গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত অনুযায়ী প্রথম ধাপে ৩৩ জন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার কথা হামাসের। তার মধ্যে এখনও ২৬ জন ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীর জিম্মায় রয়েছেন। তবে তাদের মধ্যে আটজন ইতোমধ্যে মারা গেছেন বলে দাবি করেছে ইসরাইল। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এ খবর জানা গেছে। গভীররাতে হামাসের দেওয়া তালিকা থেকে জিম্মিদের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার কথা জানিয়েছেন ইসরা্ইল সরকারের মুখপাত্র ডেভিড মেনসার। সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, গোয়েন্দাদের প্রতিবেদনের সঙ্গে হামাসের তালিকার তথ্যে সাদৃশ্য পাওয়া গেছে বলে আপনাদের জানাতে কোনও বাঁধা নেই। হামাসের হাতে ইতোমধ্যে আটজন নিহত হয়েছেন। তাদের পরিবারকে এ ব্যাপারে আমরা জানিয়ে দিয়েছি। অবশ্য নিহত জিম্মিদের নাম প্রকাশ করেনি কর্তৃপক্ষ। ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর এখন পর্যন্ত সাত ইসরাইলি নারীকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। বিনিময়ে ইসরাইলি কারাগারে বন্দি থাকা ২৯০ জনের বেশি ফিলিস্তিনিকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
রোববার রাতে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, বেসামরিক নারী আরবেল ইয়েহুদ, নারী সেনা আগাম বেরজের এবং অন্য এক জিম্মিকে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে সম্মত হয়েছে হামাস। এছাড়া, শনিবার আরও তিন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে অনুপ্রবেশ করে হামাস হামলা চালায়। ওই হামলায় এক হাজার ২০০ জন নিহত ও অন্তত ২৫০ জনকে জিম্মি করে গাজায় ধরে নিয়ে যাওয়া হয় বলে দাবি করে আসছে ইসরাইল। হামলার জবাবে গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে তেল আবিব। প্রায় ১৫ মাসের আগ্রাসনে ৪৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে জানা গেছে।
ইসরাইলের দাবি, এখনও হামাসের জিম্মায় থাকা ৮৭ ইসরাইলির মধ্যে ৩৪ জন ইতোমধ্যে মারা গেছেন বলে তারা আশঙ্কা কড়ছে। এছাড়া, যুদ্ধ শুরুর আগেই তিন ইসরাইলিকে অপহরণ করা হয়। তাদের একজন মারা গেছেন। ফেব্রম্নয়ারির ৪ তারিখ যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ কার্যকর হওয়ার কথা। এই ধাপে অবশিষ্ট সমস্ত জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে ইসরাইলি কারাগারে থাকা আরও ফিলিস্তিনিদের ছেড়ে দেওয়া হবে। পাশাপাশি ইসরাইলি সেনা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার করে টেকসই শান্তি নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তৃতীয় ও চূড়ান্ত ধাপে গাজার পুনর্গঠনে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া হবে।
যুদ্ধবিরতির তিনটি ধাপই ঠিকঠাক মতো সম্পন্ন করার জন্য ইসরাইলি সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে দেশটির জিম্মি ও নিখোঁজদের পরিবার পরিষদ। প্রত্যেক জিম্মির প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের (নিখোঁজ ও জিম্মি) প্রত্যেকের বাড়ি ফিরে আসা প্রয়োজন। তাদের ছাড়া আমরা অসম্পূর্ণ অবস্থায় আছি।