কুমিল্লার মুরাদনগরে এক নারীর উপর নৃশংস ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) সনাতনী সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (২৯ জুন) বিকেল ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
‘ধর্ষকের কোনো দল নেই’, ‘আসিয়া থেকে নন্দিনী, বিচার হতে দেখিনি’, ‘ধর্ষকের ফাঁসি চাই’, ‘আমার বোন ধর্ষিতা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’— এমন নানা প্রতিবাদী স্লোগানে মুখরিত হয় মানববন্ধন প্রাঙ্গণ।
মানববন্ধনে বক্তারা ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে বলেন, অপরাধী যেই হোক, তাকে কোনো রাজনৈতিক পরিচয়ে রক্ষা করার চেষ্টা নয়, বরং সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
অর্থনীতি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী অন্তু দাশ বলেন, “ধর্ষণের ঘটনার পর আমরা অপরাধীকে রাজনৈতিক পরিচয়ে বিচার করতে বসে যাই। এটিই মূল সমস্যা। ধর্ষক শুধু ধর্ষক— তার পরিচয় দলীয় নয়, অপরাধী হিসেবে দেখা উচিত। রাজনৈতিক মোড়ক দিয়ে ধর্ষকদের রক্ষা করার অপচেষ্টা বন্ধ করতে হবে।”
পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী অজয় বর্মণ বলেন, “কুমিল্লা, বগুড়া, বরিশাল— কোথাও নারীরা নিরাপদ নয়। ধর্ষণ করে ভিডিও ভাইরাল করা হয়েছে, যা ভয়ানক ন্যাক্কারজনক। ফজর আলীসহ যারা এই ঘটনায় জড়িত, তাদের মৃত্যুদণ্ড চাই। দেশে চলমান সব ধর্ষণকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।”
একাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের শিক্ষার্থী রুবেল বৈরাগী বলেন, “আজ দেশের নারীরা ঘরের ভেতরেও নিরাপদ নয়। এই বাস্তবতায় দেশ বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠছে। মানবিক মূল্যবোধ বিলুপ্ত হচ্ছে। এর থেকে পরিত্রাণের একমাত্র পথ হলো ধর্ষকদের এমন শাস্তি নিশ্চিত করা, যা দেখে ভবিষ্যতে কেউ এই জঘন্য কাজ করার কথা চিন্তাও না করে।”
উল্লেখ্য, শনিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে দেখা যায়, এক নারীকে বিবস্ত্র করে মারধর করা হচ্ছে। ঘটনায় দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হলে, ভুক্তভোগী নারী মুরাদনগর থানায় ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন। ইতোমধ্যে পুলিশ প্রধান অভিযুক্তসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে।