একটি জাতীয় দৈনিকে প্রথম পাতায় বড় আকারে এক শিশুকে দড়ি বেঁধে পুলিশ ভ্যানে তুলছে এমন একটি ছবি প্রকাশিত হয়। এর পর এ নিয়ে দেশবিদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। যারা প্রেক্ষিতে বিশিষ্ট আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক বিষটি হাইকোর্টে দৃষ্টিতে আনেন। তখন হাইকোর্ট উপরোক্ত মন্তব্য করেন।
জানা যায়, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গ্রেফতার ১৭ বছরের শিক্ষার্থীকে রিমান্ডে নেওয়ার ঘটনায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।
রাষ্ট্রপক্ষে থাকা অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদকে উদ্দেশ করে আদালত বলেছেন, ‘আপনার বাচ্চা হলে কী করতেন? ওই শিশুর বাবা–মাকে খুঁজে বের করে জামিনের বিষয়ে বিচারিক আদালতে আবেদন করতে বলেন। সম্ভব হলে আজই (রোববার) দিয়ে দেন।
আইন লঙ্ঘন করে ওই শিশুকে দড়ি বেঁধে পুলিশ ভ্যানে তোলার ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। পরে জনস্বার্থে রিট করা হয়।
রিটটি বিচারপতি মোহাম্মদ খুরশিদ আলম সরকার ও বিচারপতি এসএম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানির জন্য উপস্থাপন করেন আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক।
শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ বলেন, ‘ওই শিশুটিকে রিমান্ডে নেওয়া হবে না। তার পরিবার জামিন আবেদন নিয়ে গেলে তা বিবেচনা করা হবে। আর শিশু আইনে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
হাইকোর্ট বলেন, ‘গণমাধ্যমে দেখলাম সব ডকুমেন্টস দেখিয়েছে যে, ছেলেটির বয়স ১৭। কিন্তু তা ম্যাজিস্ট্রেট বিবেচনা করেনি। একটা কাজ করে তা হালাল করার জন্য জেদাজেদি করবেন? বিষয়গুলো যেন এমন না হয়।’
আদালত থেকে বের হয়ে আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক বলেন, ‘একজন শিশুকে দড়ি বেঁধে পুলিশ ভ্যানে তুলছে, বিভিন্ন পত্রিকায় এটি দেখে আমরা বিচারপতিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলাম। তখন আদালত বলেছেন, পিটিশন আকারে নিয়ে যেতে। পিটিশন নিয়ে গেলাম। আজকে আদালত মৌখিক আদেশ দিয়েছেন, কাল সোমবার রিটটি শুনানির জন্য তালিকায় আসবে।’
অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোর্শেদ বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, সে শিশু। তাকে রিমান্ডে নিতে পারে না। তার বাবা–মা হেফাজতে দিতে আবেদন করলে বিবেচনা করতে বলেছেন হাইকোর্ট।’
এদিকে ঢাকা কলেজের একাদশ শ্রেণির ওই শিক্ষার্থীর রিমান্ড আদালত বাতিল করেছেন বলে জানা গেছে।
সম্প্রতি রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার করা নাশকতার মামলায় গতকাল শনিবার তাকে সাত দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়েছিল।
তবে বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টে রিট হওয়ার পর ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করে তদন্তকারী কর্মকর্তা রিমান্ড বাতিলের আবেদন করেন। এতে আদালত অভিযুক্তের বয়স নির্ধারণ বিষয়ে শুনানি ও আদেশের জন্য সংশ্লিষ্ট শিশু আদালতে পাঠান। পরে তাকে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়।
যাযাদি/ এস