টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে নিরাপত্তার অভাবে ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় নায়ক শাকিব খানের ‘তান্ডব চলচ্চিত্রের প্রদর্শন বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে আয়োজকরা।
মঙ্গলবার ১০ জুন দুপুর থেকে কালিহাতীর আউলিয়াবাদ এলাকায় জেলা পরিষদের কমিউনিটি সেন্টার কাম মাল্টিপারপাস হলে প্রদর্শিত চলচ্চিত্রটির প্রদর্শন বন্ধ করা হয়।
এর আগে শুক্রবার ৬ জুন বাদ আছর পারখী ইউনিয়ন ওলামা পরিষদের নেতারা চলচ্চিত্রটির প্রদর্শন বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে। পরবর্তীতে সিনেমা বন্ধের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত আবেদন করা হয়। জানা যায়, স্থানীয় কামরুজ্জামান সাইফুল ও সাজু মেহেদীর নেতৃত্বে জেলা পরিষদের কমিউনিটি সেন্টার কাম মাল্টিপারপাস ভাড়া নিয়ে জনপ্রিয় চলচ্চিত্র ‘তান্ডব’ প্রদর্শনের আয়োজন করা হয়।
হলটি এক মাসের জন্য অনুমতি নেওয়া হলেও ১০ দিনের ভাড়া পরিশোধ করা হয়েছে। ঈদের দিন থেকে কালিহাতীর আউলিয়াবাদসহ সারাদেশের ১৩২টি প্রেক্ষাগৃহে ছবিটি চলছে।
আন্দোলনকারী মাওলানা আব্দুল্লাহ বলেন, স্থানীয় মসজিদ, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদানে ক্ষতি হতে পারে। এছাড়া অসামাজিক কার্যকলাপ বাড়তে পারে। সেজন্য হলটি বন্ধের জন্য বিক্ষোভ মিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
আয়োজক সাজু মেহেদী বলেন, ‘কমিউনিটি সেন্টার কাম মাল্টিপারপাস হলের এসি সার্ভিসিং, টিকেট প্রিন্টিং ও স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। সব মিলিয়ে আমাদের নয় লাখ টাকার বেশি খরচ হয়েছে। আমরা সব মিলিয়ে আড়াই দিনের মতো ছবি চালাতে পেরেছি। ভালো সাড়া পাচ্ছিলাম। এছাড়াও আমাদের প্রচার-প্রচারণায়ও বাধা দেওয়া হয়েছে। পোস্টার লাগাতে দেয়নি ও মাইকিংও করতে দেয়নি।’
আয়োজক কামরুজ্জামান সাইফুল বলেন, স্থানীয় আলেম-ওলামারা আমার যে ক্ষতি করলো, এমন ক্ষতি যাতে আর কারো না হয়, সেজন্য সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। ধর্মের নামে দেশীয় শিল্প-সংস্কৃতিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে- এটা তারই অংশ।
তিনি আরও বলেন, মঙ্গলবার সকালে কমিউনিটি সেন্টার কাম মাল্টিপারপাস হলের সামনে ব্যানার লাগানোর পর দুই মিনিটও রাখতে পারিনি। বিভিন্নভাবে আমার কাছে হুমকি আসতে থাকে। নিরাপত্তাহীনতার অভাবে চলচ্চিত্রটির প্রদর্শনী বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি।
কালিহাতী থানার ওসি জাকির হোসেন বলেন, আমার কাছে তারা এসেছিলেন। তাদের বলেছি, এই বিষয়ে আমি সিদ্ধান্ত দেওয়ার কেউ না। কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. খায়রুল ইসলাম বলেন, জেলা পরিষদের হলটি ভাড়া নিয়ে তারা সিনেমাটি চালাচ্ছিল। এদিকে বন্ধ করার জন্য আমার অফিসে একপক্ষ আবেদনও করেছে। তবে আমি ছুটিতে রয়েছি।
টাঙ্গাইল জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আবেদনের প্রেক্ষিতে গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তের মাধ্যমে আমরা ওই হলটি ভাড়া দিয়েছিলাম। সাথে কিছু শর্তও দিয়েছিলাম, তার মধ্যে অন্যতম ছিল, সেখানে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হলে সিনেমা চালানো বন্ধ করতে হবে। পরবর্তীতে কি হয়েছে, তা জানিনা।