নেত্রকোনা-৩,আটপাড়া-কেন্দুয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত আসনে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষনা না হলেও রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন প্রত্যার্শী প্রার্থীরা বসে নেই। উপজেলা সদর থেকে শুরু করে ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বইছে আগাম নির্বাচনের হাওয়া। বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী ও বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন আসনটিতে তাদের একক প্রার্থীর নাম ইতিমধ্যে ঘোষনা করেছেন। এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যার্শী হিসেবে ১০ জন প্রার্থী ভোটের মাঠে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যার্শী প্রার্থীরা হলেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও নেত্রকোনা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ড. রফিকুল ইসলাম হিলালী, বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা বিশিষ্ট শিল্পপতি সৈয়দ আলমগীর খসরু, কেন্দ্রীয় জিয়া পরিষদের সহকারি মহাসচিব বিশিষ্ট শিল্পপতি রোটারিয়ান এম. নাজমুল হাসান, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি ডি জেড এম হাসান বিন শফিক সোহাগ, কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক সহ-ক্রীড়া সম্পাদক রায়হান আমিন তালুকদার রনি, জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আলহাজ¦ মো. দেলোয়ার হোসেন ভুইয়া দুলাল, মেজর সৈয়দ আবু বকর সিদ্দিক পিএসসি (অবঃ), জাতীয়তাবাদী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার্স ফোরামের সহ-সভাপতি শিল্পপতি ইঞ্জিনিয়ার মো. মোস্তাফা-ই-জামান সেলিম সিআইপি, নেত্রকোনা জেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সাধারন সম্পাদক অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম সজল, জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সম্মানিত সদস্য ইমরান তালুকদার।
এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যার্শী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ড. রফিকুল ইসলাম হিলালী চট্রগ্রাম বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি। তিনি সক্রিয় ভাবে রাজনীতির কারনে এলাকায় নির্যাতিতদের মধ্যে দলের অন্যতম নেতা। আওয়ামীলীগের রোষানলে কেন্দুয়া উপজেলাস্থ বাসভবন থেকে বৃদ্ধ পিতাসহ চট্রগ্রাম বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ড. রফিকুল ইসলাম হিলালীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। কেন্দুয়া থানা পুলিশের দায়েরকৃত জেলার সর্বপ্রথম জননিরাপত্তা আইনে মামলায় ড. হিলালী বৃদ্ধ পিতাকে নিয়ে দীর্ঘদিন জেল খেটেছেন। কেন্দুয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ড. রফিকুল ইসলাম হিলালী নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নেত্রকোনা-৩ আসনে চারদলীয় ঐক্যজোটের প্রার্থী হিসেবে আওয়ামীলীগ প্রার্থীর সঙ্গে তীব্র প্রতিদ্বন্ধিতা করেন। ওই নির্বাচনে তিনি চারদলীয় ঐক্যজোটের প্রার্থীদের মধ্যে জেলার ৫টি আসনে সর্বোচ্চ এবং বৃহত্তর ময়মনসিংহে নবম ভোটপ্রাপ্ত হয়েছেন। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দেড়দশকে রাজনৈতিক নেতৃত্বের কারনে ড. রফিকুল ইসলাম হিলালীর কেন্দুয়াস্থ বাসভবনে একাধিকবার হামলা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, গুলি বর্ষনের ঘটনা ঘটেছে। বিএনপি নেতা ড. রফিকুল ইসলাম হিলালীর বিরুদ্ধে কেন্দুয়া থানায় পুলিশ এসল্ট থেকে শুরু করে বিষ্ফোরক, অগ্নিসংযোগ, নাশকতাসহ মোট ৫৬টি রাজনৈতিক মামলা হয়েছে। পুলিশ এসল্ট মামলায় তিনি গ্রেপ্তার হয়ে দীর্ঘদিন নেত্রকোনা জেলা করাগারে কারাবরণ করেছেন। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কেন্দুয়া-আটপাড়া উপজেলায় অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে ড. রফিকুল ইসলাম হিলালী ঘন ঘন গনসংযোগ করছেন। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শের একজন পরীক্ষিত সৈনিক হিসেবে গত দেড় দশক গণতন্ত্র, জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে ড. রফিকুল ইসলাম হিলালী নেতৃত্¦ের অগ্রভাগে থেকে দায়িত্¦ পালন করেছেন। তিনি বিএনপির প্রতিটি আন্দোলন কর্মসূচীতে রাজপথে নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে সরব ছিলেন\
এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যার্শী বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা বিশিষ্ট শিল্পপতি সৈয়দ আলমগীর খসরু। তিনি একটি বিএনপি সহযোগী সংগঠন এমবিএ অ্যাসোসিয়েশনস অব বাংলাদেশের সভাপতি, ৬ মিলিয়নেরও বেশী সেলস এবং মার্কেটিং পেশাদারদের প্রতিনিধিত্বকারী বৃহত্তম সংস্থা মার্কেটার্স ইনস্টিটিউট অফ বাংলাদেশের আহবায়ক।
তিনি দুই উপজেলার বিভিন্ন মসজিদ-মন্দিরের উন্নয়নের পাশাপাশি প্রতিটি দূর্যোগ মুহুর্তে এলাকাবাসীর পাশে ছিলেন। রোটারিয়ান এম. নাজমুল হাসান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আটপাড়া- কেন্দুয়া উপজেলায় জনগনের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। এলাকায় শিক্ষার প্রসারের লক্ষ্যে তিনি কেন্দুয়ার গোপালপুর গ্রামে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছেন। বিগত সরকারের সময়ে রাজনৈতিক কারনে কলেজটি এমপিওভুক্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছে। কলেজ পরিচালনার সকল ব্যয়ভার রোটারিয়ান এম. নাজমুল হাসান তার ব্যাক্তিগত তহবিল থেকে প্রদান করে যাচ্ছে । কেন্দুয়া-আটপাড়া উপজেলার তৃনমূলের নেতাকর্মীদের কাছে রোটারিয়ান এম. নাজমুল হাসানের ক্লীন ইমেজ রয়েছে। দীর্ঘ চার মাস লন্ডনে চিকিৎসা শেষে বিএনপির চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে মঙ্গলবার সকাল থেকেই বিমান বন্দর সড়কের পাশে রোটারিয়ান এম নাজমুল হাসানের নেতৃত্বেৃ এলাকার নেতাকর্মী সমর্থকরা ব্যানার, ফেস্টুন, জাতীয় ও দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রোটারিয়ান এম. নাজমুল হাসান নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে কেন্দুয়া-আটপাড়া উপজেলা সদর থেকে শুরু করে ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকায় সাধারন ভোটারদের সঙ্গে নিয়মিত কুশল বিনিময় করে যাচ্ছেন। এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যার্শী জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি ডি জেড এম হাসান বিন শফিক সোহাগ। তিনি কেন্দ্রীয় কমিটির টিম লিডার হিসেবে কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক পর্যবেক্ষক টিমের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক এবং মহাখালী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালের ১ম যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আটপাড়া উপজেলায় বিগত দেড় দশকে বিএনপির নির্যাতিত নেতাদের মধ্যে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি ডি জেড এম হাসান বিন শফিক সোহাগ সর্বোচ্চ ক্ষতিগ্রস্থ একজন নেতা। মামলার এজাহারে নাম না থাকা সত্বেও নেত্রকোনা জেলা যুবলীগের তৎকালীন সভাপতি স্বপন জোয়ারদার হত্যা মামলায় ২০১১ সালে চার্জশীটে তাকে জড়িয়ে গ্রেপ্তার করে কারাগারে প্রেরণ করার পরও ক্ষান্ত থাকেনি দলটি। ডি জেড এম হাসান বিন শফিক সোহাগের নেত্রকোনা থেকে ঢাকাগামী ব্যাক্তিগত রফ রফ এন্টারপ্রাইজ নামক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি কেড়ে নেয়া, সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলাসহ ১৮টি রাজনৈতিক মামলায় জড়িয়ে তাকে হয়রানি করা হয়। বিগত দেড় দশক এলাকায় আসলেই তাকে প্রায়শই আওয়ামী সন্ত্রাসী বাহিনীর ধাওয়ার শিকারে পরিনত হতে হয়েছে। আটপাড়া ও কেন্দুয়া উপজেলাবাসীর কাছে পরিছন্ন ইমেজের নেতা কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি ডি জেড এম হাসান বিন শফিক সোহাগ ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতনের আন্দোলনে ঢাকা মহানগর (উত্তর) স্বেচ্ছাসেবক দলের সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজপথের আন্দোলন কর্মসূচীগুলোতে তিনি ছিলেন