বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২

দক্ষিণ কোরীয় বিমান বিধ্বস্ত একজন যাত্রীর অভিজ্ঞতা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
দক্ষিণ কোরীয় বিমান বিধ্বস্ত একজন যাত্রীর অভিজ্ঞতা
দক্ষিণ কোরীয় বিমান বিধ্বস্ত একজন যাত্রীর অভিজ্ঞতা

কাজখস্তানের আকতাউয়ে গত বুধবার যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ৩৮ জন নিহত হন। ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান ২৯ যাত্রী। ভয়াবহ এ দুর্ঘটনার আগমুহূর্তে বিমানের ভেতরের ভিডিও করেন এক যাত্রী। এতে দেখা যাচ্ছে, যান্ত্রিক ত্রম্নটির কারণে বিমানটি যখন নিচে নেমে আসছিল তখন সবাই ভয়ে চিৎকার করছিলেন। তবে যিনি ভিডিওটি ধারণ করেছেন, তিনি শান্ত থাকার চেষ্টা করেন। সেই সঙ্গে তিনি আলস্নাহর নাম স্মরণ করছিলেন। এছাড়া বিভিন্ন দোয়া পড়ছিলেন। তার মধ্যেও আতঙ্কের স্পষ্ট ছাপ ছিল।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটির সেই ব্যক্তিও ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছেন। শুভোনকুল রাখিমোভ নামের এ যাত্রী দুর্ঘটনার ভয়াবহ অভিজ্ঞতা ও আলস্নাহর নাম স্মরণ করার কারণ জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, "বিমানটি ভেঙে পড়তে যাচ্ছিল। কিন্তু কয়েক সেকেন্ড পার হওয়ার পরও এটি ভেঙে পড়েনি। আরও কয়েক মিনিট পার হওয়ার পরও বিমানটি নিচে পড়ে যায়নি। তখন আমার মনে হলো, এ মুহূর্তে আমার দোয়া পড়া উচিত। আমি আলস্নাহকে স্মরণ করা শুরু করি। আমি ভেবেছিলাম এগুলো আমার শেষ কথা হবে, আমাকে আলস্নাহর সামনে উপস্থিত হওয়ার জন্য প্রস্তুত হতে হবে। যেহেতু আমার মৃতু্য হয়নি। আমি মনে করি আমাকে এখন আলস্নাহর আরও সন্তুষ্টি অর্জন করতে হবে।"

1

\হদক্ষিণ কোরিয়ার বিধ্বস্ত হওয়া বিমানটির ১৮১ আরোহীর মধ্যে শুধু দুজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। বাকী সবার নিহত হয়েছে। রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৯টার পরপর দক্ষিণ কোরিয়ার মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের সময় রানওয়েতে বিধ্বস্ত হয় বিমানটি। ধারণা করা হচ্ছে, পাখির সঙ্গে ধাক্কা লাগায় ল্যান্ডিং গিয়ারে জটিলতার কারণে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদমাধ্যম ইয়োনহাপ এ খবর জানিয়েছে। ইয়োনহাপ জানায়, জীবিত উদ্ধার হওয়া দুজন বিমানটির পেছনের অংশে ছিলেন।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষও জানিয়েছে, ওই দুজন বাদে আর কারও বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংকক থেকে ১৭৫ যাত্রী ও ৬ ক্রু নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় ফিরছিল বিমানটি। মুয়ান প্রদেশে অবস্থিত বিমানবন্দরটি রাজধানী সিউল থেকে প্রায় ২৮৮ কিলোমিটার বা ১৭৯ মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে। ঘটনার পর মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সব অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল করা হয়।

এদিকে মুয়ান ফায়ার বিভাগের প্রধান লি জিয়ং-হুন জানিয়েছেন, তাদের ধারণা পাখির আঘাতে অথবা খারাপ আবহাওয়ার কারণে হয়ত বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে। তিনি বলেন, "দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে পাখির আঘাত অথবা খারাপ আবহাওয়াকে ধারণা করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর যৌথ তদন্তের মাধ্যমে পরবর্তীতে দুর্ঘটনার কারণ জানানো হবে। "

\হতবে ভিডিওতে নীল পরিষ্কার আকাশ দেখা যাচ্ছে। যার অর্থ খারাপ আবহাওয়ার কারণে বিমানটির দুর্ঘটনায় পড়ার সম্ভাবনা কম। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা ইতিমধ্যে বলেছেন, ল্যান্ডিং গিয়ারের কিছুটা ত্রম্নটির কারণে বিধ্বস্তের ঘটনা ঘটেছে। রানওয়ে স্পর্শ করার পর পেটের অংশ দিয়ে রানওয়ে দিয়ে সামনের দিকে যাচ্ছিল বিমানটি। এর কিছুক্ষণ পরই কোনো কিছুতে ধাক্কা লেগে মুহূর্তের মধ্যে আগুনের কুন্ডলিতে পরিণত হয় এটি। তাৎক্ষণিকভাবে দুজনকে জীবিত উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে