রোববার, ১৫ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
ভারতে বিমান বিধ্বস্তে নিহত

চিকিৎসক দম্পতির হাসিমাখা সেলফি: কাঁদছে বিশ্ববাসী

যাযাদি ডেস্ক
  ১৪ জুন ২০২৫, ১৫:৩১
আপডেট  : ১৪ জুন ২০২৫, ১৭:০৪
চিকিৎসক দম্পতির হাসিমাখা সেলফি: কাঁদছে বিশ্ববাসী
প্লেনে তোলা প্রত্যুষ জোশীর পরিবারের শেষ সেলফি। ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

বিমানে চড়ে আকাশে ওড়ার আগে শেষ মুহূর্তে তোলা তিন সন্তানকে নিয়ে চিকিৎসক দম্পতির একটি হাসিমাখা ‘সেলফি’ ওই পরিবারের শেষ স্মৃতি হয়ে রইলো। ভারতের গুজরাটের আহমেদাবাদে বিধ্বস্ত হওয়া এয়ার ইন্ডিয়ার লন্ডনগামী ফ্লাইট এআই১৭১-এ থাকা চিকিৎসক দম্পতি ও তাদের তিন শিশুর সেই সেলফি এখন সবার হৃদয়ে কষ্টের ছায়া ফেলেছে।

ছবিতে দেখা যায়, ডা. প্রত্যুষ জোশী ও ডা. কৌমি ব্যাস প্লেনের এক পাশে পাশাপাশি বসে আছেন। তাদের চোখে-মুখে নতুন জীবনের আশাবাদ। অন্য পাশে বসা তাদের তিন সন্তান, ৮ বছরের মেয়ে মিরায়া আর ৫ বছরের জমজ দুই পুত্র নকুল ও প্রদ্যুত। শিশুদের চোখেমুখে প্লেনে চড়ার আনন্দ, বাবার ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে হাসির চেষ্টা করছে তারা। কিন্তু কে জানতো, এই ছবিই হয়ে উঠবে পরিবারটির শেষ ছবি।

1

রাজস্থানের উদয়পুরের চিকিৎসক দম্পতি লন্ডনে বসবাস শুরু করতে যাচ্ছিলেন। ডা. কৌমি ব্যাস সদ্য নিজের চাকরি ছেড়ে স্বামীর সঙ্গে যোগ দিতে চলেছিলেন। ডা. প্রত্যুষ জোশী আগেই লন্ডনে চিকিৎসা পেশায় যুক্ত ছিলেন। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে নতুন জীবনের সূচনা করতেই তিনি এসেছিলেন ভারতে।

স্বজনরা জানান, দুদিন আগেই তিনি বাঁসওয়ারায় এসেছিলেন। সবার ভালোবাসা আর আশীর্বাদ নিয়ে পরিবারটিকে বিদায় জানানো হয়েছিল আহমেদাবাদ বিমানবন্দর পর্যন্ত। কিন্তু সেই বিদায় যে চিরবিদায় হয়ে উঠবে, তা কল্পনাও করেননি কেউ।

উড্ডয়নের ৩২ সেকেন্ড পরই করুণ পরিণতি

বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা ৩৮ মিনিটে ফ্লাইটটি উড্ডয়ন করে আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে। ৩২ সেকেন্ডের মাথায় উচ্চতা না পেয়ে প্লেনটি মাটির দিকে দ্রুত নেমে আসে।

এক ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে উঠে মেঘানিনগরের আকাশ। যে স্থানে প্লেনটি আছড়ে পড়ে, সেটি ছিল বিজে মেডিকেল কলেজের ছাত্রাবাস। বিস্ফোরণের আগুনে মুহূর্তেই পুড়ে ছাই হয়ে যায় প্লেনের বেশিরভাগ অংশ।

সেই মুহূর্তে এক ক্যান্টিনের ভেতরে লাঞ্চ করছিলেন ছাত্ররা—সেখানেই আছড়ে পড়ে বিমানটি।

একটি হাসি—একটি পরিবার—দেশব্যাপী শোক

এই দুর্ঘটনায় প্লেনের ২৪২ আরোহীর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৪১ জনের। জীবিত আছেন কেবল বিশ্বাস কুমার রমেশ নামে একজন ব্রিটিশ-ভারতীয় যাত্রী, যিনি ভাগ্যক্রমে প্লেন থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছিলেন।

কিন্তু ডা. কৌমি ব্যাস, ডা. প্রত্যুষ জোশী, তাদের সন্তান মিরায়া, নকুল, প্রদ্যুত—আর ফিরবেন না। একটি পরিবারের হাসিমাখা ভবিষ্যৎ ভস্ম হয়ে গেলো চোখের পলকে।

ডা. কৌমির ভাই প্রভুদ্ধ ব্যাস কাঁপা গলায় বলেন, ওরা সবাই স্বপ্ন নিয়ে রওয়ানা দিয়েছিল। আর এখন আমাদের কেবল স্মৃতি রইলো—আর সেই একটি ছবি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে