সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

এশিয়া কাপ থেকে সরে গেল ভারত

যাযাদি ডেস্ক
  ১৯ মে ২০২৫, ১১:৩২
এশিয়া কাপ থেকে সরে গেল ভারত
ছবি: সংগৃহীত

ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে সাম্প্রতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে ভারতের ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল-এর (এএসিসি) সব ইভেন্ট থেকে আপাতত নিজেদের সরিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সূত্রের বরাত দিয়ে দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিসিসিআই ইতিমধ্যে এএসিসিকে জানিয়ে দিয়েছে, তারা আগামী মাসে শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠেয় মেয়েদের 'ইমার্জিং টিমস এশিয়া কাপ' ও সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য পুরুষদের এশিয়া কাপ থেকেও নিজেদের প্রত্যাহার করে নিচ্ছে।

1

বর্তমানে এএসিসির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নাকভি, যিনি একইসঙ্গে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডেরও (পিসিবি) চেয়ারম্যান।

সূত্রের বরাত দিয়ে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বলছে, এই সিদ্ধান্ত পাকিস্তান ক্রিকেটকে আন্তর্জাতিকভাবে একঘরে করার কৌশলেরই অংশ।

বিসিসিআইয়ের একটি সূত্র বলে, 'পাকিস্তানের একজন মন্ত্রীর নেতৃত্বে পরিচালিত এসিসি-র আয়োজিত টুর্নামেন্টে ভারতীয় দল অংশ নিতে পারে না। এটা জাতির আবেগ। আমরা মৌখিকভাবে এএসিসিকে আমাদের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছি। মেয়েদের আসন্ন টুর্নামেন্টে খেলছি না, ভবিষ্যতের ইভেন্টগুলোতেও অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্তও স্থগিত রাখছি। আমরা নিয়মিত ভারতের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।'

বিসিসিআইয়ের এই অবস্থান সেপ্টেম্বরে ভারতের মাটিতে অনুষ্ঠিতব্য পুরুষদের এশিয়া কাপ নিয়েই বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।

ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কার অংশগ্রহণে আয়োজিত এই টুর্নামেন্ট আপাতত স্থগিত হতে পারে।

তবে সূত্র বলে, বিসিসিআই খুব ভালো করেই জানে যে ভারতের অংশগ্রহণ ছাড়া এশিয়া কাপ লাভজনক হবে না। কারণ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট টুর্নামেন্টের অধিকাংশ স্পন্সরই ভারতীয়। তাছাড়া চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচ ছাড়া এই টুর্নামেন্টের প্রতি সম্প্রচারকারীরাও তেমন আগ্রহী হবে না।

২০২৪ সালে সনি পিকচারস নেটওয়ার্কস ইন্ডিয়া আট বছরের জন্য ১৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে এশিয়া কাপের সম্প্রচার স্বত্ব কিনে নিয়েছে। এবারের আসর বাতিল হলে এই চুক্তি পুনর্বিবেচনা করতে হবে।

এএসিসির পাঁচ পূর্ণ সদস্য—ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান—সম্প্রচার আয়ের ১৫ শতাংশ করে পায়; বাকি আয় সহযোগী দেশ ও সদস্যদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়।

২০২৩ সালের এশিয়া কাপেও ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার ছায়া ছিল। পাকিস্তান আয়োজক হলেও ভারত সেদেশে গিয়ে খেলতে রাজি হয়নি। ফলে বিসিসিআইয়ের উদ্যোগে ভারতের সব ম্যাচ শ্রীলঙ্কায় আয়োজন করা হয়। তবে ওই আসরে পাকিস্তান ফাইনালে উঠতে পারেনি, আর শিরোপা জেতে ভারত।

২০২৪ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আয়োজক ছিল পাকিস্তান। ওই আসরেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। ভারত আবারও হাইব্রিড মডেলের প্রস্তাব দেয় এবং নিজেদের ম্যাচগুলো দুবাইয়ে খেলে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও ভারত চ্যাম্পিয়ন হয়। ভারত ফাইনালে খেলায় ওই ম্যাচও পাকিস্তানে আয়োজন করা যায়ন্নি।

উপমহাদেশে ক্রিকেটের বিকাশ ও বিশ্ব ক্রিকেটে শক্তিশালী এশীয় বলয় গড়ার লক্ষ্যে ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এএসিসি। সংস্থাটির আগের প্রেসিডেন্ট ছিলেন ভারতের জয় শাহ; তিনি গত বছর আইসিসির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে