গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার দিন সকালে, হামাসের সামরিক শাখার মুখোশধারী সদস্যরা সাদা পিকআপে হামাসের পতাকা ও স্বয়ংক্রিয় রাইফেল হাতে শহরের রাস্তায় টহল দেয়। ১৫ মাসের যুদ্ধে হামাস দুর্বল হলেও টিকে আছে এবং গাজার সবচেয়ে শক্তিশালী দল হিসেবে অবস্থান ধরে রেখেছ্তেএটাই ছিল তাদের স্পষ্ট বার্তা। যুদ্ধবিরতি শুরুর পর থেকে হামাস গাজায় নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। ইসরাইলের বোমা হামলায় হাজারো সদস্য নিহত এবং সুড়ঙ্গ ও অস্ত্র কারখানা ধ্বংস হলেও সংগঠনটি টিকে আছে।
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যুদ্ধের সময় হামাস নির্মূলের প্রতিশ্রুতি দিলেও বিকল্প প্রশাসনের পরিকল্পনা উপস্থাপন করতে পারেননি, যা শূন্যস্থান তৈরি করেছে। তবে গাজার অনেক বাসিন্দার কাছে যোদ্ধাদের দ্রম্নত উদ্ভব ছিল বিস্ময়কর। হামাসের প্রতিশোধের ভয়ে নামের শেষাংশ প্রকাশ করতে না চাওয়া মোহাম্মদ (২৪) বলেন, যুদ্ধ চলাকালে এরা কোথায় ছিল, আমরা জানতাম না। যুদ্ধবিরতির প্রথম দিন, হামাস গাজার সরায়া স্কয়ারে তিনজন জিম্মিকে মুক্তি দিয়ে ইসরায়েলে ফেরত পাঠায়। এ সময় তাদের পরিচ্ছন্ন ইউনিফর্ম ও ভালো অবস্থায় দেখা গেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষক মখাইমার আবুসাদা বলেছেন, এটি এমন একটি অঞ্চল, যা ইসরাইল প্রায় ধ্বংস করে দিয়েছে। ইসরাইলি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা হামাসের সামরিক শাখা ধ্বংসের লক্ষ্য থেকে সরে আসেনি। জিম্মি মুক্তির পর যুদ্ধ পুনরায় শুরু করার পরিকল্পনার কথাও জানান তারা। হামাসের নিরাপত্তা বাহিনী বর্তমানে গাজার রাস্তায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, যানবাহন নিয়ন্ত্রণ ও ত্রাণ সরবরাহ সুরক্ষায় কাজ করছে। গাজা সিটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জেনারেল মাহমুদ আবু ওয়াতফা বলেন, নাগরিকদের নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব আমাদের বাহিনীর। তবে অনেক সমস্যাও রয়ে গেছে। পুলিশ সদস্যরা কাগজপত্র ব্যবহার করছেন, ধ্বংসপ্রাপ্ত কার্যালয়ে হেঁটে কাজ করতে যাচ্ছেন। বোমা নিস্ক্রিকরণ দলগুলো অকার্যকর অবস্থায় রয়েছে। হামাসের ক্ষমতা অনেক কমলেও তারা পুরো গাজায় নিজেদের কর্তৃত্ব ধরে রেখেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, হামাস হয়তো ভবিষ্যতের প্রশাসনে প্রভাবশালী ভূমিকা রাখতে চায়। ইসরাইলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিওন সার জানিয়েছেন, হামাসের শাসন ইসরাইলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। গাজায় হামাস সমর্থকেরা আশ্বস্ত হলেও নিরপেক্ষ নাগরিকরা আরও যুদ্ধের আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন। এক বাসিন্দা বলেন, যতদিন হামাস ক্ষমতায় থাকবে, নতুন যুদ্ধ শুরু হওয়া সময়ের ব্যাপার। এখানে ভবিষ্যৎ নেই। সূত্র: নিউ ইয়র্ক টাইমস