সুদহার কমানোর সিদ্ধান্তটি বাজারে বহুল প্রত্যাশিত ছিল। কারণ সম্প্রতি ব্যবসায়িক জরিপে প্রায় ৮১ শতাংশই বলেছিলেন সুদহার ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমতে পারে। অন্যদিকে ১৯ শতাংশ বলেছিল, ৫০ বেসিস পয়েন্ট কমতে পারে।
বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ এখনো মূল্যস্ফীতির সঙ্গে লড়াই করছে, এর বিপরীতে সুইজারল্যান্ড মূল্যসংকোচনে ভুগছে। দেশটিতে গত মাসে ভোক্তা মূল্যহার আগের বছরের তুলনায় দশমিক ১ শতাংশ কমেছে।
অবশ্য সুইজারল্যান্ডে মূল্যস্ফীতির ধীরতা অস্বাভাবিক কিছু নয়। ২০১০ ও ২০২০-এর দশকে দেশটি অনেকবার মূল্যসংকোচন পার করেছে। এর একটি বড় কারণ হলো সুইস মুদ্রা ফ্রাঁর শক্তিশালী অবস্থান।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইএনজির ফ্রান্স ও সুইজারল্যান্ডবিষয়ক জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ শার্লট দ্য মঁপেলিয়ে বলেন, ‘একটি নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে পরিচিত হওয়ায় বৈশ্বিক বাজারে চাপ পড়লে সুইস ফ্রাঁর মান সাধারণত বাড়ে। ফলে আমদানীকৃত পণ্যের দাম কমে যায়। সুইজারল্যান্ড একটি ছোট এবং উন্মুক্ত অর্থনীতি, যেখানে ভোক্তা মূল্যসূচক (সিপিআই) মূল্যস্ফীতির বড় অংশই আমদানির ওপর নির্ভরশীল।’
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা বাড়ার প্রেক্ষাপটে সাম্প্রতিক মাসগুলোয় ফ্রাঁর মান ক্রমাগত বেড়েছে এবং এ প্রবণতা অব্যাহত থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে, যা এসএনবির জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।
শার্লট দ্য মঁপেলিয়ে জানান, সুইজারল্যান্ডের মূল্যস্ফীতির মূল কারণ অতিরিক্ত শক্তিশালী ফ্রাঁ। তাই অন্যান্য দেশের তুলনায় ধারাবাহিকভাবে সুদহার কম রেখে মুদ্রার এ ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে পদক্ষেপ নিচ্ছে এসএনবি।
সুদহার কমানোর এ সিদ্ধান্তের আগে ক্যাপিটাল ইকোনমিকসের ইউরোপবিষয়ক অর্থনীতিবিদ আদ্রিয়ান প্রেটেজন জানান, দেশটিতে এ বছরই সুদহার ঋণাত্মক দশমিক ২৫ শতাংশে নামতে পারে। যদি মূল্যস্ফীতির চাপ না বাড়ে, তাহলে এসএনবি ভবিষ্যতে আরো নিচে যেতে পারে। সর্বনিম্ন হার হতে পারে ঋণাত্মক দশমিক ৭৫ শতাংশ, যা ২০১০-এর দশকে দেখা গিয়েছিল।
সুদহার কমালে মুদ্রার বিনিময় হার কমে, ঋণ নেয়া সহজ হয় এবং বিনিয়োগে উৎসাহ আসে। তবে নেতিবাচক সুদহারে কিছু ঝুঁকি ও উদ্বেগ রয়েছে। যেমন সঞ্চয়কারীরা মুনাফা হারাতে পারেন এবং ব্যাংকের জন্যও এটি ক্ষতিকর, কারণ তাদের বিতরণ করা ঋণ থেকে আয় কমে যাবে।