আন্তর্জাতিক

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির উপদেষ্টা আলি লারিজানি দাবি করেছেন, ইসরায়েল সম্প্রতি তেহরানে যে হামলা চালিয়েছে, তা যুক্তরাষ্ট্রের সম্মতি ও সমর্থন ছাড়া সম্ভব হতো না। তিনি বলেন, “এই হামলা এমন সময় ঘটেছে যখন আমরা মার্কিন প্রেসিডেন্টের অনুরোধে শান্তি আলোচনায় বসেছিলাম। অথচ আলোচনার শেষ পর্যায়ে এসে যুক্তরাষ্ট্র শান্তির বদলে আমাদের উপর শর্ত চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল।”

লারিজানি আরও বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি এই হামলা চালাতে ইসরায়েলকে আমেরিকার পক্ষ থেকেই সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ বিষয়ে আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন।”

তিনি সরাসরি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, “যিনি শান্তির বার্তা দিয়েছেন, সেই তিনিই গোপনে হামলার প্রস্তুতিতে ইসরায়েলকে সহায়তা করেছেন।” এই মন্তব্য মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা ও বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলছে।

লারিজানি আরও জানান, “ইসরায়েল মনে করেছিল তাদের সামরিক হামলা ইরানকে কৌশলগতভাবে পেছনে সরিয়ে দেবে। কিন্তু আমরা তাদের ভুল প্রমাণ করেছি। আমাদের সামরিক কমান্ডারদের হত্যার পর মাত্র ১২ ঘণ্টার মধ্যে তাদের বিকল্প নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।”

ইরান এই ঘটনার পর নিজেদের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা ও নেতৃত্বে দ্রুত সাড়া দেওয়ার কথা তুলে ধরে দেখিয়েছে যে তারা যুদ্ধাবস্থায়ও শক্ত অবস্থানে রয়েছে।

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত জোট বরাবরের মতোই দৃঢ়, তবে শান্তি আলোচনার পটভূমিতে গোপনে হামলা চালানো হলে তা আন্তর্জাতিক কূটনীতির জন্য একটি গুরুতর আস্থাহানির সংকেত। একই সঙ্গে এটি ইরানকে আরও আক্রমণাত্মক কৌশলের দিকে ঠেলে দিতে পারে।

ইরান বারবার বলে এসেছে, তারা সরাসরি যুদ্ধ চায় না, কিন্তু নিজেদের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেবে না।

আলি লারিজানির মন্তব্য ইঙ্গিত দিচ্ছে, ইরান এই হামলার ঘটনাকে কেবল সামরিক নয়, কূটনৈতিক বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবেও দেখছে। ফলে শুধু যুদ্ধের ময়দানেই নয়, কূটনৈতিক মহলেও উত্তেজনার নতুন ঢেউ দেখা যাচ্ছে।