খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবে পার্বত্য চট্টগ্রাম বাঙালি ছাত্র পরিষদের উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২৮ জুন) সকালে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
উন্নয়ন প্রকল্পে বাঙালিদের বঞ্চিত করে বিভিন্ন প্রকল্পসহ জাতি বৈচিত্র্য ইনিস্টিউটের নামকরনের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করে চার দফা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন নেতৃবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পাবর্ত্য চট্রগ্রাম ছাত্র পরিষদের সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল মজিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন, মেহেদি হাসান, তারিকুল ইসলাম রায়হান, সাইদুর রহমান প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করে বলেন, বর্তমান সরকারের সংস্কার প্রক্রিয়ার অন্তরালে কয়েকজন উপদেষ্টা ও মন্ত্রণালয় এমন সব সিদ্ধান্ত নিচ্ছে,
যা একদিকে পার্বত্য চট্টগ্রামের সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালি জনগোষ্ঠীকে আরও বেশি প্রান্তিক করে তুলছে। অন্যদিকে অঞ্চলটির অখণ্ডতা এবং সাংবিধানিক কাঠামোকেই প্রশ্নবিদ্ধ করছে।গত ২৩ জুন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান আইন- ২০১০’ সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়।
এছাড়া প্রস্তাবিত ২০২৫ সালের অধ্যাদেশের ৭(ঘ) ধারায় পূর্ববর্তী আইনের পরিবর্তন এনে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় ৬ জন সদস্যের সবাইকে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি থেকে মনোনয়ন দেওয়া হবে।
যেখানে পূর্বে ৬ জনের মধ্যে ৪ জন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির প্রতিনিধি হতে পারতেন। এই সিদ্ধান্ত সংবিধান পরিপন্থী ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
একদিকে যেমন এই আইনের মাধ্যমে 'ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি' শব্দটিকে চাপা দিয়ে 'নৃ-বৈচিত্র্য' বা 'জাতি বৈচিত্র্য' শব্দচয়ন চালু করা হচ্ছে— যা ভবিষ্যতে আদিবাসী স্বীকৃতির কৌশলগত ভিত্তি হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে,
অন্যদিকে বাঙালি জনগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক অংশগ্রহণকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বঞ্চিত করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে।দাবিগুলো হচ্ছে- ১. ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান আইন ২০১০ সংশোধন করে ‘জাতি বৈচিত্র্য ইনস্টিটিউট অধ্যাদেশ ২০২৫’ প্রণয়নের সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
২. ৬ জন সদস্যের সবাইকে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি থেকে মনোনয়নের সিদ্ধান্ত সংবিধান পরিপন্থী হওয়ায় তা বাতিল করতে হবে।
৩. উপদেষ্টা মোস্তফা সারোয়ার ফারুকী ও সুপ্রদীপ চাকমার বিতর্কিত ভূমিকার জন্য তদন্তসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৪. পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দে সাম্প্রদায়িক বৈষম্যের নিরপেক্ষ তদন্ত করে পুনর্বিন্যাস নিশ্চিত করতে হবে। এসকল দাবি অনতিবিলম্বে বাস্তবায়ন না হলে রাজপথে মোকাবেলা করার হুশিয়ারী উচ্চারণ করেন নেতারা।