পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, কেরানীগঞ্জে আয়োজিত হয় এক ব্যতিক্রমধর্মী মানবিক ও ধর্মীয় কর্মসূচি। বন্দীদের মাঝে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে আয়োজন করা হয় বস্ত্র বিতরণ, পরিচ্ছন্নতা অভিযান এবং কোরআন তেলাওয়াত, আযান ও সিরাত কুইজ প্রতিযোগিতা।
ঈদের আগে কারাগারের বিভিন্ন সেল ও চলাচলের স্থানসমূহে পরিচালিত হয় পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম।
এ সময় কারা কর্তৃপক্ষ বলেন, “পরিচ্ছন্ন পরিবেশ মানসিক স্বস্তি আনে। বন্দীরাও ঈদ উদযাপনের আগে একটি সুন্দর পরিবেশ পাওয়ার অধিকার রাখে।”
পরবর্তীতে দুস্থ ও অসহায় বন্দীদের মাঝে ঈদের নতুন পোশাক বিতরণ করা হয়।
নতুন পোশাক পেয়ে অনেক বন্দী আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। একজন অসহায় বন্দী বলেন, “ঈদকে ঘিরে কারা কর্তৃপক্ষ আমাদের নতুন কাপড় দিয়েছে—যা আমাদের কল্পনার বাইরে ছিল।”
তিনি আরও বলেন, “কারা কর্তৃপক্ষ এখন বন্দীদের জন্য ইতিবাচক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আগের মতো হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে না।”
সিনিয়র জেল সুপার সুরাইয়া আক্তার বলেন, “কারা মহাপরিদর্শকের দিকনির্দেশনা ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি অনুসরণ করে আমরা বন্দীদের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। কারাগারকে একটি প্রকৃত সংশোধনাগারে রূপান্তর করার আপ্রাণ চেষ্টা করছি।”
জেলার একে এম মাসুম বলেন, “বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসব ও জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলো উপলক্ষে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বন্দীদের মাঝেও যেন উৎসবের আনন্দ পৌঁছে দেওয়া যায়, সেই প্রচেষ্টা আমরা চালিয়ে যাচ্ছি। তারই ধারাবাহিকতায় পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে দুস্থ ও অসহায় বন্দীদের মাঝে বস্ত্র বিতরণ করেছি এবং পুরো কারাগারে পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করেছি।”
এছাড়াও, ১৫ মে ২০২৫ তারিখ থেকে শুরু হয়ে ঈদ উপলক্ষে কারাগারে আয়োজিত হয় কোরআন তেলাওয়াত, আযান ও সিরাত কুইজ প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতায় মোট ১১৫ জন বন্দী অংশগ্রহণ করেন।
প্রতিযোগিতায় বিজয়ীরা হলেন— কোরআন তেলাওয়াত প্রতিযোগিতা: ১ম: হাফেজ মোঃ হাসান,২য়: হাফেজ আবু বক্কর,৩য়: হাফেজ মোঃ ইস্রাফিল,আযান প্রতিযোগিতা: ১ম: আব্দুল্লাহ,২য়: হাফেজ মোঃ ইস্রাফিল,৩য়: আবুল হাসেম। সিরাত কুইজ প্রতিযোগিতা:১ম: শহিদুল ইসলাম,২য়: আল আমিন,৩য়: ইব্রাহিম।
সুশীল সমাজ মনে করে, এ ধরনের উদ্যোগ কারাবন্দীদের মাঝে আশার আলো জাগায়। সমাজে মানবিক মূল্যবোধ, সহানুভূতি ও সংশোধনের চর্চা এমন আয়োজনের মাধ্যমেই বিকশিত হয়।