শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২

গাজার স্কুলে ইসরাইলি হামলায় নিহত ৫০

গত ৭ অক্টোবর থেকে অবরুদ্ধ উপত্যকায় ইসরাইলি বিমান ও আর্টিলারি হামলায় কমপক্ষে ১৫ হাজার ৮৯৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন
যাযাদি ডেস্ক
  ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০
গাজার স্কুলে ইসরাইলি হামলায় নিহত ৫০
সাম্প্রতিক যুদ্ধে উদ্বাস্তু হওয়া লোকজন স্কুল দুটিতে আশ্রয় নিয়েছিলেন

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখন্ডে স্কুলে ইসরাইলি হামলায় কমপক্ষে ৫০ জন নিহত হয়েছেন। উত্তর গাজার পৃথক দুটি স্কুলে চালানো হামলায় এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। সাম্প্রতিক যুদ্ধে উদ্বাস্তু হওয়া লোকজন স্কুল দুটিতে আশ্রয় নিয়েছিলেন।

ফিলিস্তিনি সরকারি বার্তা সংস্থা ওয়াফার বরাত দিয়ে সোমবার রাতে এ খবর দিয়েছে রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অবশ্য হামলা ও প্রাণহানির এই খবরটি তাৎক্ষণিকভাবে তাদের পক্ষে স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি। অপরদিকে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র বলেছেন, তারা হামলার খবর খতিয়ে দেখছেন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ৭ অক্টোবর থেকে অবরুদ্ধ উপত্যকায় ইসরাইলি বিমান ও আর্টিলারি হামলায় কমপক্ষে ১৫ হাজার ৮৯৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৭০ শতাংশই নারী বা ১৮ বছরের কম বয়সি শিশু-কিশোর। এ ছাড়া আরও হাজার হাজার মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন এবং তারা ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে থাকতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এর আগে সোমবার গাজার দক্ষিণের প্রধান শহর খান ইউনিসের কিছু অংশ ছেড়ে যেতে ফিলিস্তিনিদের নির্দেশ দেয় ইসরাইল। তবে বাসিন্দারা বলেছেন, তাদের যে এলাকায় যেতে বলা হয়েছে, সেগুলোও হামলার কবলে পড়েছে।

গত ৭ অক্টোবর থেকে অবরুদ্ধ গাজা ভূখন্ডে আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরাইল। ইসরাইলি এই হামলা থেকে বাদ যায়নি গাজার স্কুল, মসজিদ এমনকি হাসপাতালের মতো স্থাপনাও। এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সতর্কতা সত্ত্বেও গাজার স্কুলে আবারও ইসরাইলি হামলার ঘটনা ঘটল।

৬৩ সাংবাদিক নিহত

এদিকে, গত ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধে গত সোমবার পর্যন্ত অন্তত ৬৩ সাংবাদিক এবং মিডিয়াকর্মী নিহত হয়েছেন। কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। খবর সিএনএনের।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা, ইসরাইল এবং লেবাননে এসব সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। সিপিজে বলেছে, নিহত সাংবাদিকদের মধ্যে রয়েছেন ৫৬ জন ফিলিস্তিনি, চারজন ইসরাইলি এবং তিনজন লেবানিজ।

এক বিবৃতিতে সিপিজে বলছে, সাংবাদিকরা গাজায় অনেক ঝুঁকির মুখোমুখি, তারা ইসরাইলি স্থল হামলার সময় বিধ্বংসী বিমান হামলা, বিপর্যস্ত যোগাযোগব্যবস্থা, সরবরাহের ঘাটতি এবং ব্যাপক বিদু্যৎ বিভ্রাটের মধ্যে এই সংঘাতের রিপোর্ট করার চেষ্টা করছেন।

হামাসের সুড়ঙ্গ ধ্বংসের পরিকল্পনা

অন্যদিকে গাজা উপত্যকাজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা সুড়ঙ্গগুলো সাগরের পানি ভরে ধ্বংস করার পরিকল্পনা করেছে ইসরাইল। দেশটির দাবি, এসব সুড়ঙ্গ হামাসের যোদ্ধারা ব্যবহার করেন। তাই সুড়ঙ্গ ধ্বংসে সীমান্তে বেশ বড় আকারের পাম্প জড়ো করেছে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ।

ওয়ালস্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স। গত সোমবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন কর্মকর্তারা সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আল-শাতি শরণার্থী শিবির থেকে মাইলখানেক দূরে অন্তত পাঁচটি পাম্প বসিয়েছে ইসরাইল। এসব পাম্প ব্যবহার করে প্রতি ঘণ্টায় হাজারো ঘনমিটার পানি সরবরাহ করা সম্ভব। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পাম্প ব্যবহার করে সাগরের পানি টেনে এনে গাজায় সুড়ঙ্গগুলোয় ফেলা হবে।

ইসরাইলের পক্ষ থেকে গত মাসে এই পরিকল্পনার কথা যুক্তরাষ্ট্রকে জানানো হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উলেস্নখ করেছে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। তবে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কত দূর এগিয়েছে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত নন তারা। মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ব্যাপারে ইসরাইল এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে