বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২

ট্রাম্প-মোদি ফোনালাপ ফেব্রম্নয়ারিতে বৈঠক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  ২৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
ট্রাম্প-মোদি ফোনালাপ ফেব্রম্নয়ারিতে বৈঠক
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প -ফাইল ছবি

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাক্ষাৎ ঘটবে আগামী ফেব্রম্নয়ারিতে। সোমবার ট্রাম্প নিজেই সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এদিন ফ্লোরিডার সামরিক ঘাঁটি জয়েন্ট বেস অ্যান্ড্রম্নজে একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন ট্রাম্প। মার্কিন বিমানে ওঠার আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে তিনি বলেন, "নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আমার সোমবার সকালে দীর্ঘক্ষণ টেলিফোনে কথা হয়েছে। আগামী মাসে, অর্থাৎ ফেব্রম্নয়ারিতেই তিনি হোয়াইট হাউসে আসছেন। ভারতের সঙ্গে বরাবরই আমাদের সম্পর্ক ভালো।"

টেলিফোনে মোদির সঙ্গে কী কী ইসু্যতে কথা হয়েছে. সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প বলেন, "দু'দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সব ইসু্যতেই আমরা কথা বলেছি।"

প্রসঙ্গত, নরেন্দ্র মোদি এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প পরস্পরের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত। প্রথম মেয়াদে প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় সর্বশেষ বিদেশ সফরে ভারতে এসেছিলেন ট্রাম্প। ২০২০ সালের ফেব্রম্নয়ারির সেই সফরে গুজারাটের রাজধানী আহমেদাবাদে লাখ লাখ মানুষের সমাবেশে বক্তৃতা দিয়েছিলেন তিনি। ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ের পর ৩ জন বিদেশি নেতার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন ট্রাম্প। মোদি তাদের মধ্যে একজন।

যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগেই তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর এবার ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা বললেন তিনি। বাণিজ্য, নিরাপত্তা ও অভিবাসন নিয়ে ট্রাম্প-মোদি ফোনালাপ ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ন্যায্যতার ভিত্তিতে সামনে এগিয়ে নেওয়ার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, সোমবার ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে টেলিফোনে এসব কথা বলেছেন ট্রাম্প।।দুই নেতার ফোনালাপকে ফলপ্রসূ বলে আখ্যায়িত করে হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার আওতা ও ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ইন্দো প্যাসিফিক, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের নিরাপত্তার বিষয়ে দুই নেতাই একমত হয়েছেন। আলাপকালে মার্কিন নিরাপত্তা সরঞ্জাম ক্রয়ের বিষয়ে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়ে দিলিস্নর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ট্রাম্প। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেছেন, মোদির সঙ্গে অভিবাসন বিষয়ে তিনি কথা বলেছেন। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ফেব্রম্নয়ারির কোনও এক সময় যুক্তরাষ্ট্র সফর করবেন বলেও জানান তিনি।

ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে দুই নেতার মধ্যে বেশ উষ্ণ সম্পর্ক বজায় ছিল। তবে দ্বিতীয় মেয়াদের নির্বাচনি প্রচারণাকালে বাণিজ্যের বিষয়ে ভারতকে আগ্রাসী বলে অভিহিত করেন তিনি। বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যিকভাবে অন্যায্যতার শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ করে ট্রাম্প বলেছেন, বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাস করতে তিনি চড়া শুল্ক আরোপ করতে দ্বিধাবোধ করবেন না বলেও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০২৩/২৪ অর্থবছরে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের আর্থিক মূল্য ১১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অতিক্রম করেছিল। এই সময়ে ভারতের উদ্বৃত্ত ছিল ৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ট্রাম্পের রোষ থেকে রেহাই পায়নি ব্রিকস গোষ্ঠীও। নিজস্ব মুদ্রা চালু করে মার্কিন ডলারকে দুর্বল করার কোনও চেষ্টা করলে তাদের একহাত দেখে নেওয়ার হুমকি নিয়েছেন ট্রাম্প। ভারত ও চীন এই ব্রিকস গোষ্ঠীর গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। আবার বেইজিংয়ের আধিপত্য ঠেকাতে ওয়াশিংটনের গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদারও দিলিস্ন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে ট্রাম্পকে ্তুপ্রিয় বন্ধু্থ বলে উলেস্নখ করে মোদি বলেছেন, দুপক্ষের জন্যই কল্যাণকর এমন বিশ্বস্ত সম্পর্ক গড়ে তুলতে তারা উভয়েই অঙ্গীকারবদ্ধ।ভারত সরকারের পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, প্রযুক্তি, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জ্বালানি ও প্রতিরক্ষাসহ একাধিক বিষয়ে আলোচনা করেছেন ট্রাম্প ও মোদি। যোগাযোগ নিয়মিত বজায় রাখার বিষয়ে তারা সম্মত হয়েছেন। পাশাপাশি দুজনের জন্যই সুবিধাজনক কোনও একটা সময়ে সশরীরের সাক্ষাতের বিষয়েও আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তারা। চার দেশীয় জোট কোয়াডের বিষয়ে ট্রাম্প ও মোদি নিজেদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ। ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার এই জোটের চলতি বছর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া সম্মেলন ভারত আয়োজন করতে যাচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে