মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২

হরিণী অমরসুরিয়া আবারও শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রী

যাযাদি ডেস্ক
  ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
হরিণী অমরসুরিয়া আবারও শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী হরিণী অমরসুরিয়া

শ্রীলংকার বামপন্থি প্রেসিডেন্ট অনূঢ়া কুমারা দিশানায়েক হরিণী অমরসুরিয়াকে আবারও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। সোমবার তাকে নতুন করে নিয়োগ দেওয়া হয়। ৫৪ বছর বয়সি প্রধানমন্ত্রী হরিণী অমরসুরিয়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চসংখ্যক পছন্দের ভোট পেয়েছেন। তিনি সামাজিক নৃতত্ত্বে এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি তিনি শিক্ষা ও উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও পালন করবেন। তবে অর্থমন্ত্রীর গুরুত্বপূর্ণ পদ ধরে রেখেছেন প্রেসিডেন্ট দিশানায়েক। তথ্যসূত্র : রয়টার্স

দেশটির ইতিহাসে তৃতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী অমরসুরিয়া। তিনি চার বছর আগে প্রথম এমপি নির্বাচিত হন। তার আগে শ্রীমাভো বন্দরনায়েকে ও চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গা দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

এর আগে সেপ্টেম্বরে দিশানায়েকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর অমরাসুরিয়াকে প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি আরও অনেকগুলো দপ্তরের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। ওই সময় নিজ দলের প্রবীণ আইনপ্রণেতা বিজাথা হেরাথকেও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু পার্লামেন্টে তার দল ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার (এনপিপি) জোটের আসন মাত্র তিনটি হওয়ায় পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে আগাম নির্বাচনের ডাক দেন।

গত ১৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে ২২৫ আসনের পার্লামেন্টে দিশানায়েকের বামপন্থি জোট ১৫৯টি আসনে জয় পায়। এরপর নতুন করে মন্ত্রিসভা ঢেলে সাজানোর সুযোগ পান শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট। এ পর্যায়ে অমরসুরিয়াকে প্রধানমন্ত্রী পদে বহাল রাখার পাশাপাশি হেরাথকে ফের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন।

প্রেসিডেন্টের নির্বাহী ক্ষমতা থাকলেও নির্বাচনে দেওয়া প্রতিশ্রম্নতি রক্ষা করতে দিশানায়েকের একটি শক্তিশালী মন্ত্রিপরিষদ এবং সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন ছিল। এই কারণেই নিজের নীতিগুলো বাস্তবায়নে নতুন করে জনসমর্থন পাওয়ার জন্য দিশানায়েকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েই নির্বাচনি প্রতিশ্রম্নতি অনুযায়ী পার্লামেন্ট ভেঙে দেন।

কয়েক দশক ধরে শ্রীলংকার রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করে আসা পরিবারতান্ত্রিক দলগুলোর বিবেচনায় দিশানায়েকে প্রায় একজন বহিরাগত ছিলেন। ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে সৃষ্ট ব্যাপক গণবিক্ষোভের মুখে গোতাবায়া রাজাপাকসের শাসনের অবসানের দুই বছর পর নতুন প্রেসিডেন্ট বেছে নিতে ভোট দেয় শ্রীলঙ্কা। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে শ্রীলংকার এক কোটি ৭১ লাখ ভোটারের মধ্যে প্রায় ৭৬ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হন দিশানায়েকে। এরপর পার্লামেন্ট নির্বাচনেও কাঙ্ক্ষিত সাফল্যও পান তিনি। তার নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা সোমবার শপথ নিয়েছেন। তবে এ মন্ত্রিসভায় নতুন কোনো অর্থমন্ত্রী নিয়োগ করেননি তিনি। মন্ত্রণালয়টি নিজের অধীনেই রেখে দিয়েছেন। সেপ্টেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরও এমনটি করেছিলেন দিশানায়েকে।

আগামী বৃহস্পতিবার নতুন পার্লামেন্টের বৈঠকে বসবে। সেখানে স্পিকার নির্বাচন করা হবে। ওইদিন দিশানায়েক নতুন নির্বাচিত এমপিদের সামনে তার গুরুত্বপূর্ণ নীতি অগ্রাধিকারগুলোও উপস্থাপন করবেন। এছাড়া প্রেসিডেন্টকে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে একটি অন্তর্র্বর্তী বাজেট উপস্থাপন করতে হবে। একই সঙ্গে তাকে কর হ্রাস এবং কল্যাণ বাড়ানোর উপায় খুঁজে বের করতে হবে, যা তার প্রধান নির্বাচনি প্রতিশ্রম্নতি ছিল। তবে সেগুলো আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কর্মসূচিকে ব্যাহত না করেই করতে হবে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, পার্লামেন্টে শক্তিশালী জোট দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটিতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা জোরদার করতে ভূমিকা রাখবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে