শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

৪ ছেলেকে নিয়ে ট্রেনের নিচে মাথা দিলেন বাবা

যাযাদি ডেস্ক
  ১১ জুন ২০২৫, ১৪:৪১
৪ ছেলেকে নিয়ে ট্রেনের নিচে মাথা দিলেন বাবা
ফাইল ছবি

প্রায় এক ঘণ্টা ধরে রেললাইনের কাছে ফ্লাইওভারের নিচে চার শিশু ছেলেকে নিয়ে অপেক্ষা করেন বাবা।

তখনো সব স্বাভাবিক দেখাচ্ছিল। ট্রেন আসার পর হঠাৎ বাবা লাইনের ওপর চার ছেলেকে নিয়ে দাঁড়িয়ে যান। তিনি শক্ত করে শিশুদের ধরে রাখেন।

1

এ সময় আতঙ্কিত প্রত্যক্ষদর্শীরা চিৎকার করতে থাকেন। শিশুরাও চিৎকার করে বাবার হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তাদের বাবা যেতে দিতে রাজি হয়নি।

এ সময় গোল্ডেন টেম্পল এক্সপ্রেস ট্রেন দ্রুতগতিতে এগিয়ে এসে পাঁচজনকেই পিষে ফেলে। খণ্ড খণ্ড হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান সবাই।

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি মঙ্গলবার দুপুর ১২টা ৫৫ নাগাদ ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা লোকটিকে রেললাইন ধরে হেঁটে যেতে দেখেছেন। তার কাঁধে দুটি শিশু এবং অন্য দুজনের হাত ধরে রেখেছিলেন তিনি।

ট্রেনচালক এ দৃশ্য দেখে বারবার হুইসেল দিয়ে সতর্ক করেন। তবু লোকটি নড়েননি। ছেলেদেরও সরতে দেননি।

ভারতের ফরিদাবাদে ট্রেনের ধাক্কায় নিহত বাবার নাম মনোজ মাহাতো। ৪৫ বছর বয়সী এ ব্যক্তির ছেলেদের বয়স তিন থেকে ৯ বছর।

বিহারের বাসিন্দা মনোজ মাহাতো তার স্ত্রী প্রিয়ার সাথে ঝগড়ার পর বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান বলে অভিযোগ। মাহাতো তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যভিচারের অভিযোগ তুলে প্রায়ই ঝগড়া করতেন।

মঙ্গলবার সকালে তাদের সর্বশেষ ঝগড়ার পর মাহাতো বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। বলে যান, তিনি চার ছেলে - পবন (১০), কারু (৯), মুরলি (৫) এবং ছোটুকে (৩) পার্কে নিয়ে যাচ্ছেন।

পার্কে যাওয়ার পরিবর্তে মাহাতো তাদের রেললাইনে নিয়ে যান। পথে চিপস এবং কোমল পানীয় কিনে খাওয়ান।

দুর্ঘটনার পর পুলিশের একটি দল মৃতদেহগুলো রেললাইন থেকে সরিয়ে নেয়। পুলিশ মাহাতোর পকেটে একটি চিরকুট খুঁজে পায়। সেখানে তার স্ত্রীর ফোন নম্বর লেখা ছিল।

রেলওয়ে পুলিশ অফিসার রাজপাল বলেন, মাহাতো সন্দেহ করেছিলেন তার স্ত্রী অসতী।

এই অবিশ্বাস তার চরম পদক্ষেপের একটি কারণ হতে পারে। খবর পেয়ে মাহাতোর স্ত্রী প্রিয়াকে ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন তিনি মৃতদেহগুলো দেখে অজ্ঞান হয়ে পড়েন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে