বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মৈত্রী পাইপলাইন উদ্বোধন বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্ব অটুট থাকুক

নতুনধারা
  ২০ মার্চ ২০২৩, ০০:০০

সামগ্রিক সমৃদ্ধি অর্জনের প্রশ্নে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সুসম্পর্কের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, ভারত আমাদের অকৃত্রিম বন্ধু, ভাতৃপ্রতিম প্রতিবেশী রাষ্ট্র। ফলে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে যে কোনো ধরনের ইতিবাচক অগ্রগতির অর্থ হলো তা সামগ্রিক অর্থেই আশাব্যঞ্জক। প্রসঙ্গত, পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, 'মৈত্রী পাইপলাইন আমাদের দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে সহযোগিতা উন্নয়নের একটি মাইলফলক অর্জন। এটি বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তার পাশাপাশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করবে।'

এ ক্ষেত্রে বলা দরকার. শনিবার বিকালে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে যৌথভাবে 'ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী পাইপলাইন' উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেছেন। উলেস্নখ্য, এই পাইপলাইন উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে ভারত থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে বাংলাদেশে তেল আসা শুরু হলো। আগে রেলপথে ভারত থেকে তেল আনা হতো বাংলাদেশে। জানা গেছে, উদ্বোধনী দিনেই জ্বালানি তেল এসেছে। ভারতের শিলিগুড়ি লুমানিগড় তেল শোধনাগার থেকে ১৩১ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইনের মাধ্যমে পার্বতীপুরে এসে পৌঁছে জ্বালানি তেল। দেশে প্রথমবারের মতো পাইপ লাইনে জ্বালানি তেল আমদানি করতে পারায় বছরে সাশ্রয় হবে শত কোটি টাকা। উদ্বোধনী দিনেই প্রায় ১ হাজার ৯৩০ টন ডিজেল তেল রিসিভড করে পার্বতীপুরের রিসিভ টার্মিনাল।

আমরা উলেস্নখ করতে চাই, যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করে বলেছেন যে, 'এই পাইপলাইনের মতো আগামী দিনে আরও সফলতা বাংলাদেশ-ভারত উদযাপন করবে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে আমরা একই সঙ্গে কাজ করব।' তখন এটি যেমন আশাপ্রদ তেমনি গুরুত্বপূর্ণ। ফলে দুই দেশের আরও বেশি সফলতা অর্জন এবং উদযাপনের লক্ষ্যে সশ্লিষ্টরা সব ধরনের উদ্যোগ ও প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে এমনটি কাম্য। এটাও লক্ষণীয়, জানা যায়, বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ চালুর ফলে দুই দেশের জনগণ নানাভাবে উপকৃত হবে। কেননা, যখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিশ্বের অনেক দেশ জ্বালানি সংকটের মুখোমুখি। তখন এই পাইপলাইনটি জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এছাড়া এই পাইপলাইনে ভারত থেকে ডিজেল আমদানিতে ব্যয় ও সময় উলেস্নখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে। এর ফলে উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় ডিজেলের স্থিতিশীল সরবরাহও নিশ্চিত করবে- যা ইতিবাচক বলেই প্রতীয়মান হয়।

উলেস্নখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, ২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং তিনি ভাচুয়ালি এই প্রকল্পের কাজ শরু করেন। ১৩১ দশমিক ৫৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এই পাইপলাইন নির্মাণ করা হয়েছে। বাংলাদেশের অংশে পড়েছে ১২৬ দশমিক ৫৭ কিলোমিটার, ভারতের অংশে ৫ কিলোমিটার। আমলে নেওয়া দরকার, প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, 'ভারত আমাদের অকৃত্রিম বন্ধু, ভাতৃপ্রতিম প্রতিবেশী রাষ্ট্র। আমাদের হাজার বছরের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অবাধ প্রবাহ। ঐতিহাসিক ও ভৌগোলিক সেতুবন্ধন দুই দেশের সম্পর্ককে আরও ঘনিষ্ঠ থেকে ঘনিষ্ঠতর করেছে।' ফলে এই বিষয়গুলো কতটা গুরুত্বপূর্ণ এবং তাৎপর্য বহন করে সেটি এড়ানো যাবে না। এমন বিষয় সামনে আসছে যে, দুই দেশের মধ্যকার সহযোগিতা আরও গভীর হচ্ছে। এছাড়া উন্নয়নে এক সঙ্গে কাজ করা এবং ভারতের কাছ থেকে বিভিন্ন সহযোগিতা পাওয়া ছাড়াও সাংস্কৃতিক সহযোগিতা ও উভয় দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি, দুই দেশের জনগণের কল্যাণে জ্বালানি ও বিদু্যৎ খাতে পারস্পরিক সহযোগিতাও বৃদ্ধির বিষয়টিও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলোকপাত করেছেন।

আমরা বলতে চাই, বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু ভারত এবং প্রতিবেশী রাষ্ট্র। ফলে দুই দেশের বন্ধুত্ব অটুট রাখতে হবে। এছাড়া ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ঠিক রেখে দুই দেশের জনগণের সার্বিক উন্নয়নে কাজ করে যাওয়া এবং আমাদের উন্নয়ন আরও ত্বরান্বিত হোক এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশকে সহযোগিতা করার কথা স্মরণ করে আবারও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। সঙ্গত কারণেই সামগ্রিক বিষয় আমলে নিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হোক এবং বন্ধুত্ব অটুট থাকুক এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে