্তী সময়ে, শাহরিয়ার রহমান সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেওয়ার পরপরই, মুশফিকসহ শতাধিক তরুণ তার সঙ্গে দেখা করতে যান। ইউএনও তাদের পরিচয় জেনে তাদের ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দেন এবং দেশের পরিস্থিতির জন্য তাদের দায়ী করেন।
মুশফিকের অভিযোগ, ওই ঘটনার পরে তারা নানান সামাজিক অপরাধ নির্মূলের চেষ্টা করলেও ইউএনওর সহযোগিতা পাননি। উপরন্তু তার ছত্রছায়ায় অপরাধীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে গোটা উপজেলা। ইউএনওর সহায়তায় অসংখ্য অবৈধ বালুর পয়েন্ট চলছে, পৌরসভার ৭ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের কাজে হয়েছে ভাগবাটোয়ারা, পৌর টোলের নামে চলছে চাঁদাবাজি।
ইতোমধ্যে উপজেলা পরিষদের ভেতরের বেশ কয়েকটি মূল্যবান গাছ কেটে নিয়েছেন। অথচ কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেন না। যারা তার এসব অন্যায় কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করার চেষ্টা করেন. তাদের ভয়ভীতি দেখানো অথবা যে কোনোভাবে ম্যানেজ করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়দেরও অভিযোগ রয়েছে ইউএনওর বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে উপজেলার কর্ণিবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন জানান, কয়েক মাস আগে উপজেলায় মাসিক সমন্বয় সভায় ইউএনও তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এ পর্যায়ে সভা থেকে গ্রাম পুলিশ দিয়ে বের করে দেওয়ার চেষ্টাও করেন।
এছাড়া সামান্য একটি ঘটনা নিয়ে তিনি সদর ইউনিয়নের বিতান মেম্বরকে বস্তায় ভরে যমুনা নদীতে নিক্ষেপের হুমকি দেন। বিষয়টি নিয়েও দফায় দফায় আন্দোলনও হয়। আনসার সদস্যরা ৬ মাসের বকেয়া বেতন পরিষদের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে দাবি জানালে, আনসারদের সাথে চরম দুরব্যবহার করে এবং অফিসে ডেকে অপমান অপদস্ত করেন বলেও জানান তিনি।
কয়েক মাসের অনুসন্ধানে ইউএনওর বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত নির্বাহী কর্মকর্তা কথা বলতে রাজি হননি।
তবে বগুড়া জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা এ বিষয়ে বলেন, ‘ইউএনওর বিরুদ্ধে এরকম অভিযোগ পাচ্ছি। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।