প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলে একাধিকবার সময় বাড়িয়ে নিলেও এখন পর্যন্ত সমাপ্ত হয়নি খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার দীঘিনালা উপজেলা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজ।
জানাযায়, উপজেলার উন্নত স্বাস্থ্য সেবার মান বাড়াতে ২০১৯-২০ অর্থবছরে পূর্বের ১০ শয্যা থেকে বাড়িয়ে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ করার উদ্যোগ নেয়া হয়। প্রকল্পটির কাজ করাচ্ছে হেল্থ ইঞ্জিনিয়ার ডিপার্টমেন্টের আওতাধীন মেক কনস্ট্রাকশন।
জেলার বৃহত্তর জনসংখ্যা বহুল উপজেলার একমাত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজের ধীরগতিতে ক্ষোভ জানিয়েছে স্থানীয়রা। এদিকে প্রচন্ড শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়া সহ বিভিন্ন রোগীদের চাপ বেড়ে যাওয়ায় শয্যা সংকটে চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ।
খোঁজ নিয়ে জানাযায়, ৫০ শয্যার এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির নির্মাণ কাজের নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলে একাধিকবার সময় বাড়িয়ে নেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। ২ বছরের কাজ ৫ বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত সমাপ্ত করতে পারেনি। নির্ধারিত সময়ে নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় রোগীদের বাড়তি চাপে ব্যহত হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা এবং চিকিৎসা নিতে এসে দুর্ভোগে পড়ছে সাধারণ মানুষ।
এদিকে পুরোনো জরাজীর্ণ টিন সেটের কুঁড়েঘরে বসে চিকিৎসা সেবা দিতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। এবং পুরনো জরাজীর্ণ শয্যা গুলোতেই রোগী ভর্তি করানো হচ্ছে। শয্যা সংকটের কারণে শীতের মধ্যে জরাজীর্ণ ঘরের ফ্লোরে থেকে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। এতে সেবা নিতে এসে আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছে অনেকেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালে বিভিন্ন রোগে ভর্তিকৃত কয়েকজন রোগী জানান, পুরাতন জরাজীর্ণ ঘরে জরাজীর্ণ ব্যাডে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন তাঁরা। পর্যাপ্ত ব্যাড না থাকায় বহু রোগীদের মাটিতে বসে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। এবং জরাজীর্ণ ঘরে মশার প্রকোপও বেড়েছে। এতে চিকিৎসা নিতে এসে সুবিধার চেয়ে অসুবিধাই বেশি হচ্ছে রোগীদের।
দীঘিনালা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. তণয় তালুকদার জানান, একাধিকবার সময় বাড়িয়ে নেয়ার পরও শেষ করতে পারেনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজ। স্বল্প শয্যা নিয়ে অতিরিক্ত রোগির চাপ থাকায় আমরা চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছি। পুরোনো জরাজীর্ণ ঘরে বসে সেবা দিতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। এবং রোগীর চাপ বেশি থাকায় শয্যা সংকটের কারণে ভোগান্তি হচ্ছে রোগীদের। ৫০ শয্যা বিশিষ্ট নতুন ভবনগুলোর কাজটি দ্রুত শেষ হলে মানসম্মত সেবা পাবে উপজেলার হাজারো মানুষ।
এ বিষয়ে প্রকল্পটির উপ সহকারী প্রকৌশলীর দায়িত্বে থাকা টুটলী চাকমাকে মুঠোফোনে একাধিকবার কল করে এবং এসএমএস করেও কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি।
এদিকে প্রকল্পটির তত্বাবধায়ক মো. মেহেদী হাসান বলেন, নির্মাণাধীন ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ২০১৯-২০ অর্থ বছরের প্রকল্প হলেও করোনা কালীন সময়ে দীর্ঘ ছয়মাস কাজ বন্ধ থাকা, হঠাৎ নির্মাণ সামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়া সহ নানা জটিলতার কারণে নির্ধারিত সময়ে কাজ সমাপ্ত করা যায়নি।
নানা জটিলতায় নির্মাণ কাজ ধীরে হলেও, আগামী জুন মাসের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করার আশ্বাস দিয়েছেন প্রকল্পের তত্ত্বাবধায়ক মো. মেহেদী হাসান।
৫০ শয্যার এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কার্যক্রম শুরু হলে উন্নত চিকিৎসা সেবা পাবে উপজেলার ৫ ইউনিয়নের মানুষ। পাশাপাশি পাশ্ববর্তী উপজেলা রাঙামাটির লংগদু ও বাঘাইছড়ির সাধারণ মানুষেরাও উপকৃত হবে। তদারকির মাধ্যমে তা দ্রুত চালুর দাবি জানান স্থানীয়রা।
যাযাদি/ এস