গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দিন বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতার ভাঙচুর আর লুটপাটে ‘ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া’ রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্বাধীনতা জাদুঘর পরিদর্শন করেছেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
সংস্কার কাজ শেষে নতুনভাবে জাদুঘরটির উদ্বোধনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা ও অংশগ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন তিনি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস-২০২৫' উপলক্ষে রোববার একটি বিশেষ সভার আয়োজন করা হয় জাতীয় জাদুঘরে। সেখানে কথা বলেছিলেন ফারুকী।
জাতীয় জাদুঘরের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মেরিনা তাবাসসুমও সভায় উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে স্বাধীনতা জাদুঘরের সংস্কার কাজের অগ্রগতি দেখতে ফারুকী জাদুঘর পরিদর্শন করেন।
সংস্কার কাজের অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে জানতে চাইলে মেরিনা তাবাসসুম বলেন, “মেইনলি আমরা দেখলাম, কি অবস্থায় আছে। ওখানে তো ভাঙচুর হয়েছে। ওটা এখন পরিস্কার করতে বলা হয়েছে জাতীয় জাদুঘর কর্তৃপক্ষকে। পরিষ্কার করে তারপর একটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমাদেরকে; কিভাবে আমরা এটাকে নতুন করে শুরু করব।
তিনি বলেন, ‘ওটা ঠিকঠাক করাই এখন প্রধান কাজ। হয়ে গেলে পরে ওটার ফোয়ারাটা নষ্ট, ওটা ঠিক করতে হবে, লিফট নষ্ট হয়ে গেছে, গ্লাসের রেলিং নষ্ট হয়ে গেছে ওটা ঠিক করতে হবে।’
কবে নাগাদ এসব কাজ শুরু হতে পারে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ডিজি আছেন ন্যাশনাল মিউজিয়ামের। উনাকে বলা হয়েছে। উনাদের অধীনে যারা আছেন, তাদের নির্দেশনা দেবেন। সুবিধামতো তারা করবেন।’
সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় আশা করে, স্বাধীনতা জাদুঘরের সংস্কার ও নতুনভাবে উদ্বোধনের মাধ্যমে দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও মহান মুক্তিযুদ্ধকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা সম্ভব হবে।
দেশের স্বাধীকার-স্বাধীনতা আন্দোলন, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের নির্দশনের এই স্বাধীনতা জাদুঘরে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা গত বছরের ৫ আগস্ট ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়।
জাতীয় জাদুঘরের ইতিহাস ও ধ্রুপদী শিল্পকলা বিভাগের সহকারী কিপার ও স্বাধীনতা জাদুঘরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. গোলাম কাউছার বলেন, ‘৫ তারিখ এ ঘটনার বিষয়ে আমি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ আছে, মামলা আছে। শুধু অফিস চালু রাখার জন্য এখন খোলা-বন্ধ রাখা হয়। না হয় এতদিনে সাপ-বিচ্ছু বাসা বাঁধত।’
জাদুঘরের ভেতরে ঢুকলে দেখা যায় মেঝেতে ছড়িয়ে আছে ছবির ফ্রেমের ভাঙা কাচের টুকরো। কোথাও আবার আগুনে পুড়ে খসে পড়া পলেস্তরা; সেই সঙ্গে তীব্র পোড়া গন্ধ। সর্বত্র ছড়িয়ে আছে ময়লা-আবর্জনা। পুরো ভবন জুড়ে ভৌতিক অন্ধকার।
ভবনের ভেতরে ভাঙচুর করা নিদর্শন পড়ে আছে; কোথাও আবার পুড়িয়ে দেওয়া আলোকচিত্রের অবশিষ্টাংশ পড়ে রয়েছে মেঝেতে। জাদুঘরের অবস্থান ভূগর্ভে, ফলে বাইরে থেকে বোঝার উপায় নেই ভেতরের চিত্র।