মাত্র কয়েক দিন আগেই ভারতের ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ২৭০ জন। এখনো শনাক্ত হয়নি বহু মরদেহ। স্বজনহারা পরিবারগুলো শোক ও অপেক্ষায় দিন কাটাচ্ছে। এমন করুণ প্রেক্ষাপটের মাঝেই ডিজে পার্টিতে নেচে-বেজে বিতর্কে জড়ালেন এয়ার ইন্ডিয়ার কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
গত ২০ জুন, ভারতের গুরুগ্রামে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানে অংশ নেন এয়ার ইন্ডিয়া স্যাটস-এর চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) আব্রাহাম জাকারিয়া, প্রতিষ্ঠানটির চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার (সিএফও), বেঙ্গালুরু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জেনারেল ম্যানেজারসহ আরও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা। ওই পার্টির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর তা নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের সদস্যরা ও সাধারণ মানুষ।
ভিডিওতে ডিজে মিউজিকের সঙ্গে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নাচতে দেখা যায়। আর এই দৃশ্যেই প্রশ্ন উঠেছে—এত বড় একটি দুর্ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই উদযাপন কীভাবে সম্ভব?
ঘটনার পর এয়ার ইন্ডিয়া স্যাটস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ভিডিওটি “প্রেক্ষাপটবিচ্ছিন্ন” এবং “উপস্থিত সবার উদ্দেশ্য এমন ছিল না”। তারা দুঃখ প্রকাশ করলেও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর বড় একটি অংশ এতে সন্তুষ্ট হতে পারেননি।
দুর্ঘটনার পর ২১ জুন পর্যন্ত মাত্র ২০২টি লাশ শনাক্ত করে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা সম্ভব হয়েছে। বাকি ৬৮টি দেহাবশেষ এখনও শনাক্তের অপেক্ষায়। গুজরাট সরকার, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ দল এবং এনডিআরএফ এখনো কাজ করে যাচ্ছে শনাক্তকরণে।
সমালোচকরা বলছেন: “শোকের জায়গায় নির্লজ্জ উদযাপন”
নিহতদের অনেক স্বজন সামাজিক মাধ্যমে ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, “আমাদের প্রিয়জনের মরদেহও আমরা এখনও পাইনি, আর ওরা পার্টি করছে?”—এমন এক মন্তব্যে শোকের চেয়ে হতাশা প্রবল হয়ে ওঠে।
ভবিষ্যতে এমন বিপর্যয়ের সময় কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো কীভাবে মানবিক সংবেদনশীলতা রক্ষা করবে, তা নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে। এই ঘটনায় এয়ার ইন্ডিয়ার দায়িত্ববোধ নিয়েই এখন প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।
সূত্র : দ্য ডেইলি গার্ডিয়ান