রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

তরুণদের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার শপথ

আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। কবি বলেছেন, এসেছে নতুন শিশু ছেড়ে দিতে হবে স্থান। আজকের তরুণরাই ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবে। ১২ ডিসেম্বরের 'স্মার্ট বাংলাদেশ দিবসকে' কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানালেন তাদের স্বপ্নের কথা। তাদের গল্প গুলো শুনেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুস সালেহীন সাইফ
নতুনধারা
  ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০

স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে তরুণ প্রজন্ম নেতৃত্ব দেবে শৈশব এবং প্রাপ্তবয়স্কের মাঝামাঝি সময়ের জীবনীশক্তিকে তারুণ্য বলা হয়ে থাকে। এ ছাড়া, যার মধ্যে সৌন্দর্য, সজীবতা, সাহস, অদম্য জীবনীশক্তি, উদ্দীপনা, দীপ্ত শপথ এবং বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস ইত্যাদি থাকে, সেই ব্যক্তিও তরুণ। আমার মতে, তারুণ্য মানেই ভিন্ন কিছু, তারুণ্য মানেই সফলতা। এই তারুণ্যের অজেয় শক্তির মাধ্যমেই যুগে যুগে বীরপুরুষরা বিশ্বকে জয় করেছেন। সেই তারুণ্য শক্তির অবদানেই যুগে যুগে জ্ঞান-বিজ্ঞানের উৎকর্ষতা সাধিত হয়েছে, এমনকি বর্তমানেও তরুণ সমাজ এ ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে। সেই ধারাবাহিকতায়, স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সরকার ও স্মার্ট সমাজ এই চারটি ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে তারুণের দৃঢ় প্রত্যয় ও অবদান একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করি। কারণ, এই বাংলাদেশ সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকেই আমরা জাতির স্বার্থে তরুণ প্রজন্মের দৃঢ় প্রত্যয়, সাহস, নেতৃত্ব, পরিশ্রম ও ত্যাগ-তিতিক্ষার বদৌলতে সাফল্যের নজির ইতিহাসে দেখতে পাই। বায়ান্ন, বাষট্টি, ঊনসত্তর, একাত্তর এবং নব্বই যার উৎকৃষ্ট উদাহরণ। এরই ধারাবাহিকতায়, আবারও তরুণ প্রজন্মের জেগে উঠা, দৃঢ় প্রত্যয় ও আন্তরিক প্রচেষ্টায়ই 'স্মার্ট বাংলাদেশ' ধারণাকে বাস্তবে রূপদানে বহুদূর এগিয়ে নিতে সহযোগিতা করবে বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। মো. জাফর আলী শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। প্রযুক্তিখাতে তরুণদের দক্ষ করতে হবে বাংলাদেশের জনসংখ্যার একটি বড় অংশজুড়ে রয়েছে তরুণরা। সমাজ ও দেশ পরিবর্তনে তাদের ভূমিকা অনেক। সংস্কৃতি ও সভ্যতার উন্নয়নের কারিগর এই তরুণরাই। আজকে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের যে স্বপ্ন দেখা হচ্ছে, এতে তরুণদের ভূমিকা খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। স্মার্ট বাংলাদেশ বলতে বুঝায় শিক্ষিত ও সুদক্ষতাসম্পন্ন জাতি। চতুর্থ শিল্প বিপস্নবকে সামনে রেখে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২০৪১ ?সালের যে ভিশন তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে যে চারটি ভিত্তি স্থাপন করা হয়েছে, স্মার্ট সিটিজেন এর মধ্যে অন্যতম। তরুণদের মধ্যে যে অফুরন্ত শক্তি বিদ্যমান, এর মাধ্যমে সহজেই তাদের স্মার্ট সিটিজেন হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব। এ জন্য ইন্টারনেট, রোবোটিক্স, আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স এবং সর্বোপরি তথ্য প্রযুক্তির চর্চা ও প্রত্যয় তরুণদের মধ্যে গড়ে তুলতে হবে। এ ছাড়া স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে বাকি স্তম্ভগুলো হলো- স্মার্ট ইকোনোমি, স্মার্ট সোসাইটি এবং স্মার্ট গভর্নম্যান্ট। তরুণরা তাদের নিজেদের স্মার্ট হিসেবে গড়ে তোলার পাশাপাশি পরিবার ও সমাজে এ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করতে পারে। এ ছাড়া একটি দেশের তরুণ প্রজন্মের মধ্য থেকেই সে দেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের সৃষ্টি হয়। তাই তরুণদের গড়ে তোলার মাধ্যমেই তৈরি হবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা ও স্মার্ট বাংলাদেশ। সাইদুর রহমান শরিফ শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সময়ের থেকে এগিয়ে থাকা একটি নান্দনিক রূপকল্প তরুণদের অদম্য সাহস, উদ্দীপনা ও লালিত স্বপ্নের বাস্তব প্রতিফলন হলো- স্মার্ট