বুধবার, ০৪ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

রাশিয়ার চার বিমানঘাঁটিতে ইউক্রেনের ভয়াবহ ড্রোন হামলা

যাযাদি ডেস্ক
  ০২ জুন ২০২৫, ১১:২৭
রাশিয়ার চার বিমানঘাঁটিতে ইউক্রেনের ভয়াবহ ড্রোন হামলা
রাশিয়ার একটি সামরিক ইউনিটে ড্রোন হামলার পর ধোঁয়া উঠছে। ছবি: যায়যায়দিন

রাশিয়ার অভ্যন্তরে চারটি বিমানঘাঁটিতে বড় আকারের ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। এতে রাশিয়ার ৪০টিরও বেশি বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেন।

শনিবার (৩১ জুন) রাতে রাশিয়ার মুরমানস্ক, ইরকুটস্ক, ইভানোভো, রিয়াজান অঞ্চলে এ হামলা চালানো হয়। সোমবার ইস্তাম্বুলে ইউক্রেনীয় ও রাশিয়ান কর্মকর্তাদের মধ্যে দ্বিতীয় দফার আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে এমন হামলার ঘটনা ঘটছে।

1

ইউক্রেন সিকিউরিটি সার্ভিসের (এসবিইউ) একটি সূত্রের বরাতে বার্তা সংস্থা সিএনএন জানিয়েছে, ইউক্রেন রাশিয়ার অভ্যন্তরে চারটি বিমানঘাঁটিতে বড় আকারের ড্রোন হামলা চালিয়ে একাধিক যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছে। এসবিইউ সূত্র জানিয়েছে, রাশিয়ার ভেতরে একটি ট্রাক থেকে ড্রোনগুলো উড়ানো হয়।

এসবিইউর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘শত্রুর কৌশলগত বোমারু বিমান রাশিয়ায় গণহারে জ্বলছে।’ এতে বলা হয়, শত্রুপক্ষের বোমারু বিমান ধ্বংসের লক্ষ্যে বড় আকারের বিশেষ অভিযান চালিয়েছে ইউক্রেন। এতে ৪০টিরও বেশি বিমান ভূপাতিত হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।

সাইবেরিয়ার ইরকুটস্ক ওব্লাস্টের বেলায়া বিমানঘাঁটিতে ড্রোন হামলার একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে ইউক্রেন। যেখানে বিস্ফোরণের দৃশ্য দেখা যাচ্ছে এবং সেখান থেকে ধোঁয়া উঠছে।

সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, মুরমানস্কের কাছে ওলেনিয়া বিমানঘাঁটিতে আরও কয়েকটি বিমানে হামলা চালানো হয় বলে স্থানীয় খবরে বলা হয়েছে। রুশ গণমাধ্যম মুরমানস্কে হামলার খবর দিলেও বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কাজ করছে বলে জানিয়েছে। ইরকুটস্কেও হামলার খবর পাওয়া গেছে।

ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ বলছে, গত রাতের এ হামলায় ৪৭২টি ড্রোন এবং সাতটি ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়। এখন পর্যন্ত

এটিই রাশিয়ার সবচেয়ে বড় ড্রোন হামলা বলে মনে করা হচ্ছে। ইউক্রেন বলছে, তারা ৩৮৫টি লক্ষ্যবস্তুতে সফলভাবে আক্রমণ করেছে।

ইউক্রেনের সিকিউরিটি সার্ভিস (এসবিইউ) সূত্রের বরাতে বিবিসি জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির তত্ত্বাবধানে ‘অপারেশন স্পাইডার্স ওয়েব’ নামে এ হামলার পরিকল্পনা দেড় বছর ধরে করা হয়েছে।

সূত্র বলছে, এসবিইউ-এর এফপিভি ড্রোনগুলো প্রথমে রাশিয়ায় গোপনে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে ভ্রাম্যমাণ কাঠের কেবিনের আলাদা আলাদা অংশ পাঠানো। রুশ ভূখণ্ডে পাঠানোর পর ড্রোনগুলো এই কেবিনগুলোর ভেতরে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল, যেগুলো ট্রাকে স্থাপন করা ছিল।

ভিডিওতে দেখা গেছে, হামলার সময় এসব ড্রো একটি ট্রাক থেকে বের হচ্ছে। যেগুলো উড়ে গিয়ে নিকটবর্তী বিমান ঘাঁটিতে আঘাত করতে সক্ষম হয়।

ইউক্রেনের অনুমান, হামলায় রাশিয়ার ক্ষতির পরিমাণ ২ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। যেসব লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানা হয়েছিল তার মধ্যে রয়েছে- ‘বিয়ার’ নামে পরিচিত কৌশলগত বোমারু বিমান ‘টিইউ-৯৫এস’, দূরপাল্লার সুপারসনিক বোমারু বিমান ‘টিইউ-২২এম৩এস’, এ-৫০’র মতো বিমান।

রাশিয়াও আজ সকালে পাঁচটি অঞ্চলের বিমানঘাঁটিতে হামলার কথা স্বীকার করেছে। টেলিগ্রামে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় লিখেছে, মুরমানস্ক, ইরকুটস্ক, ইভানোভো, রিয়াজান ও আমুর অঞ্চলে ইউক্রেন সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে।

তবে সব হামলাই প্রতিহত করা হয়েছে বলে দাবি রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের। এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘ইরকুটস্ক অঞ্চলের বেলায়া এয়ারফিল্ডের নিকটবর্তী অঞ্চল থেকে ড্রোন হামলার ফলে বেশ কয়েকটি বিমানের সরঞ্জামে আগুন ধরে যায়। আগুন এখন নিভিয়ে ফেলা হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।

রাশিয়ার রাষ্ট্র পরিচালিত সংবাদমাধ্যম তাস জানিয়েছে, ড্রোন হামলায় জড়িত বলে ধারণা করা একটি ট্রাকের চালককে আটক করেছে পুলিশ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে