রোববার, ১৮ মে ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

দেশের প্রতিটি আন্দোলনে ছাত্রলীগের ভূমিকা রয়েছে

  ০৮ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০
দেশের প্রতিটি আন্দোলনে ছাত্রলীগের ভূমিকা রয়েছে

শিক্ষা, শান্তি ও প্রগতির পতাকাবাহী সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। প্রতিষ্ঠাতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলের অ্যাসেম্বলি হলে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। প্রতিষ্ঠাকালে এর নাম ছিল পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন অধিকার সংক্রান্ত আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। তার মধ্যে উলেস্নখযোগ্য হলো রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন, শিক্ষার অধিকার, বাঙালির স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা, গণঅভু্যত্থান, স্বাধীনতা ও স্বাধিকার আন্দোলন।

১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠার পর সর্বপ্রথম মাতৃভাষা বাংলার জন্য সংগ্রাম করেছিল। আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ভূমিকা ছিল। ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে সর্বকনিষ্ঠ মন্ত্রী ছিলেন, যাতে ছাত্রলীগ বঙ্গবন্ধুর ভ্যানগার্ড ছিল। ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলনে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের অগ্রণী ভূমিকা ছিল।

1

শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৬ সালের ৬ দফা দাবি দিয়েছিলেন, যা ছিল বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার আন্দোলন বেগমান হয়। তৎকালীন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল।

১৯৬৯ সালে ঐতিহাসিক গণঅভু্যত্থানে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের ঐতিহাসিক ভূমিকা ছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১৯৬৯ সালে বাংলার ছাত্রসমাজ সারাদেশে দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তোলে, যা গণঅভু্যত্থানে রূপ নেয়। তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ বাংলার ছাত্র সমাজের পক্ষ থেকে শেখ মুজিবুর রহমানকে 'বঙ্গবন্ধু' উপাধি দেন, যা ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের গতিকে ত্বরান্বিত করে।

১৯৭০ সালের নির্বাচনে তৎকালীন ছাত্রলীগের ভূমিকা ছিল উলেস্নখযোগ্য। তখন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভ্যানগার্ড হিসেবে ছাত্রলীগ কাজ করত। সারা বাংলাদেশে পাকিস্তানের অপশাসনের বিরুদ্ধে দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তোলে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্বাচিত করতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ছাত্রলীগ ভূমিকা পালন করে।

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে ছাত্রলীগের হাজার হাজার নেতাকর্মী শহীদ হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে সারা বাংলাদেশে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। নূরে আলম সিদ্দিকী, তোফায়েল আহমেদসহ তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতারা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠন করেন। ছাত্রলীগের নেতৃত্বে প্রতিটি জেলায়, উপজেলায়, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। তৎকালীন ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতারা স্বাধীনতাযুদ্ধে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেছিল।

জাতিকে স্বাধীনতা যুদ্ধে উদ্বুদ্ধ ও যুক্ত করার ক্ষেত্রে ছাত্রলীগের অবদান ছিল। ছাত্রলীগের বহু নেতাকর্মী যুদ্ধে শহীদ হন। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের পর পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের পরিবর্তে হয় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। যখন বাঙালি জাতি, বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু সমার্থক শব্দে পরিণত হয়েছিল, ঠিক তখনই বাঙালি জাতির হাজার বছরের ইতিহাসের উজ্জ্বলতম নক্ষত্রটিকে নিভিয়ে দিতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হিংস্র হায়েনারা আঘাত হানে। ১৯৭৫-পরবর্তী বঙ্গবন্ধুবিহীন বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভাগ্যাকাশ যে কালো মেঘ গ্রাস করেছিল, সেই মেঘ সরাতে প্রত্যাশার সূর্য হাতে ১৯৮১ সালে প্রত্যাবর্তন করলেন আমাদের প্রাণের নেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা। সেদিন প্রিয় নেত্রীর পাশে ভ্যানগার্ডের ভূমিকায় ছিল বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।

ছাত্রলীগ গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা রাখে। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ভূমিকা প্রশংসনীয়। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অগ্রণী ভূমিকা রাখে। যার ধারাবাহিকতায় স্বৈরাচার সরকারের পতন হয় এবং গণতান্ত্রিক সরকারের উত্থান হয়।

১/১১'র সময় শেখ হাসিনাসহ ছাত্র-শিক্ষক সবার মুক্তির দাবিতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ গণআন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। যার ধারাবাহিকতায় গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সব রাজবন্দি মুক্তি পেয়ে ২০০৮ সালে একটি নির্বাচনের মধ্যদিয়ে গণতান্ত্রিক সরকারের শুরু হয়।

করোনাভাইরাস বাংলাদেশে শনাক্ত হয় তখন থেকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিটা নেতাকর্মী মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সচেতনমূলক লিফলেট বিতরণ করেছে। নিজেদের তৈরি হ্যান্ড স্যানিটাইজার দেশের মানুষের কাছে বিতরণ করেছে। যখন করোনা উপসর্গ হলে কি করা উচিত এবং অন্যান্য রোগ হলে ডাক্তারের চেম্বারে মানুষ যেতে পারছে না। তখন সব মেডিকেল ছাত্রলীগের নেতৃত্বে টেলিমেডিসিন সেবা দেওয়া হয়। অসহায়, দরিদ্র, মধ্যবিত্ত পরিবারের মধ্যে স্বেচ্ছাসেবক হয়ে ত্রাণ পৌঁছে দেয়। এই মহামারিতে যখন কৃষকরা ধান কাটার জন্য শ্রমিক পাচ্ছে না। নিজ স্বেচ্ছায় ধান কেটে দেয় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

বাংলাদেশের যে কোনো ক্রান্তিকালে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মানুষের পাশে ছিল। ছাত্রলীগ সবসময় মানুষের কল্যাণে কাজ করে। ছাত্রলীগ জাতির যে কোনো দুর্যোগে জনগণের পাশে ছিল, আগামী দিনেও থাকবে। শুভ হোক ছাত্রলীগের জন্মদিন।

মো. খসরু চৌধুরী

রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও শিল্পোদ্যোক্তা

ইবিতে সুপেয় পানি

নিশ্চিত করা জরুরি

স্বাধীনতার পরবর্তী বাংলাদেশে প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। প্রায় অর্ধশত বছরের পুরনো এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যা যেন দিন দিন বেড়েই চলেছে। উচ্চশিক্ষার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বেহালদশা যেন লাগামহীন ঘোড়া। বর্তমানে বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে অন্যতম হলো বিশুদ্ধ পানির অভাব। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বহুদিন ধরে এই সমস্যার মধ্যে ভুগছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১৮ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য নেই সুপেয় পানির তেমন ব্যবস্থা। শিক্ষার্থীরা ভোগান্তিতে থাকলেও এ ব্যাপারে প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে নেই সুপেয় পানির ব্যবস্থা। যাতে শিক্ষার্থী বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের পানিশূন্যতার পাশাপাশি বিভিন্ন চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বিষয়টি সুনজরে দেখার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা সুপেয় পানি সমস্যায় বহুদিন ধরে ভুগছি। এটি আমাদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ। কিন্তু কোনোভাবেই এই সমস্যার সমাধান মিলছে না। বিশুদ্ধ পানির অভাবে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সংক্রমণ রোগ দেখা দিচ্ছে। তার মধ্যে যেসব সমস্যা বেশি লক্ষ্য করা যায় তা হলো বিভিন্ন চর্মরোগ ও চুল পড়া। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি যে অতিদ্রম্নত এই সমস্যা সমাধান করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেকটি হলে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করবে।

আইরিন সুলতানা আশা

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে