অর্থনীতি

বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বৃহস্পতিবার কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। এর আগে বুধবার একদিনে দাম বেড়ে দুই মাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছিল। তবে এখন বিনিয়োগকারীরা মধ্যপ্রাচ্যের ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা এবং যুক্তরাষ্ট্র-ইরান পারমাণবিক আলোচনা ঘিরে সম্ভাব্য কূটনৈতিক পরিবর্তনের দিকেই নজর দিচ্ছেন।

বর্তমান বাজার চিত্র: ব্রেন্ট ক্রুড: ব্যারেলপ্রতি $১.৩১ কমে $৬৮.৪৬ এবং WTI (West Texas Intermediate): ব্যারেলপ্রতি $১.৩২ কমে $৬৬.৮৩ এসে ঠেকেছে।

বুধবার দুই ধরনের তেলের দামই ৪% এর বেশি বেড়ে এপ্রিলের পর সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছেছিল।

ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপট: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, "মধ্যপ্রাচ্য একটি বিপজ্জনক জায়গা হয়ে উঠতে পারে", এবং ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে দেওয়া হবে না।

অন্যদিকে, ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আজিজ নাসিরজাদেহ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, আলোচনায় ব্যর্থতা ঘটলে এবং যুক্তরাষ্ট্র আগ্রাসন চালালে ইরান মার্কিন ঘাঁটিগুলিতে আঘাত হানবে।

আগামী রবিবার ওমানে দুই দেশের শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এতে অংশ নেবেন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি।

বিশ্ববাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, তেলের দামে সাময়িক পতন এলেও, উত্তেজনা না কমলে আবারও মূল্যবৃদ্ধি দেখা যেতে পারে। UBS-এর বিশ্লেষক জিওভান্নি স্টাওনোভো বলেন, "যতক্ষণ সরবরাহ বাধাগ্রস্ত না হয়, ততক্ষণ এই ধরনের মূল্যবৃদ্ধি দীর্ঘস্থায়ী হবে না।"

হরমুজ প্রণালী – একটি সংকীর্ণ সমুদ্রপথ, যার মাধ্যমে বিশ্বের প্রায় ২০% অপরিশোধিত তেল পরিবাহিত হয়, তা বন্ধ হয়ে গেলে বড় ধরনের বৈশ্বিক জ্বালানি সংকট দেখা দিতে পারে। JPMorgan জানিয়েছে, হরমুজ প্রণালী বন্ধ হলে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি $১২০-$১৩০ পর্যন্ত উঠতে পারে।

অঞ্চলজুড়ে নিরাপত্তা সতর্কতা : যুক্তরাষ্ট্র তাদের ইরাকি দূতাবাস আংশিকভাবে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। একই সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন ঘাঁটিতে কর্মরত সামরিক বাহিনীর পরিবারের সদস্যদের চলে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে। তবে ইরাকের জ্বালানি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সেখানে বিদেশি কোম্পানিগুলোর কাজ স্বাভাবিক রয়েছে।

ব্রিটেনের সামুদ্রিক নিরাপত্তা সংস্থা জানিয়েছে, গালফ, ওমান সাগর ও হরমুজ প্রণালী দিয়ে জাহাজ চলাচলে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হলে সামুদ্রিক ট্র্যাফিকে বিঘ্ন ঘটতে পারে।