রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
ফিলিস্তিনি চিকিৎসকদের নগ্ন করে নির্যাতন ইসরাইলি বাহিনীর

ত্রাণ নিতে আসা ফিলিস্তিনিদের ওপর আবারও ইসরাইলি হামলা

যাযাদি ডেস্ক
  ১৩ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
আকাশে ইসরাইলি বিমানের গর্জন, মাটিতে ট্যাংকের গোলা হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা। এই দুর্যোগের মধ্যেই শুরু হয়েছে রমজান মাস। এমনিতেই খাবার নেই, তারপরও ইফতারির জন্য বেঁচে থাকা এই ফিলিস্তিনি পরিবার সামান্য কিছু খাবার সংগ্রহ করে তা দিয়েই সোমবার প্রথম রোজার ইফতারি সারেন। ছবিটি গাজার দেইর আল-বালাহ থেকে তোলা -আল-জাজিরা

ফিলিস্তিনের গাজা শহরের দক্ষিণে কুয়েত গোলচত্বরে ত্রাণ নিতে জড়ো হওয়া মানুষের ওপর আবারও হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। হামলায় অন্তত ৯ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। আহতদের মধ্যে ২০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খাবারের অভাবে যখন ফিলিস্তিনি শিশুরা মারা যাচ্ছে এমন সময় দখলদার ইসরাইল আবারও এমন নৃশংস হামলার ঘটনা ঘটাল। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা

'ওয়াফা নিউজ এজেন্সি'র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার গাজা শহরের দক্ষিণে কুয়েত গোলচত্বরে ত্রাণবাহী ট্রাকের জন্য অপেক্ষা করছিলেন কিছু ফিলিস্তিনি। এ সময় হামলা চালায় ইসরাইলি বাহিনী। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে।

গত ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র সংগঠন হামাস নিধনের নামে গাজায় ব্যাপক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। ইসরাইলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। জাতিসংঘের মতে, প্রায় ৮৫ শতাংশ গাজাবাসী খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র ঘাটতির মধ্যে ইসরাইলি হামলায় ঘরবাড়ি হারিয়েছেন, যেখানে ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে।

গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি অনুযায়ী, আগ্রাসন শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরাইলি হামলায় ৩১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় ৭৩ হাজার। নিহতদের মধ্যে সাড়ে ১২ হাজারই শিশু।

ফিলিস্তিনি চিকিৎসা কর্মীদের নগ্ন করে

নির্যাতন ইসরাইলি বাহিনীর

ইসরাইলি সেনারা গত মাসে গাজার একটি হাসপাতালে অভিযান চালানোর পর চিকিৎসা কর্মীদের চোখ বেঁধে আটকে রাখে, নগ্ন হতে বাধ্য করে এবং তাদের ক্রমাগত প্রহার করা হয়ে বলে অভিযোগ উঠেছে। গাজার কয়েকজন ফিলিস্তিনি চিকিৎসক 'বিবিসি'র কাছে এ অভিযোগ করেছেন।

চিকিৎসা কর্মীরা জানান, গত মাসে অভিযানের পর ইসরাইলি সেনারা তাদের হাসপাতালের ভেতরে আটকে রেখেছিল। তাদের চোখ বেঁধে রাখা হয়েছিল, তাদেরকে পোশাক খুলে ফেলতে বাধ্য করা হয় এবং বারবার মারধর করা হয়েছে। এমনকি ঘণ্টার পর ঘণ্টা তাদের অস্বস্তিকর অবস্থায় হাঁটু গেড়ে থাকতে বাধ্যও করা হয়েছিল।

নাসের হাসপাতালের চিকিৎসক আহমেদ আবু সভা তাকে এক সপ্তাহ ধরে আটকে রাখার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ইসরাইলি এক সেনা তার হাত ভেঙে দিয়েছিল এবং তার ওপর কুকুর লেলিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আবু সভার এই বিবরণ হাসপাতালের আরও দুই চিকিৎসকের দেওয়া বিবরণের সঙ্গে মিলে যায়। কিন্তু ইসরাইলি বাহিনী প্রতিশোধের ভয়ে তারা নাম প্রকাশ করতে চাননি। ওই দুই চিকিৎসক বলেছেন, তাদের অপদস্থ করা হয়েছে, মারধর করা হয়েছে, শরীরে ঠান্ডা পানি ঢেলে দেওয়া হতো এবং ঘণ্টার পর ঘণ্টা অস্বস্তিকর অবস্থায় হাঁটু গেড়ে থাকতে বাধ্য করা হয়েছে।

বিবিসি ইসরাইল প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারা প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দেয়নি বা দুর্ব্যবহারের নির্দিষ্ট দাবি অস্বীকার করেনি। তবে তারা তাদের অপারেশনের সময় চিকিৎসা কর্মীদের ক্ষতির কথা অস্বীকার করেছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
Nagad

উপরে