শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

নভেম্বরে পুঁজিবাজারের লেনদেন কমেছে ৬ শতাংশ

যাযাদি ডেস্ক
  ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:১৩
নভেম্বরে পুঁজিবাজারের লেনদেন কমেছে ৬ শতাংশ

এক বছরেরও বেশি সময় ধরে দেশের পুঁজিবাজারের সূচক প্রায় স্থবির হয়ে আছে। বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারদর ফ্লোর প্রাইসে আটকে আছে। সূচকের পাশাপাশি ধারাবাহিকভাবে পুঁজিবাজারে লেনদেনের পরিমাণ কমছে। সদ্যসমাপ্ত নভেম্বরে আগের মাসের তুলনায় পুঁজিবাজারের দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে ৬ শতাংশ। মূলত বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ কমার কারণে পুঁজিবাজারে লেনদেন কমে আসছে। ইবিএল সিকিউরিটিজের মাসিক পুঁজিবাজার পর্যালোচনায় এ তথ্য উঠে এসেছে।

গত এক বছরের বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০২২ সালের নভেম্বরে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দৈনিক গড়ে ৭ কোটি ২০ লাখ ডলারের লেনদেন হয়েছে। এর পরের মাসে এ লেনদেনের পরিমাণ কমে ৩ কোটি ৫০ লাখ ডলারে দাঁড়িয়েছে। এ বছরের জানুয়ারিতে দৈনিক গড় লেনদেন কিছুটা বেড়ে ৪ কোটি ৯০ লাখ ডলারে দাঁড়ায়। গত ফেব্রæয়ারিতে এটি কমে দাঁড়ায় ৪ কোটি ৩০ লাখ ডলারে। এ বছরের মার্চে দৈনিক গড় লেনদেন ছিল ৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার। এরপরের মাসে এটি কিছুটা বেড়ে ৫ কোটি ৪০ লাখ ডলার হয়। গত মে মাসে দৈনিক গড়ে ৮ কোটি ২০ লাখ ডলারের লেনদেন হয়েছে। এ বছরের জুনে এটি কমে দাঁড়ায় ৭ কোটি ৬০ লাখ ডলারে। জুলাইয়ে এটি আরো কমে ৭ কোটি ২০ লাখ ডলারে দাঁড়ায়। আগস্টে দৈনিক গড় লেনদেন ৪ কোটি ডলারে নেমে আসে। গত সেপ্টেম্বরে এটি কিছুটা বেড়ে ৫ কোটি ৭০ লাখ ডলারে দাঁড়িয়েছিল। অক্টোবরে ৪ কোটি ২০ লাখ ডলার লেনদেন হয়েছে। সর্বশেষ এ বছরের নভেম্বরে ডিএসইতে দৈনিক গড়ে ৩ কোটি ৯০ লাখ ডলারের লেনদেন হয়েছে। গত বছরের নভেম্বরে ডিএসইর সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স ছিল ৬ হাজার ২৭৯ পয়েন্ট। এ বছরের নভেম্বর শেষে সূচকটির অবস্থান ছিল ৬ হাজার ২২৩ পয়েন্টে।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচনকে ঘিরে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কা ও সামষ্টিক অর্থনীতির সংকটের প্রভাব গত মাসেও পুঁজিবাজারে পরিলক্ষিত হয়েছে। পাশাপাশি ফ্লোর প্রাইসের কারণেও অনেক শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ নেই। এসব কারণেই পুঁজিবাজারে লেনদেন ক্রমেই কমছে।

এদিকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহে সূচক ও লেনদেন কমেছে। পুঁজিবাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহে ডিএসইএক্স আগের সপ্তাহের তুলনায় দশমিক ১৭ শতাংশ কমে ৬ হাজার ২৩৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল ৬ হাজার ২৫৭ পয়েন্টে। নির্বাচিত কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ সপ্তাহের ব্যবধানে দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ বেড়ে ২ হাজার ১০৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল ২ হাজার ১০৭ পয়েন্টে। শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ৩৫৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল ১ হাজার ৩৫২ পয়েন্টে। ডিএসইতে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া মোট ৪০৪টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৬৩টির, কমেছে ৯২টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২২২টির। এছাড়া লেনদেন হয়নি ২৭টির।

ডিএসইতে গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে ১ হাজার ৯০৭ কোটি ৯১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যেখানে আগের সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে লেনদেন ছিল ২ হাজার ২ কোটি ১০ লাখ টাকা। সে হিসাবে এক্সচেঞ্জটিতে সাপ্তাহিক লেনদেন কমেছে ৪ দশমিক ৭০ শতাংশ। গত সপ্তাহে ডিএসইতে দৈনিক গড়ে ৩৮১ কোটি ৫৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যেখানে আগের সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন ছিল ৪০০ কোটি ৪২ লাখ টাকা।

অন্যদিকে দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) গত সপ্তাহে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ কমে ১৮ হাজার ৪৮০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের সপ্তাহে যা ছিল ১৮ হাজার ৪৯৬ পয়েন্টে। সিএসসিএক্স সূচকটি গত সপ্তাহ শেষে দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ কমে ১১ হাজার ৫১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের সপ্তাহ শেষে সূচকটির অবস্থান ছিল ১১ হাজার ৬১ পয়েন্টে। সিএসইতে গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে ৩৩ কোটি ৫৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আগের সপ্তাহে যেখানে লেনদেন হয়েছিল ৩৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। এ সময়ে সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৭৫টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৫২টির, কমেছে ৬৭টির, অপরিবর্তিত রয়েছে ১৫৬টির।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে