রোববার, ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২

উত্তরের মানুষ বৈষম্য মেনে নেবে না: সারজিস আলম

ফেসবুক পোস্ট
যাযাদি ডেস্ক
  ১৪ জুন ২০২৫, ১৯:২৭
উত্তরের মানুষ বৈষম্য মেনে নেবে না: সারজিস আলম
সারজিস আলম। ছবি : সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম প্রতি বছর ঈদযাত্রায় দীর্ঘ যানজটে উত্তরাঞ্চলের মানুষের ভোগান্তি নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি আগামীতে এই অঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ লাগবে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।

শনিবার (১৪ জুন) সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে তিনি এই আহ্বান জানান।

1

সারজিস লিখেছেন, ‘শুধু সংকীর্ণ টোল প্লাজার কারণে উত্তরবঙ্গের মানুষ যমুনা সেতুর পূর্বে ২০ কিলোমিটারের অধিক রাস্তা জ্যামে আটকে থাকে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলে যায় সেই জ্যামে। তারপরও কারও টনক নড়ে না।’

তিনি বলেন, ‘ঢাকা থেকে রংপুর চার লেনের মহাসড়কের কাজ চলছে সেই এক দশক ধরে। এখনো শেষ হয়নি। গোবিন্দগঞ্জ আর পলাশবাড়িতে রাস্তার অর্ধেক কাজ হয়ে পড়ে থাকার কারণে ঘণ্টার অধিক সময় ধরে সেখানেও জ্যামে আটকে থাকতে হয়েছে। ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক এখনো চার লেন হয়নি।’

এনসিপির উত্তরাঞ্চলের এই মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, ‘ঢাকা থেকে দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় রেলে যেতে এখনো ১২ থেকে ১৫ ঘণ্টা সময় লাগছে। সাধারণত ঢাকা-বগুড়া-রংপুর হয়ে ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় যাওয়ার কথা। অথচ তাদের রাজশাহী-নওগাঁ-নাটোর হয়ে ট্রেনে করে প্রায় ২০০ কিলোমিটার অধিক রাস্তা ঘুরে যেতে হয়। যেখানে বগুড়া হয়ে রংপুর দিয়ে ট্রেনলাইন থাকলে এই ২০০ কিলোমিটার পথ ঘুরতে হতো না।’

এই তরুণ বলেন, ‘এই ঈদে ঢাকা থেকে পঞ্চগড় যেতে আমার সময় লেগেছে ১৭ ঘণ্টা। আসতে সময় লেগেছে ১৫ ঘণ্টা। কারও ২০ ঘণ্টাও পেরিয়ে গেছে। ২০২৫ সালে দাঁড়িয়ে ঢাকা থেকে দেশের এক প্রান্তে যেতে যদি এত দীর্ঘ সময় লাগে তাহলে উন্নয়নের গল্প খুবই অপ্রাসঙ্গিক।’

তিনি বলেন, ‘যমুনা সেতুতে ব্যয়কৃত অর্থ আজ থেকে ৬-৭ বছর আগেই টোলের মাধ্যমে আদায় হয়েছে। তারপরও টোল প্লাজাকেন্দ্রিক এই ভোগান্তির নিরসন হয়নি। হয় টোল আদায় এখন বন্ধ করা উচিত, না হলে টোল সংগ্রহের বুথ অন্তত তিনগুণ বৃদ্ধি করে কৃত্রিম জ্যাম তৈরির এই ক্ষেত্রগুলো বন্ধ করা উচিত। মানুষের ভোগান্তি লাঘব করা উচিত।’

‘উত্তরের জনপদগুলো থেকে আওয়ামী লীগ শুধু শোষণ করেছে, দেওয়ার বেলা ছিল পক্ষপাতদুষ্ট’- লিখেছেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘আগামীর বাংলাদেশে উত্তরের জনপদগুলো এই বৈষম্য আর মেনে নেবে না। ঢাকা থেকে বিভাগীয় শহরগুলোর রাস্তা এক্সপ্রেসওয়ে অথবা চার লেন করতে হবে। আন্তঃবিভাগীয় রেলের লাইনগুলো সর্বনিম্ন সময়ে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে হবে। আন্তঃনগর ট্রেনের নছিমনের মতো বগিগুলো পরিবর্তন করে মানসম্মত, ভ্রমণ উপযোগী বগি সরবরাহ করতে হবে।’

এনসিপির এই নেতা আরও লিখেছেন, ‘একটা দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য ওই দেশের সকল অঞ্চলের অবকাঠামোগত উন্নয়নের ভারসাম্য প্রয়োজন। আগামীতে উত্তরবঙ্গের মানুষের সেই উন্নয়ন ভারসাম্যে সজাগ দৃষ্টি থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের গণমানুষ, আপনারা আপনাদের গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলো তুলে ধরুন। এই সমস্যার সমাধানই হতে হবে উত্তরবঙ্গকে নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ইশতেহার। যারা লুটপাট, চাঁদাবাজি, ক্ষমতার অপব্যবহার, দখলদারত্ব বাদ দিয়ে জনগণের জন্য কাজ করবে তাদেরই ভোট দেবেন। যারা করবে না তারা যে দলেরই হোক না কেন তাদের বর্জন করবেন।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে