পবিত্র হজের মৌসুমে কাবাঘর তাওয়াফ, আরাফাতের ময়দানে অবস্থান ও মিনার উদ্দেশে যাত্রা কেবল একটি আনুষ্ঠানিক ইবাদত নয়, বরং তা হলো দয়াময় আল্লাহর অফুরন্ত রহমতের বারিধারায় ভিজে যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ। এই সময় আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের উপর তিন ধরণের বিশেষ রহমত বর্ষণ করেন বলে জানিয়েছেন ইসলামি চিন্তাবিদ ও আলেমরা।
১. সাধারণ রহমত – সকলের জন্য উন্মুক্ত
হজের মৌসুমে মক্কা ও এর পবিত্র প্রাঙ্গণে এমন কিছু মুহূর্ত ও স্থান রয়েছে, যেখানে মুসলিম—হোক সে হজ পালনকারী, তীর্থযাত্রী বা স্থানীয়—সবার জন্য আল্লাহর রহমত উন্মুক্ত থাকে। হাদীস অনুযায়ী, এই দিনগুলোতে সৎ আমল ও দোয়া কবুলের সম্ভাবনা বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। হজ পালনে সক্ষম না হলেও মুসলিমরা এই দিনগুলোর ফজিলত লাভে বিভিন্ন ইবাদতের মাধ্যমে অংশ নিতে পারেন।
২. বিশেষ রহমত – হজ পালনকারীদের জন্য
যারা হজ পালনে সরাসরি অংশ নেন, তাদের জন্য রয়েছে অতিরিক্ত রহমত ও প্রতিদান। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "যে ব্যক্তি হজ করল এবং অশ্লীলতা ও গুনাহ থেকে বিরত থাকল, সে মায়ের গর্ভ থেকে জন্ম নেয়ার দিনের মতো নিষ্পাপ হয়ে ফিরে আসে" (বুখারি)। আরাফাতের ময়দানে লাখো হাজির কান্না, তওবা ও আল্লাহর প্রতি আকুতি দেখে ফেরেশতারাও বিস্মিত হন।
৩. ক্ষমার রহমত – পাপমুক্তির প্রতিশ্রুতি
হজের দিনগুলোতে বিশেষভাবে আরাফা দিবসে আল্লাহ তাঁর বান্দাদের পাপ মাফ করে দেন। হাদীসে এসেছে, "আরাফার দিন আল্লাহ যত সংখ্যক বান্দাকে ক্ষমা করেন, এত অধিকসংখ্যক বান্দাকে অন্য কোনো দিনে ক্ষমা করেন না" (মুসলিম)। এই রহমত শুধু তাৎক্ষণিক ক্ষমা নয়, বরং আখিরাতে মুক্তির আশা নিয়েও হাজিদের হৃদয়ে আশার আলো জ্বেলে দেয়।
হজ শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হজের মূল শিক্ষা হলো আত্মশুদ্ধি, ভ্রাতৃত্ববোধ, ত্যাগ ও ধৈর্য। হজ শেষে একজন মুমিন যেন তার জীবনে বাস্তবেও সেই শিক্ষাগুলোকে বাস্তবায়ন করে, সেটিই হজের সফলতা।