বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২

খাদ্যপণ্যের দাম  নিয়ন্ত্রণে কমেছে মূল্যস্ফীতি

ইকোনমিক আপডেট অ্যান্ড আউটলুক
যাযাদি রিপোর্ট
  ২৪ জুন ২০২৫, ১৭:৫৬
খাদ্যপণ্যের দাম  নিয়ন্ত্রণে কমেছে মূল্যস্ফীতি
ছবি : সংগৃহীত

গত ছয় মাসে মূল্যস্ফীতি ধারাবাহিকভাবে কমেছে। ২০২৫ সালের মে মাসে পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে সাধারণ মূল্যস্ফীতি কমে ৯ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশে নেমে এসেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের ইকোনমিক আপডেট অ্যান্ড আউটলুক (জুন-২০২৫) প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রধানত খাদ্যদ্রব্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণের কারণে মূল্যস্ফীতি ধীরে ধীরে কমছে। তবে এর মধ্যেও মে মাসে মূল্যস্ফীতি সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে চাল ও মাছের দামে। উল্লেখযোগ্য পরিমাণ রেমিট্যান্স বৃদ্ধি এবং বিনিময় হার স্থিতিশীল থাকার কারণে বাহ্যিক খাত শক্তিশালী হয়েছে। যদিও এপ্রিল মাসে রপ্তানি প্রবৃদ্ধিতে কিছুটা কমতি দেখা যায়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার যে বাজেট, তা মূলত প্রণয়ন করা হয়েছে দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার স্থিতিশীলতা আনার প্রতি লক্ষ্য রেখে। জিডিপির ১২ দশমিক ৭ শতাংশের সমান এই বাজেট বিদায়ী অর্থবছরের মূল বাজেটের তুলনায় ০ দশমিক ৮৮ শতাংশ কম হলেও এতে সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৬ দশমিক ১৮ শতাংশ বেশি অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

১৮ মে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের বৈঠক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, এটি হবে আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠার বাজেট। আমাদের লক্ষ্য হলো ঋণের ফাঁদে না পড়া। বাজেটের একটি বড় অংশই চালান খরচ বা সুদের পরিশোধের মতো ঋণ পরিশোধে ব্যয় হয়ে যায়। এই দুষ্টচক্র ভাঙতে রাজস্ব সংগ্রহ বাড়াতে হবে, তবে ব্যয়ও সীমিত রাখতে হবে। আমরা বাজেট ঘাটতি মোট জিডিপির ৪ শতাংশের নিচে রাখতে চাই।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২৩ সালের মাঝামাঝি থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত দুই অঙ্কের ঘরে থাকার কারণে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি ছিল উদ্বেগের বিষয়।

প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, ফেব্রুয়ারি থেকে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি ধীরে ধীরে কমতে থাকায় সামগ্রিক মূল্যস্ফীতিও হ্রাস পেতে শুরু করেছে। যদিও সামগ্রিক মূল্যস্ফীতিতে খাদ্যপণ্যের প্রভাব বেড়ে হয়েছে ৪২ দশমিক ৬ শতাংশ, যা পূর্ববর্তী মাসে ছিল ৪২ দশমিক ২ শতাংশ। খাদ্যপণ্য ছাড়াও ১২টি প্রধান খাতের মধ্যে আবাসন (১২ দশমিক ৫ শতাংশ), তৈরি পোশাক ও পাদুকাশিল্প (১০ দশমিক ৪ শতাংশ) এবং পরিবহন (৬ দশমিক৯ শতাংশ)- এই কয়েকটি খাত সামগ্রিক মূল্যস্ফীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে।

খাদ্যপণ্যের মধ্যে মূল্যস্ফীতিতে সবচেয়ে বেশি অবদান ছিল চালের (৪০ শতাংশ)। এর পরের অবস্থানেই রয়েছে মাছ (২৮ শতাংশ), ফলমূল (১১ দশমিক ৯৩ শতাংশ) এবং তেল (৮ দশমিক ৭ শতাংশ)। গত মাসে বোরো ধানের ফলন বাজারে চালের দাম কমাতে কিছুটা প্রভাব রাখবে বলে ধারণা করা হয়েছিল। তবে চালের দাম কমে আসতে আরও কিছুটা সময় লাগতে পারে। আলাদা আলাদা পণ্যভিত্তিক অবদান বিশ্লেষণে দেখা যায়, দাম বাড়ার ক্ষেত্রে মাঝারি চাল আবারও সর্বোচ্চ (২০ দশমিক ৪৬ শতাংশ) অবস্থানে উঠে এসেছে, যা আগের মাসের তুলনায় সামান্য বেশি। এছাড়া মোটা চাল, ইলিশ, বেগুন, সয়াবিন তেল, আম, পাঙ্গাস মাছ, চিকন চাল, লাউ ও মিষ্টিকুমড়া- এ সব পণ্যই মূল্যস্ফীতিতে উল্লেখযোগ্য বা মধ্যম পর্যায়ে প্রভাব ফেলেছে।

অন্যদিকে, আলু (-১৩ দশমিক ৩ শতাংশ) ও মুরগির মাংসের (-৩ দশমিক ৮৭ শতাংশ) কমতি দাম মূল্যস্ফীতি কমাতে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে