আজকের যায়যায়দিন

মাদকের ভয়াবহ বিস্তার দেশের সবাইকেই উদ্বিগ্ন করেছে। এর বিষাক্ত ছোবল অকালে কেড়ে নিচ্ছে অনেক প্রাণ। অনেক সম্ভাবনাময় তরুণ-তরুণী হচ্ছে বিপথগামী। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে মাদক বিক্রি ও সেবনের অভিযোগে ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) বিভিন্ন অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও গোয়েন্দা বিভাগ। এ সময় গ্রেপ্তারদের কাছে থেকে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া ডিএমপির বিভিন্ন থানায় গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে ২৪টি মামলা করা হয়েছে। গ্রপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ৪২৫ পিস ইয়াবা, ৮ কেজি ৬৮০ গ্রাম গাঁজা, ২০০ গ্রাম হেরোইন ও ৪ বোতল ফেনসিডিল জব্দ করা হয়। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ও মাদকাসক্তদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনকল্পে আইন-১৯৯০ সালের ১ ফেব্রম্নয়ারি প্রণয়ন করা হয়। এরপরেও অবস্থার উন্নতি হয়নি। উন্নতি হয়নি দেশব্যাপী মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়েও। এর আগে ৪২ জন কোটিপতি মাদক ব্যবসায়ীর সন্ধান পেয়েছিল সরকারের একটি গোয়েন্দা সংস্থা। এদের মধ্যে দুইজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। গোয়েন্দাদের ধারণা মাদক ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হলে, রাজধানীতে অনেকটাই মাদক নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেছেন, আমরা প্রতি ৩ মাস পরপর তালিকা তৈরি করি। এরপর ওই তালিকা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থা থেকেও তালিকা তৈরি করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। ওই তালিকা ধরেও সমন্বয় করে কাজ করা হয়।

উলেস্নখ্য, রাজধানীতে মাদকের ভয়াবহতা বৃদ্ধি পাওয়ায় মাদকবিরোধী অভিযান জোরদার করা হয়। এর আগে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের একটি তালিকা করে সরকারের একটি বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থা। ওই তালিকা অনুযায়ী অভিযান শুরু করা হয়। এতে অনেকেই গা ঢাকা দেন। ধারণা করা হচ্ছে, অভিযানের জোরদারের খবর আগেই ফাঁস হয়ে যাওয়ায় শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের অনেকেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে।

বাংলাদেশে ইয়াবা আর ফেনসিডিলের বাজার তৈরি হওয়ায় মিয়ানমার এবং ভারত সীমান্তে অসংখ্য ইয়াবা আর ফেনসিডিলের কারখানা গড়ে উঠছে। এসব কারখানায় বাংলাদেশের যুবসমাজের জন্য মিয়ানমার মরণ নেশা ইয়াবা এবং ভারত থেকে ফেনসিডিল উৎপাদন করে তা নির্বিঘ্নে সরবরাহ করা হচ্ছে। বলতে দ্বিধা নেই যে, এসব দেশে মাদক তৈরি হচ্ছে বাংলাদেশের যুবসমাজের জন্যই। বাংলাদেশ ঘেঁষা সীমান্তে মিয়ানমারে অসংখ্য ইয়াবা কারখানা গড়ে উঠেছে। সেসব কারখানা কোটি কোটি পিস ইয়াবা তৈরি হচ্ছে। মিয়ানমার সীমান্তে ইয়াবা কারখানার কথা আমরা জানি, আমাদের সরকারও জানে, কিন্তু ইয়াবা চোরাচালান রোধ হচ্ছে না। কেন হচ্ছে না এটাই এখন বড় প্রশ্ন?

মাদক ব্যবসার সঙ্গে দেশের অনেক রাঘববোয়াল জড়িত। আমরা মনে করি, এই সংখ্যা অনেক। এদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নিতে পারলে আমাদের যুব সমাজকে রক্ষা করা যাবে না। সরকারের পরিকল্পিত ও সফল উদ্যোগই কেবল পারে যুব সমাজকে মাদকের ভয়াবহ ছোবল থেকে রক্ষা করতে।

শ্বাপদসংকুল পথ মাড়িয়ে বিএনপিকে ঘুরে দাঁড়াতে হবে