ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হল এবং সুফিয়া কামাল হলের সামনের রাস্তা সহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়কে কোন স্পিড ব্রেকার না থাকায় শিক্ষার্থীরা ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।যে কোন মূহুর্তে দূর্ঘটনায় কোন না কোন মায়ের বুক খালি হতে পারে!
সুফিয়া কামাল হলের সামনের দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হল।
ফজলুল হক মুসলিম হলের সামনেও একই অবস্থা। কোন স্পিড ব্রেকার নাই। মৃত্যু পরোয়ানা নিয়ে রাস্তায় চলাচল করছেন শিক্ষার্থীরা।
দুই হলের সামনে দিয়ে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন দ্রুতগামী গাড়ি, মোটর সাইকেল, ট্রাক, মাইক্রো ইত্যাদি চলাচল করে। বিভিন্ন লোকাল বাস যেমন- শুভযাত্রা , বঙ্গবন্ধু এয়ারপোর্ট এভিনিউ, প্রভাতী-বনশ্রী, গুলিস্তান-গাজীপুর ইত্যাদিও এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। হলের সামনে স্পীড ব্রেকারের অভাবে এসব গাড়ীর গতিও তো নিয়ন্ত্রণে থাকে না। ফলে যেকোনো সময় ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে।
শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে কোনো চিন্তাই নেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। এসব ব্যাপারে কবি সুফিয়া কামাল হলের বিগত কয়েকজন প্রাধ্যক্ষের সাথে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন শিক্ষার্থীরা। কোন কাজে আসে নি।
এই দুই হলের বাইরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বর, দোয়েল চত্বর সহ বিভিন্ন সড়কে স্পিড ব্রেকার না থাকায় শিক্ষার্থীরা মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় চলাচল করছে। কয়েকটি সড়কের পুরনো স্পিড ব্রেকার ক্ষয় হয়ে যাওয়ার কারণে গাড়ীর গতিও নিয়ন্ত্রণে থাকে না। ফলে ক্যাম্পাসে চলাচলে ঝুঁকি থেকে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সুফিয়া কামাল হলের এক ছাত্রী জানান,"সুফিয়া কামাল হল এর বর্তমান প্রধান সমস্যাগুলোর মধ্যে একটি হলো হলের সামনের রাস্তার "স্পিড ব্রেকার"। প্রতিদিন হল থেকে বের হতেই যেন এক যুদ্ধে নামতে হয়! বেঁচে ফেরার যুদ্ধ! হল থেকে বের হয়েই বেশির ভাগ শিক্ষার্থী ফজলুল হক মুসলিম হল হয়ে কার্জন, মোকাররম, বা মোতাহার হোসেন এ ক্লাস করতে যায়! কিন্ত এই সুফিয়া কামাল হল থেকে ফজলুল হক মুসলিম হল পর্যন্ত যেতেই যেন জীবন হাতে নিয়ে পা বাড়াতে হয়"!
তিনি আরো বলেন,"সকালে ৯/১০ টায় অফিস আওয়ারে যানবাহনের চাপ বেশি থাকে। সেসময় অনেকের ই ক্লাস থাকে।পাশেই সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল থাকায় সব সময় এই রাস্তা ব্যস্ত থাকে,। মেয়েদের হল হওয়া সত্ত্বেও নেই কোন স্পীড ব্রেকার, অনেক সময় ৫-৭ মিনিট দাঁড়িয়ে থেকেও যানবাহন এর সিরিয়াল কমে না। সিগনাল কখন পড়বে তার অপেক্ষা করতে হয়"।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মৎস্যবিজ্ঞান বিভাগে পড়ুয়া ফজলুল হক মুসলিম হলের এক আবাসিক ছাত্র জানান,"গুলিস্তানের দিকে ফজলুল হক হলের গেইটের সামনে কোন স্পিড ব্রেকার না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমাদের রাস্তা পার হতে হয়। হল বের হয়েই থেকে প্রচন্ড গতির গাড়ির সম্মুখীন হতে হয়। মূহুর্তের অসতর্কতায় ঘটে যেতে পারে ভয়ংকর দূর্ঘটনা। হলের ছাত্রদের সুরক্ষার স্বার্থে জরুরি ভিত্তিতে স্পিড ব্রেকার নির্মান করা প্রয়োজন"।
সুফিয়া কামাল হল এবং ভিসি বাংলোর সামনে নতুন
স্পিড ব্রেকার, কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের সামনে ক্ষয় হয়ে যাওয়া পুরনো স্পিড ব্রেকার সংস্কার নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সাথে কথা বলেছেন বলে জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলী(সিভিল) মোঃ আব্দুল মান্নান।
স্পিড ব্রেকারের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সাথে একাধিক বৈঠক করেছেন বলে জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ডক্টর মোহাম্মদ মাকসুদুর রহমান । তিনি বলেন, "ক্যাম্পাসের কিছু জায়গায় নতুন স্পিড ব্রেকার দরকার। আবার কিছু জায়গায় 'ক্ষয়' হয়ে যাওয়া পুরনো স্পিড ব্রেকার সংস্কার করা দরকার। আমরা সবকিছুই সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তাদের বুঝিয়ে বলেছি।আজকেও এই বিষয়ে আমরা ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সাথে বৈঠক করেছি"।
এই বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডক্টর এ এস এম মাকসুদ কামাল জানান, "ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়কে স্পিড ব্রেকার নির্মাণের জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কে ইতিমধ্যেই অনুরোধ করেছি। আশা করি,আগামী এক মাসের মধ্যে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন স্পিড ব্রেকার নির্মাণ করবে"।
যাযাদি/ এস