শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২

বৈশ্বিকভাবে উন্নতি হচ্ছে এইডস পরিস্থিতির  

মো. হাসান মোল্লা
  ২৪ নভেম্বর ২০২৩, ২০:৩৮
বৈশ্বিকভাবে উন্নতি হচ্ছে এইডস পরিস্থিতির  
বৈশ্বিকভাবে উন্নতি হচ্ছে এইডস পরিস্থিতির  

বৈশ্বিকভাবে উল্লেখযোগ্য উন্নতি ঘটেছে এইডস পরিস্থিতির। ২০১০ সালের তুলনায় বর্তমানে আফ্রিকার পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলীয় দেশগুলোতে এইডস আক্রান্ত রোগীর হার হ্রাস পেয়েছে ৫৭ শতাংশ। অন্যদিকে বিশ্বের ধনী রাষ্ট্রগুলো যদি প্রাণঘাতী রোগ এইডসের ওষুধ-টিকা আবিষ্কার ও বৈশ্বিক জনসচেতনতা খাতে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ করলে ২০৩০ সালের মধ্যেই বিশ্ব থেকে এইডসের নির্মূলের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। জানা গেছে, বতসোয়ানা, এসওয়াতিনি, রুয়ান্ডা, তানজানিয়া ও জিম্বাবুয়ে ইতোমধ্যে ‘৯৫-৯৫-৯৫’ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সক্ষম হয়েছে ইতোমধ্যে। এই ৫টি দেশের এইডস আক্রান্ত রোগীদের ৯৫ শতাংশ নিজেদের আক্রান্ত অবস্থা সম্পর্কে সচেতন, গুরুতর অসুস্থ রোগীদের ৯৫ শতাংশ চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং এখনও আক্রান্ত হননি- এমন লোকজনদের ৯৫ শতাংশ এই রোগটির সংক্রমণ সম্পর্কে সচেতন।

এর বাইরে এইডস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি-এমন অন্তত ১৬টি দেশ এই রোগটি নিয়ন্ত্রণে উল্লেখযোগ্য উন্নতি করতে সক্ষম হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউএনএইডস। এর বাইরে এইডস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি এমন অন্ত ১৬টি দেশ এই রোগটি নিয়ন্ত্রণে উল্লেখযোগ্য উন্নতি করতে সক্ষম হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউএনএইডস। কিন্তু ২০১৫ সালের পর থেকে এই অবস্থার নাটকীয় উন্নতি ঘটেছে। ইউএনএইডসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২২ সালে বিশ্বজুড়ে এইডস রোগীর সংখ্যা ছিল ৩ কোটি ৯০ লাখ এবং তাদের মধ্যে ২ কোটি ৯০ লাখ ৮০ হাজার রোগী এই রোগটির চিকিৎসা হিসেবে অ্যান্টি রেট্রোভাইরাল থেরাপি নিচ্ছেন। এই রোগীদের মধ্যে ৬ লাখ ৬০ হাজার শিশুও রয়েছে।

এছাড়া যেসব অন্তস্বত্ত্বা ও প্রসূতি নারী এইডসে আক্রান্ত, তাদের মধ্যেও ৮২ শতাংশ এই অ্যান্টি রেট্রোভাইরাল থেরাপি নিচ্ছেন।

ইউএনএইডসের প্রতিবেদন অনুসারে, গত বছর বিশ্বে এইডসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৩ লাখ মানুষ এবং এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬ লাখ ৩০ হাজার জন।

প্রকল্পের নির্বাহী পরিচালক উইনি বায়ানিমা বলেন, ‘গত দুই দশকের পরিসংখ্যান বিচার করার পর আমরা দেখতে পাচ্ছি, ২০০৪ সালের তুলনায় ২০২২ সালে বিশ্বজুড়ে এইডস সংক্রমণের হার হ্রাস পেয়েছে ৬৯ শতাংশ।’ ‘সংক্রমণ পরিস্থিতির এই উন্নতি বেশ আশাব্যাঞ্জক হলেও নিশ্চিন্ত হয়ে বসে থাকার সময় এখনও আসেনি। বিশ্বকে এইডসমুক্ত করতে হলে আরও অনেকটা পথ আমাদের পাড়ি দিতে হবে।’

এইডস নির্মূল বিষয়ক জাতিসংঘের বৈশ্বিক প্রকল্প ইউএনএইডসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বৈশ্বিক দাতা দেশ ও সংস্থাগুলো এগিয়ে এলে পূর্ব নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বকে চিরতরে এইডসের অভিশাপমুক্ত করা সম্ভব। ২০১৫ সালে ইউএনএইড নামের এই প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু করে জাতিসংঘ। প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই প্রকল্পটির লক্ষ্য ছিল পরবর্তী ১৫ বছর, অর্থাৎ ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বকে এইডসমুক্ত করা।

১৯৮১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম এইডসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। ওই বছরই দেশটির রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি) এই রোগের জন্য দায়ী ভাইরাস এইচআইভিও শনাক্ত করে। অনিরাপদ যৌনতা, ব্যাবহৃত সিরিঞ্জের সূঁচের মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করে এইচআইভি ভাইরাস। এছাড়া, মায়ের মাধ্যমেও এইডসে আক্রান্ত হয় শিশুরা। কোনো গর্ভবতী নারীর দেহে এইডসের জীবাণু থাকলে তা অনাগত সন্তানকেও সংক্রমিত করে।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে