শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা ২০২২

উদ্বোধন হলেও প্রস্তুতি অসম্পূর্ণ

যাযাদি রিপোর্ট
  ০৩ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০
আপডেট  : ০৩ জানুয়ারি ২০২২, ০৯:২৪

পূর্বাচলে স্থায়ী ঠিকানায় প্রথমবারের মতো শুরু হয়েছে মাসব্যাপী ২৬তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা-২০২২। মেলা উদ্বোধন হলেও এখনো চলছে স্টল-প্যাভিলিয়নের অবকাঠামো নির্মাণ ও সাজসজ্জার কাজ। এছাড়া গোডাউন না থাকায় পণ্যের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন স্টল ও প্যাভিলিয়ন মালিকরা। এর আগে শনিবার সকালে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, মেলার মূল আকর্ষণ প্রধান ফটক ও ভেতরে প্রবেশদ্বারে ৫টি মেগা প্রকল্পের কাঠামো, বঙ্গবন্ধু কর্নার ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি তৈরির কাজ শেষ হলেও এখনো সাজসজ্জার কাজ চলছে। এছাড়া মেলার ভেতরের রাস্তার নির্মাণ, সেন্টারের ভেতরে কিছু স্টলের নির্মাণ ও সাজসজ্জার কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হলেও বেশিরভাগ স্টলের নির্মাণ কাজ এখনো শেষ হয়নি। কোনো স্টলে রঙ দেওয়া হচ্ছে, কোনোটিতে বোর্ড লাগানো হচ্ছে, আবার কোনো স্টল শুধু কাঠামোটাই দাঁড় করিয়েছে। এসব স্টলের কাজ পুরোপুরিভাবে শেষ হতে আরও তিন-চার দিন সময় লেগে যাবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। মেলায় অংশ নেওয়া ফেয়ার গ্রম্নপের আউটার ম্যানেজার সাজ্জাদুল ইসলাম বলেন, শনিবার তাদের স্টলের নির্মাণ কাজ শেষ করেছেন। এখনো পণ্য সাজানো হয়নি। রাস্তা ভালো না, তাই পণ্য আনতে দেরি হচ্ছে। এখনো অনেক স্টল নির্মাণ হয়নি। দেখে মনে হচ্ছে আরও দুই-তিন দিন লেগে যাবে। ঢাকা থেকে মেলায় কাজ করতে আসা কাঠমিস্ত্রি নূর আলম বলেন, সকাল ৮টা থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত টানা কাজ করছি। তারপরও শেষ করতে পারছি না। আমরা ১২ জন ২৬ ডিসেম্বর থেকে টানা কাজ করে ৩টি স্টল নির্মাণ করেছি। যেগুলো নির্মাণ করেছি সেগুলোর এখনো রঙ করা শেষ হয়নি। রঙ করা হলেও পণ্য সাজায়নি। যেটা তৈরি করছি সেটা আরও দুই দিন লাগবে, তারপর রঙ, সাজসজ্জা সব মিলিয়ে ৪ থেকে ৫ দিনের আগে এ স্টল চালু করতে পারবে না। এক্সিবিশন সেন্টারের অন্যান্য স্টলে ও প্যাভিলিয়নে কাজ করাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্টলগুলো বরাদ্দ দিতে দেরি করেছে। তারপর ডিজাইন সিলেক্ট করতে সময় লেগেছে। এরপর শহর থেকে এত দূরে হওয়ায় কাজের লোকেরও সংকট আছে। এছাড়া যাতায়াত, পরিবহণ ও খাদ্যের সমস্যা রয়েছে। কাজ করতে গিয়ে কোনো পণ্যের সমস্যা হলে কাজ থামিয়ে দিতে হচ্ছে। পণ্য আসলে তারপর কাজ করতে হচ্ছে। এভাবে দুই দিনের কাজ করতে তিন দিন লেগে যাচ্ছে। এক্সিবিশন সেন্টারের সামনের ফাঁকা জায়গায় মেগা প্রকল্পের অবকাঠামো নির্মাণের কাজ করছেন সোহেল মিয়া ও জব্বার। ইট-সিমেন্ট জোড়া না লাগলে তার ওপর নতুন করে কাজ করা যায় না। জোড়া লাগতে কিছুটা সময় নেয়। তাই আমরা অনেক চেষ্টা করলেও চার দিনের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারব না। ইপিবি সচিব ও বাণিজ্য মেলার পরিচালক মো. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী বলেন, আমরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার চেষ্টা করছি। প্রতিবারই মেলা উদ্বোধনের পরও কিছু কাজ বাকি থাকে। তবে এবার একটু বেশি রয়েছে। কারণ আমরা প্রথমে যেভাবে স্টল নির্মাণ করে দিয়েছিলাম সেটা ভেঙে ফেলে স্টল মালিকরা নতুন করে আবার নির্মাণ করছে। এজন্য একটু সময় বেশি লাগছে। নতুন জায়গা, চ্যালেঞ্জ তো একটু থাকবেই। তারপরও আমরা আশা করছি দর্শনার্থীরা উপভোগ করতে পারবেন। জানা গেছে, এবারের বাণিজ্য মেলায় ১১টি দেশের ২২৭টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। মেলায় বিভিন্ন ক্যাটাগরির ২৩টি প্যাভিলিয়ন, ২৭টি মিনি প্যাভিলিয়ন, ১৬২টি স্টল এবং ১৫টি খাবারের দোকান বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বরাবরের মতো এবারও মেলায় বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে মুজিববর্ষ, মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ শীততাপ নিয়ন্ত্রিত এক্সিবিশন সেন্টারের ১ লাখ ৫৫ হাজার বর্গফুট আয়তনের ২টি হলে সব স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কোভিড-১৯ বিবেচনায় নিয়ে মেলা চলাকালীন স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করা হবে। উলেস্নখ্য, গতবারের মতো এবারও মেলায় প্রবেশ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ৪০ টাকা, অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ২০ টাকা। এছাড়া বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিবন্ধীদের জন্য ফ্রি। এক্সিবিশন সেন্টারের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ২২০টি সিসি বসানো হয়েছে এবং সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। মেলা ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে। আর ছুটির দিন খোলা থাকবে রাত ১০টা পর্যন্ত।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে