বিশ্বে আগের দুই বছরের তুলনায় ২০২২-২৩ সালে সাংবাদিকদের হত্যার সংখ্যা বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেশিরভাগ সাংবাদিক হত্যার ঘটনায় বিচার হয়নি বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা (ইউনেস্কো)। শনিবার ইউনেস্কোর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গত দুই বছরে বিশ্বে গড়ে প্রতি চার দিনে একজন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা, এএফপি
ইউনেস্কোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ এবং ২০২৩ সালে বিশ্বজুড়ে নিহত হয়েছেন ১৬২ জন সাংবাদিক ও সংবাদকর্মী। যা শতকরা হিসাবে পূর্ববর্তী ২০২০ এবং ২০২১ সালের তুলনায় ৩৮ শতাংশ বেশি। সংস্থার মহাপরিচালক অড্রে অ্যাজৌলে এক বিবৃতিতে বলেছেন, 'আমাদের হিসাব অনুযায়ী, ২০২২ এবং ২০২৩ সালে প্রতি চারদিনে একজন করে সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। শুধু পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য এ পরিণতি বরণ করে নিতে হয়েছে তাদের। আমরা প্রতিটি হত্যাকান্ডের বিচার চাই এবং জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রদের প্রতি আমাদের আহ্বান, অপরাধীরা যেন বিনা শাস্তিতে পার না পেয়ে যায়।'
প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে সবচেয়ে বেশি সাংবাদিক হত্যার ঘটনা ঘটেছে লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিয়ান অঞ্চলভুক্ত দেশগুলোতে। গত দুই বছরে দুই ভৌগোলিক অঞ্চলভুক্ত দেশগুলোতে নিহত হয়েছেন ৬১ জন সাংবাদিক ও সংবাদকর্মী।
এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বিশ্বের সংঘাতপ্রবণ বিভিন্ন এলাকা। ইউনেস্কোর হিসাব অনুযায়ী, ২০২২ এবং ২০২৩ সালে বিশ্বের সংঘাতপ্রবণ এলাকাগুলোয় পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিহত হয়েছেন ৪৪ জন সাংবাদিক ও সংবাদকর্মী। নিহত সাংবাদিকদের মধ্যে নারীর সংখ্যা ১৪ জন, যা শতকরা হিসাবে ৯ শতাংশ। এই ১৪ নারী সাংবাদিকের মধ্যে পাঁচজনের বয়স ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সের মধ্যে। তাছাড়া সাংবাদিক হত্যার বিচার যে বিশ্বজুড়েই উপেক্ষিত, তাও উলেস্নখ করা হয়েছে ইউনেস্কোর প্রতিবেদনে। এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিশ্বে সাংবাদিক হত্যার যত ঘটনা ঘটেছে, সেসবের ৮৫ শতাংশেরই কোনো বিচার হয়নি। যে ১৫ শতাংশ হত্যাকান্ডের বিচার হয়েছে, সেসবের অনেকগুলোকে পার হতে হয়েছে দীর্ঘসূত্রতাসহ বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা। জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিচার যত দীর্ঘায়িত হয়, ন্যায়বিচারের সম্ভাবনা তত হ্রাস পায়।
যদিও প্রতিবেদনে ২০২৪ সালের সাংবাদিক মৃতু্যর তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। তবে গত বছরের অক্টোবর থেকে গাজা, ইসরায়েল এবং লেবাননে নিহত সাংবাদিকদের সংখ্যা ১৩৫ জন ছাড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছে কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)।