ঈদের আগে নতুন টাকার চাহিদা একটু বেশিই থাকে। এবার ঈদুল আজহার আগে নতুন নকশার কিছু নোট বাজারে আসায় মানুষের আকর্ষণ ও চাহিদা অন্যবারের চেয়ে কিছুটা বেশি।
কিন্তু কোনো ব্যাংকের শাখাতেই নতুন নোট পাওয়া যাচ্ছে না।
আবার বাংলাদেশ ব্যাংকের নাকের ডগায় ফুটপাতে অতিরিক্ত দামে বিক্রি হচ্ছে চকচকে ২০, ৫০ ও এক হাজার টাকার নোট।
এছাড়াও রাজধানীর গুলিস্তান কমপ্লেক্সের নিচে চকচকে নোটের পসরা বসিয়ে প্রকাশ্যেই চলছে নতুন নোটের রমরমা ব্যবসা।
যেখানে কোনো ব্যাংকেই নতুন নোটের দেখা মিলছে না সেখানে ফুটপাতে এত নোট এলো কীভাবে- তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর এই প্রথম ডিজাইন পরিবর্তন করে টাকা ছাপিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন নকশা ও সিরিজের ১০০০, ৫০ ও ২০ টাকা মূল্যমানের ব্যাংক নোট গত রোববার প্রথমবারের মতো বাজারে ছাড়ে।
প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিস থেকে এবং পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্য অফিসগুলো থেকে এই নোটগুলো ইস্যু করা হয়।
রোববার মোট ১১ ব্যাংকের মাধ্যমে বাজারে ছাড়া হয় প্রায় ২০০ কোটি টাকা।
তবে গ্রাহকরা তা হাতে পাওয়ার কথা ছিল সোমবার থেকে। এসব ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে- সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, ডাচ বাংলা ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, আল আরাফা ইসলামী ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক এবং ইস্টার্ন ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, এসব ব্যাংকের লোকাল অফিসকে নতুন টাকা দেওয়া হয়েছে।
তবে কোন ব্যাংক কোন শাখার মাধ্যমে নতুন টাকা বিতরণ করবে, তা নিজেরাই ঠিক করবে ব্যাংকগুলো।
কিন্তু সোমবার থেকে কোনো এসব ব্যাংকের প্রধান শাখাগুলোতে গিয়ে মিলেনি নতুন টাকা। অথচ সেদিন থেকেই ফুটপাতে অবাধে বিক্রি হচ্ছে এসব নোট।
মঙ্গল ও বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের উত্তর গেটে দেখা যায়, ফড়িয়ারা নতুন এক হাজার, ৫০ ও ২০ টাকার নোটের পসরা সাজিয়ে বসে আছেন। গ্রাহকদেরও ভিড় লেগে আছে এসব কথিত টাকার দোকানে।
অবাক করার বিষয় হলো, প্রতি বিশ টাকার নোট বিক্রি হচ্ছে প্রায় দ্বিগুণ দামে। এক বান্ডিল নোট অর্থাৎ ১০০টি নোট বিক্রি হচ্ছে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকায়।
আর ১০-২০টি নোট নিলে বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা করে। আর নতুন নকশার ৫০ টাকার নোটের বান্ডিল বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ছয় থেকে সাত হাজার টাকায়।
অর্থাৎ পাঁচ হাজার টাকা কিনতে হচ্ছে সাত হাজার টাকায়। আর ১০-২০টি নোট কিনতে গেলে দাম নিচ্ছে প্রতি নোট ৭০-৮০ টাকা করে।
এবিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, আমাদের দায়িত্ব বাংলাদেশ ব্যাংকের ভেতরেই এর বাইরে আমরা কিছু করতে পারি না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বাইরে টাকা বিক্রি হলে এর দায়িত্ব প্রশাসনের। যদি বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তা এসব কাজে জড়িত থাকে আমাদের একটু জানালেই আমরা ব্যবস্থা নেব। আমরাও চাই এসব বন্ধ হোক।