ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ৯২ বছর বয়সে মারা গেছেন। অর্থনীতিবিদ থেকে রাজনীতিতে নাম লেখানো কংগ্রেসের বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদের মৃতু্যতে বিশ্ব নেতারা শোক প্রকাশ করেছেন। বিশ্ব নেতারা তার রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি, সততা এবং ভারতের উন্নয়নের নেপথ্যে অবদানের প্রশংসা করেন। ভারতের উদার অর্থনীতির 'স্থপতি' হিসেবে বিবেচনা করা হয় শিখদের মধ্যে প্রথম প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া মনমোহন সিংকে। ২০০৪ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের আগে অর্থমন্ত্রী ছিলেন ১৯৩২ সালে পাঞ্জাবের এক প্রত্যন্ত অঞ্চলে জন্ম নেওয়া কেমব্রিজ ও অক্সফোর্ডের ডিগ্রিধারী এই অর্থনীতিবিদ। কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড প্রগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স- এর অধীনে দুই মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা মনমোহন সিং এমন একটি দল রেখে গেছেন যা দেশকে নতুন রূপ দিয়েছে। তিনি ১৯৯১ সালের অর্থনৈতিক সংস্কারের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ব্যাপকভাবে স্বীকৃত। যা ভারতের বাজারকে বিশ্বায়নের দ্বার উন্মুক্ত করেছিল। লক্ষ লক্ষ মানুষকে দারিদ্র্য থেকে বের করে এনেছিলেন তিনি। পাশাপাশি দেশকে টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পথে নিয়ে গিয়েছিল। তার মৃতু্যর সংবাদে বিশ্বজুড়ে নেতারা হৃদয়গ্রাহী বার্তা পাঠিয়েছেন বিভিন্ন মাধ্যমে। এত নেতার শোকবার্তা দেখেই বোঝা যায় তিনি সারা বিশ্ব কতটা জনপ্রিয় ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রী অ্যান্টনি বিস্নঙ্কেন মনমোহন সিংকে মার্কিন-ভারত কৌশলগত অংশীদারিত্বের ুঅন্যতম সেরা চ্যাম্পিয়নচ্ হিসাবে বর্ণনা করেছেন। মার্কিন-ভারত অসামরিক পারমাণবিক সহযোগিতা চুক্তির অগ্রগতিতে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা তুলে ধরে বিস্নঙ্কেন বলেন, "গত দুই দশকে আমাদের দেশগুলো একসঙ্গে যা অর্জন করেছে তার অনেকটাই মনমোহনের কাজ ভিত্তি স্থাপন করেছে। তার অর্থনৈতিক সংস্কার ভারতের দ্রম্নত বিকাশকে ত্বরান্বিত করেছে। তার অবদান সর্বদা স্মরণ করা হবে। "আমরা তার মৃতু্যতে শোক প্রকাশ করছি এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করতে তার প্রচেষ্টাকে সবসময় মনে রাখব।"
কানাডার সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন হারপার গভীর দুঃখ প্রকাশ করে মনমোহন সিংকে ব্যতিক্রমী বুদ্ধিমত্তার অধিকারী, সৎ এবং প্রজ্ঞাবান ব্যক্তি বলে অভিহিত করেছেন। শোক বার্তায় হারপার আরও বলেন, মনমোহন সিংয়ের নেতৃত্ব ভারতে এবং আন্তর্জাতিক উভয় ক্ষেত্রেই প্রশংসিত হয়েছিল। আফগানিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। আফগানিস্তানের প্রতি মনমোহনের অবিচল সমর্থনের কথাও স্মরণ করেছেন তিনি।