বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধনের ফল নিয়ে অসন্তোষ ও বৈষম্যের অভিযোগ তুলে রাজধানীর বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছেন ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় চূড়ান্ত ফলে অকৃতকার্য চাকরি প্রত্যাশীরা।
তারা ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের চূড়ান্ত ফল বাতিল করে পুনরায় যাচাই-বাছাই এবং মৌখিক পরীক্ষায় অকৃতকার্যদের সনদ প্রদানের দাবি জানান। পরে তাদের সরিয়ে দিতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে।
আজ রোববার (২৯ জুন) দুপুরে আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দেয় পুলিশ।
গত ৪ জুন বিকেলে ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এতে ৬০ হাজার ৫২১ জন প্রার্থীকে উত্তীর্ণ ঘোষণা করা হয়। পরে ২৩ জুন সংশোধিত ফলাফলে আরও ১১৩ জনকে উত্তীর্ণ দেখানো হয়।
এনটিআরসিএ জানিয়েছে, ২০২৫ সালের ২৩ মার্চ অনুষ্ঠিত পরীক্ষার ফল কারিগরি ত্রুটির কারণে প্রথমে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। ফল পুনঃপরীক্ষা ও যাচাইয়ের পর সংশোধিত ফল প্রকাশ করা হয়।
এরপরই ফলাফলে অসঙ্গতি ও বৈষম্যের অভিযোগে আন্দোলন শুরু করেন অকৃতকার্য হওয়া বহু প্রার্থী। তারা দাবি করেন, ভাইভা পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ভালো ফল করার পরও অনেকে অনুত্তীর্ণ হয়েছেন।
বিশেষ করে বোর্ডভিত্তিক ফলাফলে ব্যাপক তারতম্যের অভিযোগ ওঠে। একাধিক বোর্ডে ৩০ জনের মধ্যে মাত্র ১ থেকে ৩ জন পাস করেছেন, অন্যদিকে কিছু বোর্ডে ২৯ জনও পাস করেছেন- যা নিয়ে চাকরি প্রত্যাশীরা ফলের স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
ভুক্তভোগী প্রার্থীরা বলেন, পরীক্ষকরা বৈষম্যমূলক আচরণ করেছেন। বরিশাল থেকে আসা ফাতিমা বেগম বলেন, ‘ভাইভায় সঠিক উত্তর দেওয়ার পরও আমাকে ফেল দেখানো হয়েছে। এটা ন্যায়সঙ্গত নয়।’
একই অভিযোগ করেন চাঁদপুরের প্রিয়াঙ্কা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাহমুদা বেগম। তারা বলেন, ফলাফল পুনর্বিবেচনার মাধ্যমে প্রকৃত মেধাবীদের স্বীকৃতি দিতে হবে।
ফলাফল প্রকাশের পর আন্দোলনরত প্রার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা কার্যালয়ে বৈঠকে অংশ নেন। সেখানে এনটিআরসিএর প্রধান উপদেষ্টার সহকারী সচিব তাদের দাবি শোনেন এবং বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয়ের আশ্বাস দেন।
তবে আন্দোলনকারীরা আশ্বস্ত নন এবং ফলাফল পুনর্বিবেচনা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনে প্রায় ১৯ লাখ প্রার্থী আবেদন করেন। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ৮৩ হাজার ৮৬৫ জন। মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন ৮১ হাজার ২০৯ জন। চূড়ান্তভাবে ৬০ হাজার ৬৩৪ জনকে উত্তীর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে।
বর্তমানে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শূন্যপদের তথ্য যাচাই-বাছাই চলছে। এগুলো পূরণে সফল প্রার্থীদের নিয়োগ সুপারিশ করা হবে।