চট্টগ্রাম নগরে ডিজিএফআই পরিচয়ে যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালকের ফ্ল্যাটে ডাকাতিকালে ১২ জনকে আটক করেছে পুলিশ। শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) রাত সোয়া ১০টার দিকে খুলশী ৩ নম্বর সড়কের সানমার রয়েল রিচ নামে একটি ভবনে ডাকাত দলটি প্রবেশ করে। পরে দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাদের আটক করা হয়।
আটকরা হলেন- ওয়াজেদ (৩৬), মো. হোসাইন (৪২), মো. রুবেল হোসেন (২৫), মহিউদ্দিন (৪৫), আব্দুস সবুর (৩৭), ইয়াকুব (৩৫), মোজাহের আলম (৫৫), মো. রোমেল (৪১), ওসমান (২৪), আব্দুল মান্নান (৩৫) শওকত আকবর ইমন (২৮) এবং হারুন অর রশিদ (৩৬)।
পুলিশ জানায়, একটি মাইক্রোবাস নিয়ে ডাকাত দল খুলশী ৩ নম্বর সড়কের সানমার রয়েল রিচ ভবনের সামনে এসে নিরাপত্তারক্ষীদের কাছে নিজেদেরকে গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই এর সদস্য পরিচয় দেয়। এরপর তারা নিরাপত্তারক্ষীদের আটকে রেখে ৮ম তলায় যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক গিয়াস উদ্দিন আনসারীর ফ্ল্যাটে ঢুকে পড়ে। বাসার দরজা ভেঙে ভেতরে গিয়ে লুটপাট শুরু করে। ওই সময় গিয়াস উদ্দিন বাসায় ছিলেন না। এ অবস্থায় ডাকাত সন্দেহে ওই ভবনের অন্য বাসিন্দারা পুলিশকে খবর দিলে খুলশী থানা পুলিশ এসে ১২ জনকে আটক করে। এসময় ৩ জন পালিয়ে যায়। তাদের কাছ থেকে একটি চাইনিজ কুড়াল, খেলনা পিস্তল ও ভুয়া পরিচয়পত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
ওই ভবনের এক বাসিন্দা গণমাধ্যমকে বলেন, গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য পরিচয় দিয়ে ১৩ জন এসেছিল। শুরুতেই সেটা সিকিউরিটি টিমের কাছ থেকে আমরা কেউ কেউ জানতে পারি। তখন আমরা অ্যালার্ট হয়ে যাই। একপর্যায়ে আমরা যখন বুঝতে পারি যে ডাকাতি হচ্ছে, তখন আমরা যার যার ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে আসি। আমরা তাদের ঘেরাও করে ফেলি। একজন পালাতে সক্ষম হলেও ১২ জনকে আমরা ধরে ফেলি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুজিবুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করি। তারা কিছু লুট করতে পারেনি। এ সময় তাদের কাছ থেকে গোয়েন্দা সংস্থার ভুয়া পরিচয়পত্র, খেলনার অস্ত্র ও শাবল জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (অপরাধ) রইছ উদ্দিন বলেন, তারা দুটি মাইক্রোবাসে করে খুলশী ৩ নম্বর সড়কের একটি ভবনে যায়। সেখানে গিয়ে নিজেদের গোয়েন্দা সংস্থার লোক পরিচয় দিয়ে ভবনে প্রবেশ করে নিরাপত্তারক্ষীদের হাত-পা বেঁধে ফেলে। এরপর অষ্টম তলায় গিয়াস উদ্দিন আনসারী নামে এক ব্যক্তির বাসায় ডাকাতি করতে যায়। পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ১২ জনকে আটক করে এবং ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জামাদি উদ্ধার করে।
রইছ উদ্দিন বলেন, ঘটনার সময় ওই ফ্ল্যাটের লোকজন ছিলেন না। তারা সবাই বেড়াতে গিয়েছিলেন। আটকদের মধ্যে বিদেশ ফেরত, সাবেক ব্যাংকার, বালু সরবরাহকারী এবং দোকানের কর্মচারীও আছেন। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।