দেশটির সংগীতসংশ্লিষ্টদের সংস্থা ইউকে মিউজিকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ২ কোটি ৩৫ লাখ পর্যটক কনসার্ট ও উৎসবে অংশ নিয়েছেন, যা আগের বছরের ১ কোটি ৯২ লাখের তুলনায় প্রায় ২২ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে ৯৩ শতাংশ দর্শক ছিলেন যুক্তরাজ্যের, আর বিদেশী ৬২ শতাংশ বেড়ে ১৬ লাখে পৌঁছেছে।
যুক্তরাজ্যের সংস্কৃতিমন্ত্রী লিসা ন্যান্ডি বলেছেন, ‘পরিসংখ্যান থেকে সহজেই বোঝা যায় লাইভ মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের আলাদা কদর আছে। কারণ বিশ্বের বড় শিল্পীদের পরিবেশনা উপভোগ করতে লাখ লাখ ভক্ত এখানে জড়ো হন, যা স্থানীয় অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখছে। এটি পর্যটন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও বিভিন্ন সেবা খাতের মাধ্যমে আয়ের বড় উৎস হয়ে উঠেছে।’
২০২৪ সালে লাইভ মিউজিক থেকে আসা আয়ের ৫১০ কোটি পাউন্ড ছিল পর্যটকের হিস্যা। তারা কনসার্টের টিকিট, খাবার, পানীয়, মার্চেন্ডাইজ, ভ্রমণ, পার্কিং ও আবাসনে এ অর্থ খরচ করেছেন। এছাড়া ৪৯০ কোটি পাউন্ড ছিল পরোক্ষ খরচ, যা এসেছে কনসার্টের নিরাপত্তা ও অন্যান্য অবকাঠামোগত ব্যয় বাবদ।
ব্যয়ের এ বৃদ্ধিতে মূল্যস্ফীতির প্রভাব রয়েছে, যা আবাসন, ভ্রমণ এবং খাবার ও পানীয়ের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এছাড়া টিকিটের দামও অনেক বেড়েছে। চলতি বছর ওয়েসিস ফ্যানরা তাদের পুনর্মিলনী ট্যুরে ১০০ কোটি পাউন্ডের বেশি খরচ করবে, যা ১৭টি কনসার্টে গড়ে শ্রোতাপ্রতি ৭৬৬ পাউন্ডের সমান।
প্রতিবেদনে লাইভ মিউজিক আয়োজনে লন্ডনের আধিপত্যের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে বড় বড় ইভেন্ট প্লেসের অবস্থান। গত বছর লন্ডনে ৭৫ লাখ সংগীত ভক্ত এসেছিলেন এবং এ বাবদ আয় হয়েছে ২৭০ কোটি পাউন্ড। এছাড়া ব্যাপকসংখ্যক দর্শক পেয়েছে উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিম ইংল্যান্ডের ইভেন্টগুলো।
লাইভ মিউজিক শিল্প গত বছর ৭২ হাজার পূর্ণকালীন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে অবদান রেখেছে, যা ২০২৩ সালের ৬২ হাজারের তুলনায় বেশি। তবে এ শিল্পের ওপর বাড়তি চাপের বিষয়টিও তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনে। যেখানে বলা হচ্ছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে ২৫০টি ফেস্টিভ্যাল বন্ধ করতে হয়েছে। ভ্রমণ খরচ বৃদ্ধি এবং ভেন্যু, স্টুডিও ও অন্যান্য মিউজিক স্পেস বন্ধ হওয়ার ঝুঁকি শিল্পের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাজ্যের লাইভ মিউজিক শিল্পের অর্থনৈতিক অবদান নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। তা সত্ত্বেও চলমান আর্থিক চাপ মোকাবেলা এবং শিল্পী ও ভেন্যুর জন্য সঠিক সমর্থন নিশ্চিত করার ওপর এর ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে।