থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রার পদ সাময়িকভাবে স্থগিত হওয়ায় দায়িত্ব পান উপপ্রধানমন্ত্রী ও যোগাযোগমন্ত্রী সুরিয়া জুংরুংরুয়াংকিত। তবে এই দায়িত্ব তিনি পালন করবেন মাত্র এক দিন, অর্থাৎ বুধবারই (২ জুলাই) তার প্রধানমন্ত্রীত্ব শেষ হচ্ছে।
সাময়িক প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর সুরিয়া ব্যাংককে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তার কাজ শুরু করেন। এই অনুষ্ঠানে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় প্রতিষ্ঠার ৯৩তম বার্ষিকী উদযাপন করা হয়। তবে মজার বিষয় হলো, যে কার্যালয়ের ৯৩ বছর পূর্তি, তার দায়িত্বে সুরিয়া থাকছেন না ৯৩ ঘণ্টাও।
সাংবাদিকরা তার এই সংক্ষিপ্ত মেয়াদ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলেও সুরিয়া প্রশ্ন এড়িয়ে যান। তবে তিনি জানান, তার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো একটি চূড়ান্ত কাগজে স্বাক্ষর করা, যার মাধ্যমে তিনি বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) তার উত্তরসূরির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে পারবেন।
থাই রাজনীতিতে প্রায় এক দশকের বেশি সময় ধরে সক্রিয় সুরিয়া জুংরুংরুয়াংকিত দেশটির ‘অভিজ্ঞ ও সুযোগসন্ধানী’ রাজনীতিক হিসেবে পরিচিত। থাই গণমাধ্যমে তার পরিচিতি এমন একজন হিসেবে, যিনি সবসময় রাজনৈতিক হাওয়ার দিক বুঝে অবস্থান নেন এবং ক্ষমতাসীন দলের আনুগত্য প্রকাশে পেছপা হন না।
থাইল্যান্ডের সাংবিধানিক আদালত মঙ্গলবার জানায়, কম্বোডিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক টানাপোড়েনে মন্ত্রীদের জন্য নির্ধারিত নৈতিকতার মানদণ্ড লঙ্ঘনের অভিযোগে পেতংতার্নের বিরুদ্ধে ‘যথেষ্ট ভিত্তি’ রয়েছে। সে কারণে তার প্রধানমন্ত্রীত্ব স্থগিত করা হয়।
তবে থাই গণমাধ্যম এবং বিবিসি বলছে, পেতংতার্নের একটি ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর জনমনে ক্ষোভ তৈরি হয়। সেখানে তিনি কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেনকে ‘চাচা’ সম্বোধন করেন এবং এক থাই সামরিক কর্মকর্তার সমালোচনা করেন। এরপরই তার পদত্যাগের দাবি জোরালো হয়ে ওঠে।
এই অস্থায়ী দায়িত্বের মেয়াদ শেষ হলে আগামীকাল বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী পদে অধিষ্ঠিত হবেন বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ফুমথাম উইচায়াচাই। এরই মধ্যে ক্ষমতাসীন ফেউ থাই পার্টি জানিয়েছে, মন্ত্রিসভার পুনর্বিন্যাসে ফুমথাম নতুন সহকারী প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন, যা পদমর্যাদায় উপপ্রধানমন্ত্রীর চেয়েও উচ্চতর। এই কারণেই সুরিয়ার স্বল্পমেয়াদি প্রধানমন্ত্রীত্ব শেষ হচ্ছে।
আজকের দিন শেষেই জানা যাবে, সুরিয়া কেবল আনুষ্ঠানিকতা পূরণ করেই তার ‘এক দিনের’ প্রধানমন্ত্রীত্ব শেষ করবেন, নাকি রেখে যাবেন কোনো বিশেষ রাজনৈতিক চমক। বাস্তব রাজনীতিতে এমন সংক্ষিপ্ত মেয়াদের প্রধানমন্ত্রীত্ব বিরল, তবে থাইল্যান্ড এবার তার ব্যতিক্রম ঘটাল।