বাংলাদেশ। ডিজিটাল বাংলাদেশের সফল সমাপ্তির পর তরুণদের স্বপ্নের পরিধি আরও বিস্তৃত ও সমাদৃত করার নিমিত্তে প্রধানমন্ত্রীর এক ভিশনারী সিদ্ধান্ত হচ্ছে- স্মার্ট বাংলাদেশ। শুধু অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং উন্নত প্রযুক্তিই নয়; বরং তরুণদের চতুর্থ শিল্প বিপস্নব উপযোগী করে গড়ে তুলতে প্রধানমন্ত্রীর 'পলিসি মেকিং অ্যান্ড ইম্পলিমেন্টিং কেপাবিলিটি' আজকে সারা বিশ্বের কাছেই 'এক রিসার্চ টপিকে' পরিণত হয়েছে। স্মার্ট বাংলাদেশের মাধ্যমে ব্যক্তিজীবন থেকে শুরু করে সরকার এবং সমাজের প্রতিটি স্তরে নির্ঝঞ্জাট এবং নির্মল নাগরিক হয়রানিবিহীন রাষ্ট্র বিনির্মাণ প্রক্রিয়ায় স্মার্ট ইকোনোমির সঙ্গে নিশ্চিতকরণ করা হয়েছে হয়রানিবিহীন নাগরিক কর্তব্য পালন। বাংলাদেশের সামর্থ্য প্রমাণ করার থেকেও এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ দিকটি হয়ে উঠবে আগামী প্রজন্মের জন্য একটি ডিজিটাল প্রযুক্তি এবং উন্মুক্ত উদ্ভাবনী পস্ন্যাটফর্মের সৃষ্টি। বাংলাদেশের উন্নয়ন টেকসই ও সাশ্রয়ী করার লক্ষ্যে কৃষি থেকে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা থেকে নিরাপত্তা, স্মার্ট সিটি থেকে স্মার্ট ভিলেজ, স্মার্ট ট্রান্সপোর্টেশন থেকে স্মার্ট কমিউনিকেশন প্রতিটি স্তর এর আওতাভুক্ত এবং স্মার্ট আঙ্গিকে রূপায়ন হবে। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, অর্থনীতি এবং সোসাইটির সর্বোচ্চ উৎকর্ষতা সাধনের পাশাপাশি পরবর্তী প্রজন্ম যাতে জলবায়ুর অভিঘাত থেকে রক্ষা পেয়ে 'স্মার্টলি' বাঁচতে পারে, এর জন্য নিঃসন্দেহে এটি চমৎকার সমাধানের উপায় বলে মনে করি। স্মার্ট বাংলাদেশের পরিধি এবং ব্যপ্তি দুটিই বৃহৎ এবং তা একজন তরুণের ব্যক্তিজীবন থেকে সমাজ, সরকার ও অর্থনীতি প্রতিটি স্তরকেই স্পর্শ করেছে। প্রধানমন্ত্রীর এই ব্রেইন চাইল্ড এর প্রাসঙ্গিকতা এবং কার্যকারিতা সম্পর্কে সংক্ষেপে সারমর্ম করলে বলা যায়, সময়ের থেকে এগিয়ে থাকা একটি নান্দনিক রূপকল্প। রাইদুল খান কৌশিক শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।স্মার্ট বাংলাদেশ চতুর্থ শিল্প বিপস্নবের জন্য বাংলাদেশকে প্রস্তুত করছে ডিজিটাল বাংলাদেশের ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে ২০৪১ সালকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক গৃহীত নতুন চ্যালেঞ্জ 'স্মার্ট বাংলাদেশ'। এর প্রধান লক্ষ্য হলো- ২০৪১ সালের মধ্যে একটি সাশ্রয়ী, টেকসই, বুদ্ধিদীপ্ত, জ্ঞানভিত্তিক, উদ্ভাবনী, স্মার্ট, নাগরিক হয়রানি ও ভোগান্তিবিহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। বাংলাদেশের একজন তরুণ নাগরিক হিসেবে আমি মনে করি, স্মার্ট বাংলাদেশ রূপকল্পটি অন্যতম দূরদৃষ্টিসম্পন্ন একটি পরিকল্পনা। বর্তমান বিশ্বে চতুর্থ শিল্প বিপস্নবের জোয়ার বইছে। যেখানে দ্রম্নতগতির বাধাহীন তথ্যপ্রযুক্তির স্থানান্তর, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের ব্যবহার, যন্ত্রের মাধ্যমে নির্ভূলভাবে স্বয়ংক্রিয় কর্ম সম্পাদন করা হচ্ছে এবং অদূর ভবিষ্যতে তা আরও বেগবান হবে। সর্বোপরি, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি যেমন-আইওটি, রোবটিক্স, বস্নকচেইন ইত্যাদির ব্যবহার বৃদ্ধি পাবে। মূলত স্মার্ট বাংলাদেশ রূপকল্পের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে- চতুর্থ শিল্প বিপস্নবের সুযোগ গ্রহণে বাংলাদেশকে প্রস্তুত করা। এ জন্য প্রয়োজন চতুর্থ শিল্প বিপস্নব উপযোগী সুদক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টি করা। স্মার্ট বাংলাদেশের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন মূল্যবোধ সম্পন্ন তরুণ জনগোষ্ঠী। কারণ, তারাই হবে এ দেশের কর্মক্ষম স্মার্ট নাগরিক। সৃজনশীল তরুণ প্রজন্মই একমাত্র স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে। সৃজনী শক্তি বিকাশের পাশাপাশি জ্ঞানভিত্তিক গুণগত শিক্ষা, অনুকূল সুষ্ঠু পরিবেশ এবং তাদের জ্ঞানপিপাসু হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। আত্মবিশ্বাসী ও কর্মোদ্যমী তরুণরা প্রযুক্তিগত দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু তনয়ার স্বপ্নের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার পথ সুগম করবে। তারুণ্যের আলোয় আরও একবার আলোকিত হবে বাংলাদেশ। রাশেদুজ্জামান রনি শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে