মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

নিঃশ্বাসের আকুতি!

নতুনধারা
  ১৯ মার্চ ২০২৩, ০০:০০

চৌদ্দগ্রাম থেকে মুন্সিরহাট যাতায়াতের অন্যতম একটি সড়ক নবগ্রাম, বারাইশের এই সড়কটি। প্রায় ৬ কিলোমিটারের এই বৃহৎ সড়কটি চৌদ্দগ্রাম এবং মুন্সিরহাট উভয় অঞ্চলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। মুন্সিরহাটের ব্যবসা-বাণিজ্যের সমৃদ্ধির ক্ষেত্রেও এ রোডের গুরুত্ব অপরিসীম। গত বছরের রমজান মাসে সড়কটি বর্ধিতকরণ ও মেরামতের কাজ শুরু করা হয়। সাধারণত এ ধরনের সড়কপথ মেরামতের কাজ সর্বোচ্চ ছয় মাসে শেষ হয়ে যায়। তবে এ সড়কটির ক্ষেত্রে তা সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। একের পর এক কাজের ধীরগতি নবগ্রাম, বারাইশ, মুন্সিরহাট গ্রামের বাসিন্দাদের মনে ক্ষোভের সঞ্চার করেছে। গত বর্ষাকালব্যাপী বর্ধিতকরণের অজুহাতে রাস্তার দুই পাশে ৪ হাত পরিমাণ গর্ত খুঁড়ে রাখা হয়। বৃষ্টির পানি জমে সেগুলো রীতিমতো ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে। বাড়ির সামনে এমন স্পর্শকাতর গর্তে অনেকটাই বিব্রত হন এলাকাবাসীরা। এ ছাড়া কোরবানির গরু পারাপার, মানুষজনের চলাফেরা ছিল খুবই বিপন্ন। এ নিয়ে কর্তৃপক্ষের ছিল না কোনো মাথাব্যথা। বর্ধিতকরণসহ সম্পূর্ণ নতুন করে রাস্তাটি করার কথা থাকলেও পুরাতন কার্পেট ভেঙে পুনরায় ব্যবহার করা হয়েছে সড়কটির গ্রাউন্ডে। এরপর নিম্নমানের কংকর ফেলে দুই মাস এভাবে সড়কটি রেখে দেওয়া হয়। নিয়মিত শতাধিক যানবাহন চলাচলের কারণে কংকর পিষে লাল ধুলোয় পরিণত হয়। রাস্তার দুই পাশে গ্রামবাসীর বাড়িঘর, গাছপালা বীভৎস রূপ ধারণ করেছে। বাড়িঘরের ফার্নিচার, টিনের চাল ধুলো জমে নষ্ট হতে শুরু করেছে। ধুলোর কারণে বাচ্চাদের স্কুলে যাওয়া, বৃদ্ধদের বাড়ির বাইরে যাওয়া প্রায় নিষিদ্ধ হয়ে পড়েছে। রোগব্যাধির সংখ্যাও হু হু করে বাড়ছে। নবগ্রাম, বারাইশ সহ মুন্সিরহাটবাসীর রাস্তার দুই পাশের দোকানগুলো খোলা রেখে ব্যবসা করাও এখন চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়েছে। গত বছরের ডিসেম্বরে সর্বশেষ রাস্তাটির ইট ও কংকর পিষিয়ে উপরে বালু ছিটিয়ে দেওয়া হয়। বাকি ছিল কারপেটিংয়ের কাজ। কিন্তু তা না করে চার মাস ধরে এভাবেই ফেলে রাখা হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে অভিযোগ করেও প্রতিকার মেলেনি। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে সবাই যেন রাজনীতিতে ব্যস্ত। সড়কের কাজে নেই কোনো ভ্রম্নক্ষেপ।

স্থানীয়রা বলছেন, 'উন্নত বিশ্বে তুষার ঝড়ে। আর আমাদের মতো উন্নত দেশে লাল ধুলো ঝড়ে। এমন উন্নয়ন তো চাইনি, আগের সড়কটিই ভালো ছিল।'

স্থানীয় গ্রামবাসী বলছেন, মরে যাওয়ার আগে অন্তত একটুখানি স্বস্তির নিঃশ্বাস নিয়ে মরতে চাই। সড়কটি মেরামতের কাজ দ্রম্নত শেষ করে স্বাস্থ্যকর বাতাস সরবরাহে সহায়তা, পরিবেশ দূষণ ঠেকানো এবং সর্বোপরি স্থানীয়দের মধ্যে স্বস্তির নিঃশ্বাস ছড়িয়ে পড়ুক-উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে এমনটাই প্রত্যাশা গ্রামবাসীর।

মাহবুব আলম রনি

মুন্সিরহাট, চৌদ্দগ্রাম

কুমিলস্না

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে