দেশের বেশিরভাগ ব্যাংক তারল্য সংকটে ভুগলেও রাজস্ব ঘাটতিতে পড়ে বাজেট চাহিদা মেটাতে ব্যাংকঋণের ওপর আরও বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে সরকার। অর্থবছর শেষ হতে এখনও কয়েক দিন বাকি থাকলেও সরকার ইতিমধ্যে বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ঋণ নিয়ে ফেলেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৫ জুন পর্যন্ত সরকার ব্যাংকিং খাত থেকে ৯৯ হাজার ৫৯১ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে, যা চলতি অর্থবছরের ৯৯ হাজার কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি।
সরকারের ঋণ বৃদ্ধির জন্য রাজস্ব আদায় ও বেসরকারি বিনিয়োগ কমে যাওয়াকে দায়ী করছেন ব্যাংকাররা।
তারা বলেন, অর্থবছরের শুরুতে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ব্যাপক খারাপ ছিল। এই সময়ে ব্যবসায়ীরা নতুন বিনিয়োগ না করায় ব্যাংকগুলো সরকারি ট্রেজারি বিল ও বন্ডে বেশি বিনিয়োগ করেছে। অন্যদিকে রাজস্ব আদায় কম থাকায় সরকারও ব্যাংকগুলো থেকে বেশি ঋণ নিয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুসারে, এই নিয়ে দ্বিতীয় বারের মতো সরকারের ব্যাংকঋণ অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে গেল। এর আগে লক্ষ্যমাত্রার বেশি ঋণ নিয়েছিল ২০২২-২৩ অর্থবছরে। সেবার ১.১৫ লাখ কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে সরকার ১.১৯ লাখ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিল।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ঘাটতি বাজেট মেটাতে ব্যাংকিং খাত থেকে অতিরিক্ত ঋণ নিতে হচ্ছে। কারণ ব্যাংকিং খাত ও বিদেশি উৎস ছাড়া সরকারের উপায় নেই। সরকার যে পরিমাণ রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নেয়, আদায় তার চেয়ে কম। ঋণের মাধ্যমে এই ব্যবধান পূরণ করতে হচ্ছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্যমতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬৬ হাজার ৬৭৮ কোটি টাকা কম রাজস্ব আদায় হয়েছে। মে মাস পর্যন্ত ৩.৯৪ লাখ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৩.২৭ লাখ কোটি টাকা।