নেতৃর্ত্বের অগ্রভাগে। জনগনের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় গত এক দেড়দশক প্রতিটি বিভাগীয় কর্মসূচী থেকে শুরু করে রাজধানীর কর্মসূচীগুলোতে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি ডি জেড এম হাসান বিন শফিক সোহাগ সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। আটপাড়া কলেজের গর্ভণিং বর্ডির সম্মানিত সদস্য ডি জেড এম হাসান বিন শফিক সোহাগের দাদা ও নানার বাড়ী আটপাড়া উপজেলা সদরের শুনই গ্রামে হওয়ায় তার আত্মীয়-স্বজন ও আঞ্চলিকতার বিশাল ভোট ব্যাাংক রয়েছে। তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় দীর্ঘদিন যাবৎ ব্যাক্তিগত উদ্যোগে এলাকার অসহায়দের সহযোগিতা, ঈদ উপহার, শীতবস্ত্র বিতরনসহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছেন। আটপাড়া-কেন্দুয়া উপজেলার তৃনমূলের নেতাকর্মীদের কাছে একজন পরিছন্ন ইমেজের নেতা হিসেবে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি ডি জেড এম হাসান বিন শফিক সোহাগের ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যার্শী কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ- ডি জেড এম হাসান বিন শফিক সোহাগ এলাকায় ঘন ঘন যাতায়াত শুরু করেছেন।
এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যার্শী জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আলহাজ¦ মো. দেলোয়ার হোসেন ভুইয়া দুলাল। তিনি কেন্দুয়া উপজেলার কান্দিউড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক দুইবারের চেয়ারম্যান। ১৯৯০ সালে কেন্দুয়া উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, ২০০৫ সালে কেন্দুয়া পৌরসভার মেয়র, ২০১৪ সালে কেন্দুয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী মেজর সৈয়দ আবু বকর সিদ্দিক, পিএসসি (অবঃ) প্রাক্তন সামরিক কর্মকর্তা, রাজনৈতিক বিশ্লেষক। তিনি ২০০৭ সাল থেকে জাতীয়তাবাদী দলকে শক্তিশালী করার জন্য দেশে প্রবাসে রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যূথানের সময়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তরুন, জেন-জি প্রজন্ম, বিএনপি কর্মীদের উদ্বুদ্ধ করতে প্রচারনা চালিয়েছেন ২৯ জুলাই হাউজ অব লর্ডস এবং হাউজ অব কমন্সে রক্তাক্ত বাংলাদেশের কথা তুলে ধরেছেন।
এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সাধারন সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সজল ১৯৭৯ সালে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য পদ গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে ১৯৮৬ সাল থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত জেলা যুবদলের আহবায়ক, ১৯৯১ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত জেলা বিএনপির সমাজ কল্যাণ সম্পাদক এবং ২০০১ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত জেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সাধারন সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এছাড়াও এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেতে সক্রিয় রয়েছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক সহ-ক্রীড়া সম্পাদক রায়হান আমিন তালুকদার রনি, জাতীয়তাবাদী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার্স ফোরামের সাবেক সহ-সভাপতি শিল্পপতি ইঞ্জিনিয়ার মো. মোস্তাফা-ই-জামান সেলিম সিআইপি, জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সম্মানিত সদস্য ইমরান তালুকদার। এ আসনে কে পাবেন বিএনপির মনোনয়ন এ নিয়ে রাজনীতিতে হিসেব নিকেশ শুরু হয়েছে।
এ আসনে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর একক প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন জেলা জামায়াত ইসলামীর এ্যাসিস্টেন্ট সেক্রেটারী ও আটপাড়া উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান দেলাওয়ার হোসেন সাইফুল এবং বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের প্রার্থী হিসেবে প্রচারনায় রয়েছেন তরিকুল ইসলাম নুরানি ।