মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

আ: লীগের প্রার্থীর অভিযোগ : পটিয়া থানার ওসি (তদন্ত) সোলাইমানকে প্রত্যাহার

পটিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
  ০৩ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:১৩
আ: লীগের প্রার্থীর অভিযোগ : পটিয়া থানার ওসি (তদন্ত) সোলাইমানকে প্রত্যাহার

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পটিয়া-১২ সংসদীয় আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সামশুল হক চৌধুরীর পক্ষে কাজ করছেন এমন পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে পটিয়া থানার ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ সোলাইমানকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর আগে তার বিরুদ্ধে সিইসিতে অভিযোগ করেন আসনটির নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী।

মঙ্গলবার (২ জানুয়ারী) রাতে ইন্সপেক্টর সোলাইমানকে প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) আবু তৈয়ব মো. আরিফ হোসেন। তিনি বলেন, তিন দিন আগে ইন্সপেক্টর সোলাইমান সহ পটিয়া থানার আরো কয়েকজন উপপরিদর্শক ও সহকারী উপপরিদর্শকের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী সিইসিতে অভিযোগ দিয়েছেন। তাই মূলত তাদের এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রত্যাহার করা হয়েছে। আমরা চাই কারও জন্য নির্বাচন যেন প্রশ্নবিদ্ধ না হোক। একজন প্রার্থী যেহেতু অভিযোগ করছে তাই মঙ্গলবার রাতে তাকে ক্লোজড করা হয়েছে। আমরা আবার সময়মতো তাকে অন্য কোথাও পদায়ন করব। তার আগে ঐ থানার ওসি নেজাম উদ্দিনসহ আরো এক উপ-পরিদর্শক ও একজন সহকারী উপ-পরিদর্শককে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।

এর আগে, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১২ আসনের নৌকার প্রার্থী মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-ওসিসহ ৯ পুলিশ কর্মকর্তা প্রত্যাহার চেয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও একাদশ জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর পক্ষ হয়ে ওই পুলিশ কর্মকর্তারা হয়রানির করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। গত ২৬ ডিসেম্বর মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীর আবেদনটি ইসির প্রাপ্তি ও জারি শাখায় জমা দিয়েছেন। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে জরুরিভিত্তিতে পটিয়া থানার ওসি (তদন্ত), উপপরিদর্শক (এসআই) ও সহকারী উপ-পরিদর্শকদের (এএসআই) বদলি সংক্রান্ত আবেদনে তিনি উল্লেখ করেছেন, চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে আমি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য প্রার্থী। আমার আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য সামশুল হক মহান জাতীয় সংসদের হুইপ এবং বর্তমানে স্বতন্ত্র প্রার্থী। পটিয়া থানা থেকে সদ্য প্রত্যাহার হওয়া ওসি স্থানীয় এমপির দূর সম্পর্কিত আত্মীয় নেজাম উদ্দিন চলে গেলেও বর্তমানে তার অনুগত এসআই ও এএসআই এখনো স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে ভূমিকা রাখছেন।

তারা হলেন, পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. সোলাইমান, এসআই সনজয় ঘোষ, মো. আসাদুর রহমান, রতন কান্তি দে, আকরাম হোসেন সুমন, শিমুল চন্দ্ৰ দাস, জিয়া উদ্দিন, এএসআই মো. ফয়েজ আহমদ, এএসআই অনুপ কুমার। তারা স্বতন্ত্র প্রার্থী সামশুল হক চৌধুরীর পক্ষ নিয়ে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধিদের ঘরে ঘরে গিয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানি করছেন। পটিয়া থানা থেকে প্রত্যাহার হওয়া নেজাম উদ্দিনের কথা মত এসব অফিসাররা নৌকার সমর্থিত লোকজনকে হুমকি ধমকি দিয়ে যাচ্ছে।

গত ২১ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার গভীর রাতে যুবলীগ নেতা ডিএম জমির উদ্দিনকে আইসিটি মামলায় জামিন থাকা স্বত্ত্বেও এস আই সঞ্জয় কুমার ঘোষের নেতৃত্বে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরবর্তীতে বাদী আপসনামা দিয়ে মুক্ত হলেও আদালত হতে বের হওয়ার পূর্ব মুহূর্তে ওসি তদন্ত মো. সোলাইমানের নির্দেশে সম্প্রতি কাশিয়াইশে একটি ঘটনার মামলায় এজাহারভুক্ত না হওয়া স্বত্বেও এসআই সঞ্জয় কুমার ঘোষের নেতৃত্বে জমির উদ্দিনকে পুনরায় আদালত চত্বর থেকে গ্রেপ্তার দেখায়। মিথ্যা একটি মামলায় কুসুমপুরা ইউনিয়নের নৌকার সমর্থক আবদুল মান্নানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ার জন্য ওসি তদন্ত মো. সোলাইমান, এসআই মো. আসাদুর রহমান, রতন কান্তি দে, আকরাম হোসেন সুমন, শিমুল চন্দ্র দাস, সঞ্জয় কুমার ঘোষ, জিয়া উদ্দিন, এএসআই মো. ফয়েজ আহমদ, এএসআই অনুপ কুমারকে বদলী করা জরুরি।

গত ৭ ডিসেম্বর হুইপ সামশুল হকের পক্ষে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ এনে ওসি নেজাম উদ্দিনকে প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়েছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নৌকা প্রার্থী মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী। সম্প্রতি স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে সেই ওসি নেজাম উদ্দিনকে একমাসের মাথায় প্রত্যাহার করা হয়েছে।

পটিয়া থানার ওসি জসীম উদ্দিন বলেন, মঙ্গলবার রাতে ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ সোলাইমানকে পটিয়া থানা থেকে প্রত্যাহারের আদেশটি আসে। রাতেই তিনি থানা ছেড়ে জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্তিতে চলে গেছেন।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
Nagad

উপরে