আন্তর্জাতিক

সিঙ্গাপুরের শাংগ্রি-লা নিরাপত্তা সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ ‘অপমানজনক’ মন্তব্য করেছেন। এমন অভিযোগ করেছে চীন।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, এ বিষয়ে চীন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে প্রতিবাদ জানিয়েছে।

রোববার মন্ত্রণালয়টি জানায়, হেগসেথ চীনকে ইন্দো-প্যাসিফিকের প্রতি একটি ‘হুমকি’ বলে অভিহিত করায় বেইজিং আপত্তি জানিয়েছে।

রয়টার্স সূত্রে জানা গেছে, শনিবার শাংগ্রি-লা ডায়লগে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এসব মন্তব্যকে ‘নিন্দনীয়’ ও ‘বিভাজনের বীজ বপণ করার উদ্দেশ্যে’ করা বলে বর্ণনা করেছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয়টি তাদের ওয়েবসাইটে দেওয়া বিবৃতিতে বলেছে, “হেগসেথ ইচ্ছাকৃতভাবে এই অঞ্চলের দেশগুলোর শান্তি ও উন্নয়নের আহ্বান উপেক্ষা করেছেন,

তার বদলে শীতল যুদ্ধের মানসিকতা তুলে ধরে ব্লক সংঘাতের উস্কানি দিয়েছেন, মানহানিকর অভিযোগ করে চীনকে অপমান করেছেন এবং চীনকে একটি ‘হুমকি’ হিসেবে অভিহিত করে মিথ্যাচার করেছেন।”

বিবৃতিতে মন্ত্রণালয়টি আরও বলেছে, “যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ চীন সাগরে আক্রমণাত্মক অস্ত্রশস্ত্র মোতায়েন করেছে এবং এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে উত্তেজনা ও আগুন উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করছে, যা এই অঞ্চলকে বিস্ফোরন্মুখ করে তুলছে।”

শাংগ্রি-লা সম্মেলনে হেগসেথ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রধান নিরাপত্তা মিত্র অস্ট্রেলিয়াসহ অন্য মার্কিন মিত্রদের চীনের ‘বাস্তব ও সম্ভাব্য আসন্ন’ হুমকির বিষয়ে সতর্ক করে প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

হেগসেথের প্রতিরক্ষা ব্যয় বৃদ্ধির আহ্বানের বিষয়ে রয়টার্সের জিজ্ঞাসার উত্তরে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ জানিয়েছেন, তার সরকার প্রতিরক্ষা খাতে অতিরিক্ত এক হাজার কোটি অস্ট্রেলীয় ডলার বরাদ্দের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

ফিলিপিন্সের সঙ্গে ওয়াশিংটনের দীর্ঘদিনের প্রতিরক্ষা মিত্রতার অংশ হিসেবে চলতি বছর মার্কিন সামরিক বাহিনী দেশটির লুজন দ্বীপে অত্যাধুনিক মিসাইল লঞ্চার সিস্টেম টাইফুন মোতায়েন করেছে। এই লঞ্চারগুলো লুজন থেকে চীন ও রাশিয়ার লক্ষ্যস্থলগুলোতে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়তে পারবে।

দক্ষিণ চীন সাগরের কিছু দ্বীপপুঞ্জ ও প্রবালপ্রাচীরের মালিকানা নিয়ে চীন ও ফিলিপিন্সের মধ্যে বিরোধ চলছে। প্রায়ই দেশ দু’টির উপকূল রক্ষীরা ওই জলসীমায় পরস্পরের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়াচ্ছে।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাইওয়ান প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘আগুন নিয়ে না খেলার’ জন্য সতর্ক করেছে।

এশিয়ার প্রতিরক্ষা প্রধানগণ, সামরিক কর্মকর্তা ও কূটনীতিকদের উপস্থিতিতে শাংগ্রি-লা সম্মেলনে হেগসেথ বলেন, চীন তাইওয়ানকে দখল করার কোনো উদ্যোগ নিলে তা ‘ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনবে’।

পৃথকভবে শাসিত তাইওয়ান দ্বীপকে ‘ফের একীভূত করার’ প্রত্যয় জানিয়ে আসছে চীন, এক্ষেত্রে প্রয়োজন হলে শক্তি প্রয়োগ করা হবে বলেও নিশ্চিত করেছে তারা।