জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) একাধিক শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত তথ্য প্রতারকদের হাতে চলে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
ওই তথ্য ব্যবহার করে ‘মেধা বৃত্তি’ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের বিকাশ, নগদসহ বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ আত্মসাতের চেষ্টার অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
সম্প্রতি এমন প্রতারণার শিকার হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী। প্রতারকরা নির্দিষ্ট শিক্ষার্থীর নাম, বিভাগ ও বর্ষ জেনে প্রথমে মেধা বৃত্তি অনুমোদনের কথা জানায়।
পরে একটি ওটিপি কোড মোবাইলফোনে পাঠানোর কথা বলে সেটি জানানোর অনুরোধ করে।
শিক্ষার্থীরা ওটিপি সরবরাহ করার সঙ্গে সঙ্গেই তাদের মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করে টাকা তুলে নেয় প্রতারক চক্রটি।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিবছর দুই ধরনের বৃত্তি দেওয়া হয় শিক্ষার্থীদের। এরমধ্যে মেধা বৃত্তির আওতায় শিক্ষার্থীদের নগদ টাকা দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, সাধারণ বৃত্তির আওতায় শিক্ষার্থীদের বেতন মওকুফ করা হয়।
সাম্প্রতিক প্রতারণার ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আইয়ুব আলী বলেন, ‘এক অপরিচিত নম্বর থেকে কল দিয়ে আমার নাম, বিভাগ ও বর্ষ জানায়।
তারা বলে আমি মেধা বৃত্তি পেয়েছি এবং টাকা পাঠানের জন্য ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর চায়।
অসচেতনতাবশত আমি নম্বর দিয়ে দেই। পরে দেখি আমার কার্ড থেকে ছয় হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে।’
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী আজিজুল হাকিম আকাশ বলেন, ‘একইভাবে এক অপরিচিত নম্বর থেকে কল দিয়ে তার পরিচয় নিশ্চিত করে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর চাওয়া হয়।
তারা জানায় আমার ইসলামি ব্যাংকে করা বৃত্তির আবেদন অনুমোদিত হয়েছে।
সন্দেহ হওয়ায় আমি কোনো তথ্য দিইনি। পরে একজন শিক্ষার্থীর ফেসবুক পোস্টে দেখি, একই কৌশলে তার চার হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছে চক্রটি।’
এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো অনলাইন ফর্ম, বৃত্তির আবেদন অথবা অভ্যন্তরীণ ডেটাবেইস থেকে এসব তথ্য চুরি হয়ে থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও তথ্য ফাঁসের উৎস সম্পর্কে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. নাসির উদ্দীন বলেন ইউএনবির বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিকে বলেন, ‘আমি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নই, তাই এই মুহূর্তে কিছু বলতে পারছি না। খোঁজ নিয়ে আপনাকে জানাবো।’
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
কিছু কুচক্রীমহল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাৎ করছে। শিক্ষার্থীদের এ ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট বা কোনো অনলাইন মাধ্যম থেকে তথ্য চুরি হয়েছে কি না, সেটি প্রশাসন তদন্ত করে দেখবেন বলেও শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করেন তিনি।