শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে হবে : মির্জা ফখরুল

যাযাদি ডেস্ক
  ১৪ মার্চ ২০২৩, ১৪:০৫

বলা হয়েছিল কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রগুলো চালু হলে বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ কমবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, দাম কমেনি বরং মানুষের উপর চাপ বাড়ছে। জানুয়ারি মাসে খুচরায় দুই দফায় ১০% বাড়ানো হয়েছে বিদ্যুতের দাম। সব মিলিয়ে গত ১৪ বছরে বিদ্যুতের নাম খুচরায় ১২ বার এবং পাইকারিতে ১১ বার বাড়ানো হয়েছে। পাওয়ার সেলের হিসেবেও চুক্তির সময় যে নামে কেনার আশা ছিল তার চেয়ে এখন দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। ২০১২ সনে রামপাল প্রতিষ্ঠার সময় বলা হয়েছিল ইউনিট প্রতি খরচ পড়বে সাড়ে সাত থেকে আট টাকা। কিন্তু উৎপাদনে আসার পর এখন ব্যয় দাঁড়াচ্ছে ১৪ টাকারও বেশি। পায়রা থেকে নির্ধারিত ছিল ইউনিট প্রতি ছয় টাকার মত, এখন করলার দাম বাড়ায় প্রতি ইউনিট ১৮ টাকা পড়তে পারে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, অপরিকল্পিতভাবে চাহিদার অতিরিক্ত বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমোদন, অযোগ্য কোম্পানিকে রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রকল্প প্রদান, প্রতিযোগিতা ছাড়া বিনা টেন্ডারে অতিরিক্ত দরে বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি এবং স্বল্প মেয়াদের রেন্টাল ও কুইকরেন্টালগুলোর মেয়াদ বাড়িয়ে বিদ্যুৎ খাতে বছরের পর বছর খরচ বাড়ানো হয়েছে। সরকার পরিণাম না ভেবে দেশের স্বার্থবিরোধী প্রাইভেট সেক্টরেও যৌথ মালিকানার নামে একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের আনন্দে বিভোর ছিল, এখনো আছে। এখন এক শ্রেণীর ক্ষমতাবান ব্যক্তি ও সরকারি কর্তাদের পৌষ মাস। যত চুক্তি তত লাভ। কুইক রেন্টাল ও আইপিপি চুক্তিগুলো এমনভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে, যাতে সরকার ঘনিষ্ঠ অলিগার্কদের কৌশলে অবৈধ ও অনৈতিক আর্থিক সুবিধা পাইয়ে দেয়া যায়। সরকার বিদ্যুৎ সেক্টরকে দুর্নীতির প্রধান খাত হিসেবে বেছে নিয়েছে। গত ১৪ বছরে আওয়ামী সরকারের শাসনামলে দেশের সমগ্র বিদ্যুৎ খাতে কী ভয়াবহ দুর্নীতি, লুট ও অব্যবস্থাপনা হয়েছে, যার কুফল এখন সমগ্র দেশবাসীকে ভোগ করতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের বিদ্যুৎ উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনা নীতি যখন সম্পূর্ণ মুখ থুবড়ে পড়েছে এবং দেশকে একটি ভয়াবহ অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিয়েছে, এরই মধ্যে ভারতের আদানি পাওয়ারের সাথে সরকারের আরেকটি একপেশে ও দেশের জন্য অত্যাধিক ক্ষতিকর চুক্তি সম্পন্ন হলো বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে আদানি গ্রুপের সাথে জনস্বার্থ বিরোধী বিদ্যুৎ আমদানি ও সব রেন্টাল চুক্তি বাতিলের দাবি জানান ফখরুল।

পিডিবির সূত্র অনুযায়ী, পায়রা থেকে গত অর্থ বছরে পিডিবি প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ ১৪ টাকা ৭৯ পয়সায় কিনেছে। অথচ এর আগের বছর বিদ্যুৎ পাওয়া গিয়েছিল ছয় টাকায়। আদানির আট থেকে নয় টাকায় বিদ্যুৎ পাওয়ার কথা। কিন্তু এখন সেটা ১৫ টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে।

তিনি বলেন, গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে হবে। দুর্নীতিতে আকণ্ঠ নিমজ্জিত বর্তমান সরকারকে দুর্বার গণআন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করে একটি নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পরিচালনায় অবাধ ও গ্রহণযোগ্য সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে প্রকৃত অর্থে জনগণের একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

দলমত জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রত্যেককে চলমান গণআন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার উদাত্ত আহবান জানান মির্জা ফখরুল।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাঈল জবিউল্যাহ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন। এছাড়াও জেড খান রিয়াজ উদ্দীন নসু, সাঈদ সোহরাব, বাবুল আহমেদ, বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার, মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবীর খান ও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মো: হানিফ।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে